বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পামঅয়েলের দাম কমল লিটারে ৩ টাকা

  •    
  • ২২ মার্চ, ২০২২ ১৭:২৮

গত ২০ মার্চ সরকার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৮ টাকা কমিয়ে লিটারপ্রতি সর্বোচ্চ ১৬০ টাকা নির্ধারণ করেছিল। সেদিনই জানানো হয়েছিল, পামঅয়েলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত পরে হবে।

সয়াবিন তেল লিটারে ৮ টাকা কমানোর পর এবার পামঅয়েলের দর কমানো হলো লিটারে ৩ টাকা। দুই স্তর থেকে ভ্যাট প্রত্যাহার ও আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ রেখে বাকিগুলো প্রত্যাহারের এই সুফল পাওয়া গেল।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পামঅয়েলের আমদানিকারক ও পরিশোধন কোম্পানি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে অভ্যন্তরীণ এক বৈঠক শেষে মঙ্গলবার বাণিজ্যমন্ত্রীর বিশেষ অনুরোধে এই দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এখন থেকে পামঅয়েল বিক্রি করা হবে ১৩০ টাকা লিটার দরে। গত ৬ ফেব্রুয়ারি এই তেল লিটারে ১৩৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল।

এর আগে গত ২০ মার্চ সরকার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৮ টাকা কমিয়ে লিটার প্রতি সর্বোচ্চ ১৬০ টাকা নির্ধারণ করেছিল। সেদিনই জানানো হয়েছিল, পামঅয়েলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে মঙ্গলবার।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, পামঅয়েলের আমদানিকারক ও পরিশোধন কোম্পানি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে অভ্যন্তরীণ বৈঠকে পামঅয়েলের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়। এতে দেখা যায়, চলতি বছর ১৫ জানুয়ারি থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত দেশে যে পরিমাণ পামঅয়েল আমদানি হয়েছে তার সব লটের আমদানির গড় দাম ছিল টন প্রতি ১ হাজার ৩০০ ডলারের উপরে। সবশেষ গত এক মাসের পামঅয়েলের আমদানির গড় দাম পাওয়া গেছে ১ হাজার ৭৮০ ডলার।

অন্যদিকে সরকার যে ভ্যাট প্রত্যাহার করেছে সেই হ্রাসকৃত ভ্যাটের সুযোগ নিয়ে এখনও কোনো ব্যবসায়ী তেল আমদানির এলসি খোলেনি। সার্বিক বিষয় বিবেচনা করলে কোনোভাবেই দেশে চলে আসা পামঅয়েলের দাম বর্তমান বাজার দর ১৩৩ টাকা থেকে কমে না।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য ও আমদানি) এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘ভ্যাট প্রত্যাহারের প্রভাব তো এখনও পামঅয়েলে পড়েনি। কারণ ভ্যাট তুলে নেয়ার আগেই দেশে অনেক পামঅয়েল চলে এসেছে। যেগুলো বেশি দামে কেনা। এই দাম সমন্বয় করতে গিয়ে দেখেছি পামঅয়েলের দাম কমানোর কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি আমরা বাণিজ্য সচিব ও বাণিজ্যমন্ত্রীকে জানাই। এরপর আসন্ন রমজানকে সামনে রেখে বাণিজ্যমন্ত্রী খাত সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের বিশেষ অনুরোধ করেন লিটার প্রতি দাম ৩ টাকা কমানোর। ব্যবসায়ীরা সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে ১৩৩ টাকা থেকে ৩ টাকা ছাড় দিয়ে ১৩০ টাকা দাম নির্ধারণে রাজি হয়েছেন।’

তিনি জানান, পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত এই দামই থাকবে।

মেঘনা গ্রুপের সিনিয়র এজিএম তসলিম শাহরিয়ার বলেন, ‘পামঅয়েলের আজ যে দাম নির্ধারণ হয়েছে সেটির গড় দাম ১ হাজার ২৬০ ডলার হিসেবে ১৩০ টাকা। অথচ গত এক মাস ধরে এর আন্তর্জাতিক বাজার আছে ১ হাজার ৭৮০ ডলার। এ হিসাবে পাম তেলের দাম কোনোভাবেই কমার কথা নয়। তা সত্বেও সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে রমজানকে সামনে রেখে আমরা বাণিজ্যমন্ত্রীর অনুরোধে লিটার প্রতি ৩ টাকা দাম কমাতে সম্মতি দিয়েছি।’

যদি সামনে আন্তর্জাতিক বাজার দর নেমে না আসে তাহলে প্রত্যেকটি কোম্পানি বিপুল পরিমাণ লোকসান করবে বলেও জানান তিনি।

বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ গত ২০ মার্চের বৈঠকে সয়াবিন তেলের দাম ৮ টাকা কমানোর দিন পামঅয়েল ইস্যুতে বলেছিলেন, ‘পামঅয়েল আসে ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া থেকে। ফলে পণ্যটি আমদানিতে সময় কম লাগে। এতে করে আন্তর্জাতিক বাজারে ঊর্ধ্বগতির দামেও দেশে অনেক তেল চলে এসেছে। তাই পামঅয়েলের বিষয়ে আমাদের আরও কিছু তথ্য ও হিসাব-নিকাশের দরকার আছে। এটাকে আমরা কিভাবে সমন্বয় করবো সে বিষয়ে আবারও বৈঠক করতে হবে।’

তারপর এর দাম নির্ধারণ করার কথা জানান তিনি।

সরকার খোলা তেল বিক্রি বন্ধ করে দিতে চাইলেও পামঅয়েল এখন পর্যন্ত বেশিরভাগ ক্ষেত্রে খোলাই বিক্রি হয়। যার সিংহভাগই পামঅয়েল। বছরে ১১ লাখ টন অপরিশোধিত পামঅয়েল আমদানি হয়। আর অপরিশোধিত সয়াবিন তেল আমদানি হয় ৫ লাখ টন। এ ছাড়া ২৪ লাখ টন সয়াবিন বীজ আমদনি হয়ে থাকে।

ভোজ্যতেলের মোট চাহিদা রয়েছে ২০ লাখ টনের। এর থেকে আমদানি হয় ১৮ লাখ টন। বাকি দুই লাখ টন তেল স্থানীয়ভাবে পূরণ হয়ে থাকে।

যুক্তরাষ্ট্রের গ্লোবাল এগ্রিকালচারাল ইনফরমেশন নেটওয়ার্কের তথ্যমতে, বাংলাদেশে আমদানি করা পামঅয়েলের সিংহভাগই আসে ইন্দোনেশিয়া থেকে।

বাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং ইকোনমিকস-এর তথ্যমতে, বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে পামঅয়েলের দাম কমতে শুরু করেছে। প্রতি টনের দাম দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৭০০ রিংগিত, যা বাংলাদেশি টাকায় (২২ টাকা) এক লাখ ২৫ হাজার টাকা দাঁড়ায়। অর্থাৎ কমতির মুখেও শুধু আমদানি খরচই প্রতি লিটারে পড়ে ১২৫ টাকা।

কোম্পানি সংশ্লিষ্টরা জানান, এরপর পণ্য লোডিংয়ের বিষয় আছে। জাহাজ ভাড়ার বিষয় আছে। ভ্যাটের বিষয় আছে। কোম্পানি পরিচালন খরচ আছে। এরপর দাম নির্ধারণের প্রশ্ন আসে।

তবে আশার কথা হলো বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মতো কোম্পানি সংশ্লিষ্টরাও মনে করছেন, দাম কমার এ প্রবণতা অব্যাহত থাকলে দেশও এর সুফল পাবে।

এ বিভাগের আরো খবর