মুজিববর্ষে শতভাগ বিদ্যুতায়নের কাজ সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় এ বছর ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ পাচ্ছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে বুধবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে তেজগাঁওয়ের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা থেকে বিজয়ীদের হাতে এ পুরস্কার দেয়া হবে।
গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে স্বাধীনতা পুরস্কার তুলে দেয়ার কথা রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের।
জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে দেয়া হয় এই সম্মাননা।
এবার ৯ বিশিষ্ট ব্যক্তি ও দুই প্রতিষ্ঠানকে চলতি বছরের স্বাধীনতা পুরস্কার দেবে সরকার। যার মধ্যে তিন ব্যক্তি পাচ্ছেন মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কার। ১৫ মার্চ এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ, চিকিৎসাবিদ্যা, স্থাপত্য ও গবেষণা প্রশিক্ষণ এই পাঁচ ক্ষেত্রে অবদান রাখায় ২০২২ সালের স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য তাদের মনোনীত করা হয়েছে।
স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখায় ৬ জন, চিকিৎসা বিদ্যায় অবদানের জন্য ২ জন, স্থাপত্যে অবদান রাখায় ১ জন ও গবেষণা প্রশিক্ষণে অবদান রাখায় বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিডাব্লিউএমআরআই) এবার স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছে।
স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী, শহীদ কর্নেল খন্দকার নাজমুল হুদা বীর বিক্রম, আব্দুল জলিল, সিরাজ উদ্দীন আহমেদ; মরণোত্তর পুরস্কার পাচ্ছেন মোহাম্মদ ছহিউদ্দিন বিশ্বাস ও সিরাজুল হক।
চিকিৎসা বিদ্যায় অবদান রাখায় অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া, অধ্যাপক ডা. মো. কামরুল ইসলামকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেয়া হবে।
স্থাপত্যে মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কার দেয়া হবে স্থপতি সৈয়দ মাইনুল হোসেনকে।
সাহিত্যে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য আমির হামজার ঘোষণা করা হলেও সমালোচনার মুখে তা বাদ দেয়া হয়েছে।
১৮ মার্চ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পক্ষ থেকে এই পুরস্কারের সংশোধিত তালিকা প্রকাশ করা হয়। নতুন তালিকায় সাহিত্যে অন্য কারও নাম প্রকাশ করা হয়নি।
পুরস্কার দেয়ার ঠিক আগের দিন জানানো হয়েছে, মুজিববর্ষে সারা দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়নের কারণে বিদ্যুৎবিভাগকে দেয়া হচ্ছে রাষ্ট্রীয় এই সম্মাননা।
পটুয়াখালীর পায়রায় সোমবার দুপুরে এখন পর্যন্ত দেশের সবচেয়ে বড় ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণা আসে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং মুজিববর্ষে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের ঘরে ঘরে আমরা আলো জ্বালতে পারলাম, এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় কথা, যে আমরা আলোকিত করেছি এ দেশের মানুষের প্রত্যেকটা ঘরে ঘরে।’
অতীতে দেশের বিদ্যুৎ খাতের দুরবস্থার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষ সব সময় সামনের দিকে এগিয়ে যায়। কিন্তু বাংলাদেশ সব সময় পিছিয়ে যাচ্ছিল। ২১ বছর আর এরপর ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত যারা সরকারে ছিল, আসলে এ দেশকে এগিয়ে নেয়ার কোনো আন্তরিকতা তাদের ছিল না।’
বিদ্যুৎ খাতে বদলে যাওয়ার বাংলাদেশের গল্পটাও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। রাঙাবালি, নিঝুম দ্বীপসহ বিভিন্ন এলাকায় নদীর নিচ দিয়ে সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি। আর যেখানে গ্রিড লাইন নেই, সেখানে সোলার প্যানেল করা হচ্ছে।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদের পাহাড়ি অঞ্চল, আমাদের হাওর-বাঁওর অঞ্চল, আমাদের দুর্গম এলাকা- প্রতিটি জায়গায় কিন্তু আমরা সোলার প্যানেল দিয়ে বিদ্যুৎ দিয়ে দিচ্ছি। কোনো ঘর অন্ধকারে থাকবে না। প্রতিটি মানুষের জীবন আলোকিত হবে। এটাই তো আমাদের লক্ষ্য। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’