১০ বছর আগে শখের বশে দুই জোড়া ফিঞ্চ পাখি কিনে আনেন হান্নান দিনার। এখন তার খাঁচা ভরেছে ৩০ প্রজাতির ৩০০ ফিঞ্চে।
পাখিগুলোর কিচিরমিচিরে সারাক্ষণ মুখরিত থাকে পাখির খামার। হান্নানকে দেখে এলাকার অন্য তরুণরাও আগ্রহী হচ্ছেন ফিঞ্চ পালনে।
মানিকগঞ্জ পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের গার্লস স্কুল রোডের রিজার্ভ ট্যাংকের পাশে নিজ বাসায় বাহারি রঙের এই পাখির খামার গড়ে তুলেছেন হান্নান।
হান্নান নিউজবাংলাকে জানান, ২০১২ সালে সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ থেকে মাস্টার্স শেষে শখের বশে দুই জোড়া ফিঞ্চ পাখি কিনে পালতে শুরু করেন। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে পাখির সংখ্যা। ১০ বছরে রীতিমতো ফিঞ্চের খামার গড়ে উঠেছে। এখানে আছে আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া ও এশিয়া মহাদেশের নানা দেশের ফিঞ্চ।
তিনি বলেন, ‘প্রায় প্রতিদিনই জেলার ও জেলার বাইরের পাখিপ্রেমীরা আমার খামারে বেড়াতে আসেন। অনেকে পাখি পালনের বিষয়ে পরামর্শ নেন। কেউ কেউ পাখি কিনেও নিয়ে যান। খামারে যখন পাখি বেশি হয়ে যায়, তখন বিক্রি করি। এক জোড়া পাখি তিন হাজার থেকে শুরু করে ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়।’
হান্নান জানান, তার খামারে মেন্টেলড উইডো, কিউবান রেড সিসকিন, ব্লুবিল ফায়ার ফিঞ্চ, ল্যাভেন্ডার ওয়াক্সবিল ফিঞ্চ, গুল্ডিয়ান ফিঞ্চ, অস্ট্রেলিয়ান জেব্রা ফিঞ্চ, আউল মাস্কড ফিঞ্চ, গ্রিন ব্যাকড টুইনস্পটসহ বিভিন্ন প্রজাতি আছে। এ ছাড়াও আছে পার্পল গ্রানাডিয়ার, ওয়েস্টার্ন ব্লুবিল, ব্ল্যাক ফেসড ফায়ার ফিঞ্চ, গ্রে হেডেড অলিভ ব্যাকড ফিঞ্চ।
দেশের আর কারও কাছে এসব প্রজাতির ফিঞ্চ নেই বলে দাবি করেন এই যুবক।
পাখিপ্রেমী লুৎফর কবির টিটু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কয়েক বছর আগে হান্নানের খামার থেকে বেশ কিছু পাখি নিয়ে পালন শুরু করেছি। মাঝে মাঝেই হান্নানের পাখি দেখতে আসি, পাখি পালনের পরামর্শ নিই।
‘আরও কয়েকটা ফিঞ্চ পছন্দ হয়েছে। হান্নানকে অনুরোধ করে পাখি নিতে হবে। তিনি তো শৌখিন খামারি। পাখি বিক্রির চেয়ে নিজের শখের জন্যই পালতে পছন্দ করেন।’
পাখি পালনে আগ্রহী স্থানীয় যুবক সাইদুর রহমান শাওন। তবে জায়গা ও অর্থাভাবে তিনি তার ইচ্ছাকে বাস্তবে রূপ দিতে পারছেন না।
শাওন বলেন, ‘দীর্ঘদিন হান্নান ভাইয়ের সঙ্গে তার পাখির খামারে কাজ করেছি। ভাই পাখি পালন শিখিয়েছেন। তবে জায়গা আর অর্থের অভাবে নিজে পাখির খামার করতে পারছি না। সরকার যদি এ বিষয়ে সহায়তা করে, তাহলে পাখি পালনের মাধ্যমে বেকারত্ব দূর হবে।’
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম জানান, গবাদি পশুপাখি দেখাশোনা করার ক্ষমতা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের আছে। এসব পশুপাখিকে চিকিৎসা দেয়া হয়। তবে বন্য প্রাণীর বিষয়ে বন ও পরিবেশ বিভাগ বা মন্ত্রণালয় ভালো বলতে পারবে।