বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিদ্যুৎ দিয়েছেন, কিন্তু মানুষের চোখে অন্ধকার: রিজভী

  •    
  • ২২ মার্চ, ২০২২ ১৬:৫১

‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি বাড়িতে বাড়িতে আলো পৌঁছে দেয়া নিশ্চিত করেছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী আপনি জানেন না, চাল কিনতে না পেরে ডাল কিনতে না পেরে, আলু কিনতে না পেরে ওই ক্ষুধার্ত মা যখন সন্তান বিক্রি করে, তখন সে তার চোখে আলো দেখে না, গভীর অন্ধকার দেখে।’

আওয়ামী লীগ সরকারের টানা এক যুগের শাসনামলে সারা দেশে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়াকে সরকার যে সাফল্য হিসেবে দেখাচ্ছে, তাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে তিনি বলেছেন, বিদ্যুতের আলো গেলেও পণ্যমূল্যের কারণে মানুষ এখন চোখে অন্ধকার দেখছে।

দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণা দেয়ার পরদিন মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লা‌বের সামনে এক মানববন্ধনে বক্তব্য রাখছিলেন বিএনপি নেতা।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগ‌তির প্রতিবাদ, নিরপেক্ষ নির্বাচ‌ন ও চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে এই কর্মসূচির আয়োজন করে বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক স‌মি‌তি।

রিজভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি বাড়িতে বাড়িতে আলো পৌঁছে দেয়া নিশ্চিত করেছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী আপনি জানেন না, চাল কিনতে না পেরে ডাল কিনতে না পেরে, আলু কিনতে না পেরে ওই ক্ষুধার্ত মা যখন সন্তান বিক্রি করে, তখন সে তার চোখে আলো দেখে না, গভীর অন্ধকার দেখে।

‘আপনি (প্রধানমন্ত্রী) সেই অন্ধকার দেখেননি। তাই আপনি গোটা জাতিকে নিয়ে মশকরা করছেন। আর বলছেন, ঘরে ঘরে আপনি আলো জ্বালানোর ব্যবস্থা করেছেন, বিদ্যুৎ দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন।’

২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপির শাসনামলে বিদ্যুৎসংকট নিয়ে আলোচনা ছিল ব্যাপক। গ্রীষ্মে ঘণ্টায় ঘণ্টায় বিদ্যুৎ যাওয়া ছিল নিয়মিত চিত্র। বিদ্যুতের দাবিতে দেশের নানা প্রান্তে বিক্ষোভ হয়েছে। পুলিশের গুলিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাটে বেশ কয়েকজনের প্রাণহানির ঘটনা নিয়ে এখনও আলোচনা হয়।

বিএনপি সরকার ওই পাঁচ বছরে দেশে নতুন কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র করতে পারেনি, উল্টো ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নেয়া নানা প্রকল্প বাতিল করে।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি নানা প্রকল্প হাতে নেয়। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ এখনও নিশ্চিত করতে না পারলেও বিদ্যুতের যাওয়া আসা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। পাশাপাশি দেশের প্রতিটি প্রান্তে চলে গেছে এই সুবিধা।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে রিজভী বলেন, ‘আপনি পায়রা বন্দরে যে আলোর কথা বলেছেন, ওই আলো শিক্ষকের চোখে নেই। ওই আলো কর্মকর্তার ও নিম্নবিত্তদের চোখে নেই। কিন্তু আপনি আলো দেখতে পারেন। ক্ষুধার জ্বালায় ওরা আলো দেখে না, ওরা শুধু অন্ধকারই দেখে।

‘যখন কিছু কম দামে কেনার জন্য উপচে পড়া মানুষ টিসিবির ট্রাকের সামনে দুই থেকে তিন ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকে, এবং যখন ট্রাকের পণ্য শেষ হয়ে যায়, তখন কিনতে না পেরে খালি হাতে চলে যায়। আপনি লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্তদের হাহাকার শোনেননি।’

‘চালের দাম কত হাছান মাহমুদ জানেন না’

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদেরও কড়া সমালোচনা করেন রিজভী। ফরাসি বিপ্লবের সময় ফ্রান্সের রানির স্ঙ্গে তুলনা করেন তিনি।

রিজভী বলেন, ‘অষ্টাদশ শতাব্দীতে যখন ফরাসি বিপ্লব চলছিল, তখন সেখানকার যে রাজার রানি সে ছিল হাছান মাহমুদের মতো একটা বেকুব মহিলা। … অষ্টাদশ শতাব্দীতে যখন মিছিল হচ্ছিল, তখন রানি তার কর্মচারীকে জিজ্ঞেস করেন কীসের শব্দ। কর্মচারী বলেন, ওরা রুটি খেতে পারছে না, তাই মিছিল করছে । রানি প্রতি উত্তরে বলেন, ‘তাহলে রুটি না খেতে পারলে কেক খেতে বলো।’

বিএনপি নেতা বলেন, ‘দেশের কী পরিস্থিতি, চালের দাম কত, এটা হাছান মাহমুদরা জানে না। তাদের তো দরকার পড়ে না, তাদের তো প্রচুর টাকা। তাদের ঘরে চাল দিয়ে যায়, মুরগি দিয়ে যায়, মাছ-মাংস দিয়ে যায়। তারা কি জানে মধ্যবিত্ত শিক্ষকরা যারা দাঁড়িয়ে আছে, তাদের ওই সামান্য বেতন দিয়ে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা দরে গরুর মাংস কেনা কি সম্ভব? এইভাবেই চিনি, ডাল, মুরগি, গুঁড়া দুধের দাম মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্তদের নাগালের বাইরে চলে গেছে।’

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি সেলিম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন জেলার শিক্ষক ও বিএনপির নেতাকর্মীরা।

এ বিভাগের আরো খবর