বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বন্ধ, যাত্রী ভোগান্তি

  •    
  • ২৪ মার্চ, ২০২২ ১৯:৩২

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারোয়ার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাংলাদেশ রেলওয়ে টিকিটিং ব্যবস্থা এতদিন ছিল সিএনএস বিডির কাছে। এখন টিকিটিং ব্যবস্থা পরিচালনা করবে সহজ ডটকম। কিন্তু ২১ থেকে ২৫ তারিখ পর্যন্ত ব্যবস্থাপনা শুরুর আগে প্রতিষ্ঠানটি পাঁচ দিন সময় চেয়েছে। এজন্য কাউন্টারে যাত্রীর চাপ বেড়েছে। আর ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে টিকিট দিতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে।’

অনলাইনে টিকিট বিক্রি বন্ধ থাকায় যাত্রীদের এখন সশরীরে কাউন্টারে গিয়ে ট্রেনের টিকিট কাটতে হচ্ছে। এতে করে ভোগান্তি বেড়েছে যাত্রীদের। অনেকেই স্টেশনে কাউন্টারের সামনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও টিকিট পাচ্ছেন না। ২০ মার্চ থেকে অনলাইনে টিকিট বিক্রি বন্ধ থাকায় এমন ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।

তবে আশার কথা, অনলাইনে টিকিট বিক্রি বন্ধের এ সিদ্ধান্ত সাময়িক। আগামী ২৬ মার্চ নতুন করে শুরু হচ্ছে অনলাইনে টিকিট বিক্রি।

সরেজমিনে বৃহস্পতিবার রাজধানীর কমলাপুর রেল স্টেশনে গিয়ে টিকিটের জন্য কাউন্টারের সামনে ব্যাপক ভিড় দেখা গেছে। তাদের মধ্যে এমন যাত্রীও দেখা গেছে যারা সকাল ৭টায় এসে লাইনে দাঁড়িয়েও টিকিট পাননি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা শেষে বিকেল ৩টা নাগাদ কাউন্টারের সামনে পৌঁছার পর জানানো হয় যে টিকিট নেই। দিনভর ভোগান্তির পরও টিকিট না পেয়ে অনেককেই ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়।

লাইনে দাঁড়ানো যাত্রীদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয় নিউজবাংলার। তাদের অভিযোগ, কাউন্টার থেকে টিকিট বিক্রিতে সংশ্লিষ্ট রেলকর্মীরা অযথা সময়ক্ষেপণ করেন। এদিকে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে টিকিটপ্রার্থী মানুষের লাইন দীর্ঘ হতে থাকে। একইসঙ্গে বাড়তে থাকে ভোগান্তি।

মতিঝিল এলাকা থেকে আসা এক যাত্রী বললেন, কোনো ধরনের ছুটি বা উপলক্ষ ছাড়া কমলাপুর স্টেশনে টিকিটের জন্য এতোটা ভিড় দেখা যায় না। স্টেশনে যেন ঈদ মৌসুমের চিত্র। কেবল ঈদের সময়ই কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে এমন ভিড় দেখা যায়।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, অনলাইন মাধ্যমে টিকিট বিক্রি বন্ধ থাকায় কাউন্টারে ভিড় বেড়েছে। আর ম্যানুয়ালি টিকিট দেয়ার কারণে কিছুটা সময় তো লাগবেই। তবে আগতরা সবাই টিকিট নিয়ে ফিরছেন।

গত ১৪ মার্চ সংবাদ সম্মেলন করে ২১ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বিক্রি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানান রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন। তিনি বলেন, অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বিক্রিতে অভ্যন্তরীণ সেটআপ তৈরির জন্য পাঁচদিন সময় নিয়েছে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ‘সহজ’। প্রতিষ্ঠানটি ২৬ মার্চ থেকে অনলাইনে টিকিট বিক্রি করবে।

এদিকে রেলে পাঁচদিন আগে থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রির নিয়ম ছিল। কিন্তু ২০ মার্চ থেকে একদিন আগে অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। এটি চলবে ২৫ মার্চ পর্যন্ত।

খিলগাঁও পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা থেকে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে কমলাপুরে এসে লাইনে দাঁড়িয়েছেন শাহিন আলম। বেলা আড়াইটার দিকেও তিনি কাউন্টার থেকে বেশ দূরে ছিলেন। বললেন, ‘৭ ঘণ্টা ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। কাউন্টার পর্যন্ত পৌঁছতে আরও ঘণ্টাখানেক লেগে যাবে মনে হচ্ছে। তারপরও টিকিট পাব কিনা জানি না।’

ট্রেনের টিকিটের জন্য যাত্রাবাড়ী থেকে ফাহাদ কমলাপুর স্টেমনে এসেছেন সকাল ১০টায়। যাবেন সিলেটে। দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়েও টিকিট না পেয়ে হতাশ তিনি। বললেন, ‘যতক্ষণ এখানে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি ততক্ষণে তো সিলেটে পৌঁছে যেতাম। তার প্রশ্ন, এখানে কাউন্টারে টিকিট দিতে সংশ্লিষ্টরা অযথা বেশি সময় নিচ্ছেন। ওদিকে টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে ট্রেন ছাড়ার সময় পার হয়ে যাচ্ছে।’

জুরাইন থেকে আসা নান্নু মিয়াও একই ধরনের কথা বললেন। ক্ষোভ প্রকাশ করে নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, কাউন্টারে একটি টিকিট দিতে এতোটা সময় লাগার কোনো যুক্তি দেখি না। তবে টিকিট দেয়া নিয়ে কোনো অনিয়ম দেখতে পাইনি।’

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারোয়ার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাংলাদেশ রেলওয়ে টিকিটিং ব্যবস্থা এতদিন ছিল সিএনএস বিডির কাছে। এখন টিকিটিং ব্যবস্থা পরিচালনা করবে সহজ ডটকম। কিন্তু ২১ থেকে ২৫ তারিখ পর্যন্ত ব্যবস্থাপনা শুরুর আগে প্রতিষ্ঠানটি পাঁচ দিন সময় চেয়েছে। এই পাঁচদিন সব টিকিট ম্যানুয়ালি দেয়া হচ্ছে।’

যাত্রীদের ভোগান্তির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে টিকিট দিতে কিছুটা বিলম্ব হয়। ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে একটি টিকিট ইস্যু করতে ১০ থেকে ১২ মিনিট সময় লেগে যায়। কারণ তিন-চারটা রেজিস্টার মেইনটেইন করতে হয়। এই সাময়িক ভোগান্তির জন্য আমরা যাত্রীদের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি।’

রেলকর্মীরা সময়ক্ষেপণ করছেন- যাত্রীদের এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মাসুদ সারোয়ার বলেন, ‘আমরা কোথাও লাইনে দাঁড়ালে এসব কথা বলি। একটু ভীত হই। এটাই স্বাভাবিক। কারণ লাইটটা তো দীর্ঘ। তবে একটা জিনিস, দিনশেষে সবাই টিকিট নিয়ে যেতে পারছে। কেউ খালি হাতে যাচ্ছে না।

‘২১ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত ম্যানুয়ালি টিকিট বিক্রির জন্য আলাদা কাউন্টার ও ভ্রাম্যমাণ টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। আমরা আমাদের সব কাউন্টার খুলে দিয়েছি। একেকটি ট্রেনের টিকিটের জন্য দুই-তিনজন করে লোকও দেয়া হয়েছে দিয়েছি।’

ঘোষণা অনুযায়ী ২৬ মার্চ অনলাইনে টিকিট বিক্রি শুরু হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ বলেছেন, আমরাও অবিশ্বাস করছি না। দেখা যাক।’

এ বিভাগের আরো খবর