সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার ক্ষেত্রে সাহস ও সততার ওপর জোর দিয়েছেন নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। বলেছেন, সবার কাছে সুষ্ঠু ভোট করাটাই হবে তাদের সাফল্য।
মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে বিশিষ্টজনদের সঙ্গে দ্বিতীয় পর্বের সংলাপে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এটা সত্য কথা, আমাদের সাহস থাকতে হবে। সাহসের পেছনে থাকতে হবে সততা। আমাদের হারানোর কিছু নাই, পাওয়ার কিছুও নাই।
‘জীবনের শেষ প্রান্তে আমরা ইতিবাচক যদি কিছু করতে পারি; আপনাদের সাজেশনের আলোকে নির্বাচনটা যদি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করা যায় সকলের অংশগ্রহণে সেটা একটা সফলতা হতে পারে।’
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণ করা নতুন এই নির্বাচন কমিশনই আগামী জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করবে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি বর্তমান সরকারের অধীনে ভোটে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নতুন কমিশনের পক্ষে অংশগ্রহণমূলক ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ভোট করা চ্যালেঞ্জ।
নতুন কমিশন নানা পক্ষের মত জেনে কাজ শুরু করতে চাইছে। এর অংশ হিসেবে গত ১৩ মার্চ শিক্ষাবিদদের সঙ্গে এবং ৯ দিন পর নাগরিক সমাজের সদস্যদের মত নিল কমিশন।
তবে শিক্ষাবিদদের মতো নাগরিক সমাজের সদস্যদেরও মধ্যেও যাদেরকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, তারা সবাই আসেননি সংলাপে।
ভোটে সবার জন্য সমান সুযোগ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে বলেও জানান সিইসি। বলেন, ‘এটা একটা কষ্টসাধ্য কাজ। তবে আমাদের চেষ্টা করতে হবে। আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই আমরা চেষ্টা করব।’
সিইসি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের বিধি-বিধানের অভাব নাই, কিন্তু এনফোর্সমেন্টের ঘাটতি আছে। আমাদের এনফোর্সমেন্ট ক্যাপাসিটিটা আরও বর্ধিত করতে পারি কি না।’
সংলাপে অংশ নেয়া নাগরিকদের মধ্যে কেউ কেউ বলেন, নির্বাচনে শতভাগ সফলতা কখনও সম্ভব না। এই আলাপের প্রসঙ্গ টেনে সিইসি বলেন, ‘কেউ বলেছেন, যদি ৫০ শতাংশ ৬০ শতাংশ গ্রহণযোগ্য হয় তাহলে এটাও একটা বড় সফলতা।’
দেশে ভোটের পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘সহিংসতা হলে পরে ভোটাররা আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। ভোট দিতে পারে না। আপনারাও বলেছেন সহিংসতা প্রতিরোধ করতে হবে।’
সংলাপে অনেকেই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএমের বিপক্ষে বলেছেন। সিইসি জানান, তারা প্রশ্ন তুলেছেন এটার মধ্যে কোনো অসুবিধা আছে কি না। এটা ব্যবহারে অনেকেই অভ্যস্ত নয়। মেশিনের মাধ্যমে কোনো ডিজিটাল কারচুপি হয় কি না। পৃথিবীর অনেক দেশ ইভিএম বাতিল করে দিয়েছে কেন করলো সেটা গবেষণা করা উচিত, ইত্যাদি।
ইভিএমে রিকাউন্টিং বা পুনঃগননার সমস্যা আছে জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘যদি কোনো রকম কারচুপি হয়ে থাকে, তাহলে রিকাউন্টিং করা যাবে কি না, এটার কোনো ব্যবস্থা আছে কি না, এটা আমাদের বুঝতে হবে। আমাদের টেকনিক্যাল কমিটির মিটিং করে আমাদের একটা ধারণা নিতে হবে।’নির্বাচনে যেন ধর্মের ব্যবহার না হয় সেটাও গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে বলে যোগ করেন তিনি।