জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের দ্বিতীয় মেয়াদের সব আর্থিক বিষয়ের নথি চেয়েছে কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি) কার্যালয়ের আওতাধীন শিক্ষা অডিট অধিদপ্তর।
চিঠিটি দেয়া হয়েছে বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ড. মো নুরুল আলম বরাবর। এতে সই করেছেন নিরীক্ষা দল প্রধান ও অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস অফিসার মো. বাবুল হোসেন।
চিঠিতে ঈদ সালামি বাবদ ২ কোটি টাকা প্রদান, উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন সংক্রান্ত সিন্ডিকেট সভার কার্যবিবরণী, উন্নয়ন প্রকল্পের ছয়টি কাজের উন্মুক্ত দরপত্রের নথি ও মূল্যায়ন প্রতিবেদনসহ মোট ১৫ ধরণের তথ্য চাওয়া হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, ‘আপনাদের কার্যালয়ের ২০১৭-১৮ হতে ২০২০-২১ অর্থ বছরের নিরীক্ষা কাজ ১৩ ফেব্রুয়ারি হতে ৬ মার্চ পর্যন্ত সম্পাদন করা হয়। কিন্তু উক্ত সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পূর্ণ হিসাব নিরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি। অসমাপ্ত অংশের পুনঃনিরীক্ষা ২০ মার্চ থেকে ২৪ মার্চের মধ্যে সম্পাদনের লক্ষ্যে জরুরি ভিত্তিতে নথিপত্রসমূহ নিরীক্ষায় উপস্থাপনের অনুরোধ করা হলো।’
মঙ্গলবার নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের পরিচালক আমিরুল এহসান কবির।
তিনি বলেন, ‘নথি চেয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। বর্তমানে অডিট দল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান করছে। অডিট টিম আসার পর বিস্তারিত জানা যাবে।’
বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো নুরুল আলমকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
জাবির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম
চিঠিতে যেসব নথি চাওয়া হয়েছে: সব ব্যাংক জমা, স্থায়ী-অস্থায়ী আমানতের তালিকা ও ব্যাংক বিবরণীসহ এর আয়-ব্যয়ের (সুদ-আসল) প্রতিবেদন, সব ব্যাংকের জমা-খরচের প্রতিবেদন ও ব্যাংক হিসাবের সঙ্গে ক্যাশ বই হিসাবের সংগতিসাধন বিবরণী, চেক রেজিস্টার ও চেক বই, পদোন্নতি ও অবসর অনুমোদন প্রতিবেদন ও সংশ্লিষ্ট নথি, পেনশন ভাউচার, সেশন বেনিফিট সংক্রান্ত প্রতিবেদন ও সংশ্লিষ্টদের ব্যক্তিগত নথি, সাবেক উপাচার্যের একান্ত সচিবসহ ৫ জনের অ্যাডহক নিয়োগ নথি ও তাদের ব্যক্তিগত নথি, উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দকৃত তহবিল থেকে ২ কোটি টাকা ঈদ সালামি দেয়ার বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন, উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন ডিপিপি সংক্রান্ত সিন্ডিকেট সভার কার্যবিবরণী, উন্নয়ন প্রকল্পের ছয়টি কাজের উন্মুক্ত দরপত্র নথি ও মূল্যায়ন প্রতিবেদন, ২০১৯-২০ থেকে ২০২০-২১ অর্থবছরের ভর্তি পরীক্ষার নথি ও পরীক্ষার পারিশ্রমিক বণ্টন প্রতিবেদন (২০১৭-১৮ থেকে ২০২০-২১)।
এ ছাড়া ২০২৭-১৮ থেকে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট প্রণয়ন ও পাস সংক্রান্ত সিনেট সভার কার্যবিবরণী, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, প্রধান প্রকৌশলী, কম্পট্রোলার, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন, জনসংযোগ অফিসার ও ডিন নিয়োগ এবং তাদের ব্যক্তিগত নথি, ক্যাশবই ও বার্ষিক বাজেট ও হিসাবও চাওয়া হয়েছে চিঠিতে।
২০১৮ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) দ্বিতীয় মেয়াদে ভিসি হিসেবে পুনঃনিয়োগ পান অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। এর মেয়াদ শেষ হয় চলতি বছরের ২ মার্চ।
এর আগে ২০১৪ সালের ২ মার্চ ভিসি প্যানেলে নির্বাচিত হয়ে দেশের প্রথম নারী ভিসি হিসেবে নিয়োগ পান তিনি।