খরচ কমাতে খুচরা ও পাইকারি পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর-ভ্যাট কমানোর দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা। আগামী বাজেটে এর প্রতিফলন দেখতে চান তারা।
মঙ্গলবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এফবিসিসিআই আয়োজিত এনবিআরের পরামর্শক কমিটির যৌথ সভায় তারা এ দাবি জানান।
বর্তমানে খুচরা ও পাইকারি পর্যায়ে যেকোনো পণ্য কিনলে পাঁচ শতাংশ হারে ভ্যাট কেটে রাখা হয়। আসন্ন ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে এটি ৫ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়।
এ ছাড়া ছোট ব্যবসায়ীদের সম্পূর্ণ ভ্যাটের আওতা থেকে মুক্ত রাখার কথা বলেন ব্যবসায়ীরা।
নতুন ভ্যাট আইনে বছরে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লেনদেনের ক্ষেত্রে ভ্যাটমুক্ত থাকলেও পরে এনবিআর প্রজ্ঞাপন জারি করে সেটি বাতিল করে । ফলে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদেরও ভ্যাট দিতে হয়।
ভ্যাট আইন অনুযায়ী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ছাড় দেয়ার দাবি এবং নতুন বাজেটে এ বিষয়ে ব্যবস্থার নেয়ার প্রস্তাব করা হয়।
এ ছাড়া হোটেল ও রেস্তোরাঁ খাতে পুরোপুরি ভ্যাট প্রত্যাহার, সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আধুনিক প্রযুক্তির হিসাব মেশিন ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস বা ইএফডি বসানো, নগদ সহায়তায় আরও বেশি বরাদ্দ, নির্মাণশিল্পের উপকরণে সব ধরনের শুল্ক-কর কমানো, যেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানে প্রতিবন্ধীদের নিয়োগ দেয়া হয় তাদের আয়ে কর ছাড় দেয়াসহ নানা প্রস্তাব তুলে ধরেন ব্যবসায়ীরা।
খুচরা ও পাইকারি পর্যায়ে ভ্যাট কমানো ও ছোট ব্যবসায়ীদের ভ্যাটের আওতার বাইরে রাখার প্রস্তাব করেন বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলালউদ্দিন।
তিনি বলেন, ‘এ খাতে ভ্যাট কমালে ভোক্তা উপকৃত হবে। অন্যদিকে আদায় দুই থেকে তিন গুণ বাড়বে।’
বাংলাদেশ হোটেল ও রেস্তোঁরা মালিক সমিতির ইমরান হোসেন বলেন, ‘করোনায় এ খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মোট ভ্যাটের মাত্র শূন্য দশমিক ২৩ শতাংশ আদায় হয়। ফলে নামমাত্র এই ভ্যাট আদায় না করলে সরকারের রাজস্বে তেমন প্রভাব পড়বে না।’
নিত্যপণ্যের ওপর টার্নওভার কর তুলে নেয়ার কথা বলেন বাংলাদেশ ভোজ্যতেল ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি গোলাম মাওলা।
ভ্যাট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে হয়রানি বন্ধের অভিযোগ করেন কিশোরগঞ্জ চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুর রহমান বেলাল।
তিনি বলেন, ‘পকেট রাজস্ব বন্ধ না করতে পারলে আদায় বাড়বে না।’
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ কনস্ট্রাকশনের সভাপতি খোরশেদ আলম নির্মাণ সামগ্রীর উপকরণের শুল্ক-কর হ্রাসের প্রস্তাব করেন।
যেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্রতিবন্ধীদের চাকরি দেয়, সেসব প্রতিষ্ঠানের আয়ে কর রেয়াত দেয়ার দাবি জানান বাংলাদেশ চেম্বারের সভাপতি আনোয়ার উল আলম পারভেজ চৌধুরী।
এসএমই খাতে বিশেষ বরাদ্দের প্রস্তাব করেন সংস্থার এমডি মফিজুর রহমান।
নগদ সহায়তায় আরও বেশি বরাদ্দের প্রস্তাব করেন বিকেএমইএর নির্বাহী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতেম।
মেনমেইড ফাইবারের ওপর সব ধরনের শুল্ক ও কর তুলে নেয়ার দাবি জানান বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ আলী হোসেন।