রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে রাজনৈতিক ব্লকের নামে ছাত্রলীগের দখলদারত্ব বন্ধ করে নিয়মিত হল সংসদ চালুর দাবি জানিয়েছে ‘রাকসু আন্দোলন মঞ্চ’।
এ ছাড়া তারা আবাসিক হলের সিট বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ছাত্রত্ব বাতিলসহ চার দফা দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে।
বুধবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটের আমতলায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। আগামী সাত দিনের মধ্যে দাবি না মানলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।
দাবিগুলো হলো- বৈধ প্রক্রিয়ায় আবাসন প্রদানসহ নিরাপদ পরিবেশে হলে অবস্থানের সুব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। অনলাইনে প্রতিটি হলের তালিকা হালনাগাদ করতে হবে এবং নিয়ম মেনে হল প্রাধ্যক্ষদের স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
লিখিত বক্তব্যে রাকসু আন্দোলন মঞ্চের সমন্বয়ক আব্দুল মজিদ অন্তর বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোয় নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা প্রকট আকার ধারণ করেছে। বৈধভাবে হলে সিট পাওয়া একজন শিক্ষার্থীর ন্যায্য অধিকার হলেও প্রশাসন সেটা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী হলগুলোয় গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সিট বরাদ্দের নিয়ম থাকলেও অধিকাংশ হলেই তা মানা হচ্ছে না।’
অন্তর জানান, সবগুলো হলেই শত শত সিট ফাঁকা থাকলেও শুধু জিয়াউর রহমান হল এবং শামসুজ্জোহা হলে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সিট বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু বরাদ্দ দেয়া শিক্ষার্থীদের ১০-১৫ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থীকে হলে ওঠাতে পারেনি হল প্রশাসন।
তিনি বলেন, ‘এই সুযোগে হলের সিটগুলো ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দখল করে শিক্ষার্থীদের কাছে বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।’
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ‘করোনাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেদের ১১টি হলে প্রায় দেড় হাজার সিট শূন্য হয়। এর মধ্যে ১১০০-এর বেশি সিটে হলভেদে সিটপ্রতি ৫ থেকে ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে শিক্ষার্থীদের তুলেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সেই সঙ্গে বৈধ শিক্ষার্থীদের জোর করে হল থেকে বের করে দেয়া এবং বৈধ আবাসিক শিক্ষার্থীদের হলে উঠতে বাধা দেয়ার ঘটনাও নিয়মিত ঘটছে।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাকসু আন্দোলন মঞ্চের সদস্য সচিব আমানুল্লাহ খান, রাবি শাখা নাগরিক ছাত্র ঐক্যের সভাপতি মেহেদী হাসান মুন্না, সাধারণ সম্পাদক মীর আলহাজ হোসেন, শাখা ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মহব্বত হোসেন মিলন, শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাকিব হাসান প্রমুখ।