পেট্রোবাংলা গ্যাসের দাম যে পরিমাণ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছিল, তার চেয়ে কম হলেও দাম বৃদ্ধির সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) গঠিত কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি।
এবার গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বলেছেন, সরকার মন ভোলানো সব কথা বলছে। গ্যাসের দাম বাড়ালে বিদ্যুৎসহ সব জিনিসের দাম আবার বাড়বে। এটা করা হলে বিএনপি কঠোর আন্দোলন করবে।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে ঢাকা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে এমন হুঁশিয়ারি দেন বিএনপি নেতা।
ঢাকা জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম বিএনপির স্মারকলিপি গ্রহণ করেন।
রিজভী বলেন, ‘দেশে একটা দুর্ভিক্ষের অবস্থা বিরাজ করছে। সরকার উন্নয়নের কথা বলছে। সরকার নানা ধরনের মন ভোলানো কথা বলছে। কিন্তু বাস্তব অবস্থা হচ্ছে, মানুষ না খেয়ে আছে। মানুষ আধা বেলা খেয়ে দিনযাপন করছে। করোনার মধ্য থেকে শুরু করে সরকারি অব্যবস্থাপনার কারণে কর্মসংস্থান নেই কোটি কোটি যুবক বেকারের।
‘তার মধ্যে ভয়ংকর এই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বৃদ্ধি। গতকালও গ্যাসের দাম প্রায় ৩৩.২৩ শতাংশ বৃদ্ধি করার কথা বলা হয়েছে। এই গ্যাসের দাম বৃদ্ধির কারণে আরও জিনিসের দাম বাড়বে। এই গ্যাসের সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রি-বিদ্যুৎ অনেক কিছু জড়িত।’
গ্যাসের দাম বৃদ্ধিতে পেট্রোবাংলা যে প্রস্তাব দিয়েছিল সে বিষয়ে গতকাল সোমবার গণশুনানি করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। মিশ্রিত গ্যাসের পাইকারি ব্যয় (২০২২ সালে প্রতি ঘনমিটার) ১৫ দশমিক ৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০ দশমিক ৩৫ টাকা করার প্রস্তাব দেয় পেট্রোবাংলা।
পরে অবশ্য পেট্রোবাংলার প্রস্তাবকে অযৌক্তিক হিসেবে তুলে ধরে কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি। তারা যাচাই-বাছাই শেষে সুপারিশ করে, এই দাম বর্তমান দামের চেয়ে প্রতি ঘটমিটারে ৩ টাকা ১১ পয়সা বাাড়িয়ে ১২ দশমিক ৪৭ টাকা করার সুপারিশ করেছে।
সে সুপারিশ বাস্তবায়ন করলে আবারও বাড়বে গ্যাসের দাম।
এবার গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করা হলে জনগণ মেনে নেবে না বলেও মন্তব্য করেন রুহুল কবির রিজভী। বলেন, ‘দাম বাড়ালে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’
রিজভী বলেন, ‘শুধু নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষ নয়, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাও টিসিবির লাইনে দাঁড়াচ্ছেন। আজকে সংবাদপত্রে আছে, মা এসে লাইনে দাঁড়াচ্ছে, মেয়ের বিয়ে হয়েছে সেও আরেক এলাকা থেকে এসে লাইনে দাঁড়াচ্ছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, শুধু দুর্ভিক্ষের ছায়া না, দুর্ভিক্ষ শুরু হয়ে গেছে।’
বিরোধী দলের এই নেতা বলেন, ‘এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার সক্ষমতা সরকারের নেই। সরকার হরিলুট ও দুর্নীতির আদর্শে অনুপ্রাণিত।’
এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি দেওয়ান সালাহ উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাক, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজিম উদ্দিনসহ বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা।