‘যে মাদক অফার করে না সে কখনো বন্ধু হতে পারে না’ এমন একটি দেয়াল লিখনের ছবি ঘুরছে ফেসবুকে। বিভিন্ন পোস্টে দাবি করা হয়েছে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কুষ্টিয়া জেলা কার্যালয়ের পক্ষ থেকে এই দেয়াল লিখন করা হয়েছে।
নিউজবাংলার অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ছবিটি মূলত ফটোশপড। লেখার শেষ লাইনের ‘না’ শব্দটি কেটে প্রথম লাইনের শেষেও যুক্ত করা হয়েছে। এবারই প্রথম নয়, গত বছরেও ছবিটি ছড়ানো হয়েছিল ফেসবুকে।
বিকৃত ছবি ফেসবুকে প্রচারের জন্য কুষ্টিয়া মডেল থানায় ২৩ মার্চ সাধারণ ডায়েরি করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কুষ্টিয়া জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক পারভীন আখতার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি এখানে গত জানুয়ারি মাসে জয়েন করেছি। হঠাৎ করে ফেসবুকে এই ছবি ছড়িয়ে পড়লে গত ২১ মার্চ কিছু মানুষ আমাকে ফোন করে বিষয়টি জানায়। আমি খোঁজ নিয়ে দেখি এমন ছবি এর আগে গত বছরের জানুয়ারিতেও ছড়ানো হয়েছিল। সে সময়ে সহকারী পরিচালক শহীদুল মান্নাফ কবীর এর প্রতিবাদও করেছিলেন।’
ফটোশপে এডিট করা ছবিটি অনেকেই পোস্ট করছেন নিজেদের ওয়ালে
পারভীন আখতার বলেন, “২০১৭-১৮ সালের দিকে অধিদপ্তর মাদকবিরোধী প্রচারের জন্য কিছু স্লোগান ঠিক করে। তার মধ্যে একটি ছিল- ‘যে মাদক অফার করে সে কখনও বন্ধু হতে পারে না।
‘কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের প্রবেশমুখের বামপাশের দেয়ালের তৃতীয় পিলারের পাশে এটি লেখা হয়েছিল। তবে এখন সেখানে কিছু নেই। জিলা স্কুল পরে দেয়াল রং করার সময় তা মুছে গেছে।’
কোনো ‘দুষ্টু লোক’ ওই স্লোগানের ছবি এডিট করে ফেসবুকে বিকৃত করে প্রচার করেন জানিয়ে পারভীন আখতার বলেন, ‘এতে সম্পূর্ণ উল্টো অর্থ তৈরি হয়েছে। নতুন করে আবার এটি সামাজিক মিডিয়ায় প্রচারিত হওয়ায় অধিদপ্তরের মান ক্ষুণ্ন হয়েছে। এ কারণেই অধিদপ্তরের পক্ষে পরিদর্শক মো. বেলাল হোসেন কুষ্টিয়া মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন।’
কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের প্রবেশমুখের দেয়ালে ছিল লেখাটি
সাধারণ ডায়েরিতে বেলাল হোসেন লিখেছেন, চার বছর আগে মাদকবিরোধী স্লোগান শহরের বিভিন্ন জায়গায় প্রচার করা হয়। এরপর কিছু কুচক্রী মহল এটি নিয়ে অপপ্রচার করছে। এ ব্যাপারে আইনগত সহায়তাও চেয়েছে অধিদপ্তর।
পারভীন আখতার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কুষ্টিয়ায় জিডির পাশাপাশি অপরাধীদের খুঁজে বের করতে ঢাকা থেকেও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কাজ করছেন।’
তিনি বলেন, ‘আমি নতুন যোগ দিয়েছি, সে ক্ষেত্রে আমাকে বেকায়দায় ফেলতেও যে কেউ এ ধরনের অপপ্রচার করতে পারে। অধিদপ্তরের কেউও যদি এতে জড়িত থাকে, পুলিশ তাদের খুঁজে বের করুক।’