দীর্ঘ ১২ ঘণ্টার অপারেশনে আলাদা করার পর শিশু লাবিবা ও লামিসা এখন ভালো আছে। তাদের জ্ঞান ফিরেছে। লাবিবা চোখ খুলেই তার বাবাকে জিজ্ঞাসা করেছে, ‘ও (লামিসা) কোথায়?’
শিশু দুইটি বর্তমানে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন।
লাবিবা ও লামিসাকে নীলফামারীর জলঢাকা থেকে তিন মাস আগে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়। শিশু দুটিকে আলাদা করতে সোমবার সকাল ৮টার দিকে অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়।
দীর্ঘ ১২ ঘণ্টা অস্ত্রোপচারের পর সফলভাবে তাদের আলাদা করা হয়। এখন তারা দুজনেই সুস্থ আছে। মঙ্গলবার দুপুরে তাদের খাবার দেয়া হয়েছে।
ঢামেক হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. আশরাফ উল হক কাজল বলেন, ‘শিশু দুটির জন্য এই অস্ত্রোপচার ছিল খুব ঝুঁকির। তাদের ক্ষতস্থানে আঘাত লাগলেই প্যারালাইজড হওয়ার ঝুঁকি ছিল। এছাড়াও তাদের পায়ুপথ ও মূত্রনালি খুবই কাছাকাছি। এজন্য কঠিন ছিল আলাদা করা। তাদের দুজনেরই মেরুদণ্ডের নিচের অংশ ছিল জোড়া। তবে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে তাদের সফলভাবে আলাদা করা হয়।’
শিশুদের মা মনুফা বেগম বলেন, ‘আল্লাহপাক আমাদের দিকে ফিরে তাকাইসে। ডাক্তারদের প্রচেষ্টায় আমার দুই শিশুকে আলাদাভাবে দেখতে পাইতেছি। এখন আমাদের লাবিবা ও লামিসা ভালো আছে। লাবিবা চোখ খুলেই তার বোনকে খুঁজেছে।
‘তারা এখন তরল জাতীয় খাবার খাচ্ছে। আপনারা ওদের জন্য দোয়া করবেন।’
২০১৯ সালের ১৫ এপ্রিল জলঢাকা উপজেলার কৈমারী ইউনিয়নের যদুনাথ পাড়ায় লাল মিয়া ও মনুফা দম্পতির ঘরে জন্ম নেয় জোড়া শিশু দুটি। শিশুদের বাবা লাল মিয়া একজন রাজমিস্ত্রির সহযোগী। শিশু দুটির বয়স এখন ২ বছর ১১ মাস।