গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ৬দিন ব্যাপী ‘মুজিববর্ষ লোকজমেলা’ শুরু হয়েছে। সোমবার শুরু হওয়া এই মেলা শেষ হবে ২৬ মার্চ। টুঙ্গিপাড়া সরকারি শেখ মুজিবুর রহমান সরকারী কলেজ মাঠে এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির উদ্যোগে এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের সহায়তায় এই মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সের ১ নম্বর গেট সংলগ্ন এলাকায় আয়োজিত ‘টুঙ্গিপাড়া: হৃদয়ে পিতৃভূমি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এই লোকজ মেলার শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
মেলা চলবে প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। এতে সরকারি-বেসরকারি স্টল আছে মোট ১০০টি। এসব স্টলের মাধ্যমে তুলে ধরা হবে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে।
সোমবার সকালে জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা এক সংবাদ সম্মেলনে এই মেলা সম্পর্কে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানান। জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ইলিয়াছুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুর রহমানসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ ও স্থানীয় সংবাদকর্মীরা।
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘লোকজ এই মেলায় প্রচুর দর্শক সমাগমের পাশাপাশি দেশীয় নানা পণ্যের সঙ্গে এখানকার মানুষ পরিচিত হতে পারবেন। সেইসঙ্গে লোকজন নিজের পছন্দের পণ্যটিও সংগ্রহ করতে পারবেন।’
গোপালগঞ্জ জেলা সদরের প্রসিদ্ধ মিষ্টির দোকানী দত্ত মিষ্টান্ন ভান্ডারের মালিক সবুজ দত্ত বলেন, ‘আমাদের দোকানের মিষ্টির কদর গোপালগঞ্জের বাইরেও রয়েছে। বিশেষ করে খাটি দুধ দিয়ে তৈরী রসগোল্লা ও সন্দেশের ব্যাপক সুনাম রয়েছে। প্রসিদ্ধ এই মিষ্টির সুনাম সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে আমি মেলায় স্টল নিয়েছি। ভালো সাড়াও পাচ্ছি।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গান্ধিয়াশুর গ্রামের সুনির্মল দাস বাপী জানান, তিনি নিজের হাতে তৈরি ৬৫ ধরনের বাদ্যযন্ত্র মেলায় প্রদর্শন করছেন। তিনি বলেন, ‘আশা করি, এসব দেশীয় বাদ্যযন্ত্র দেখে এবং এগুলোর বাজনা শুনে মেলায় আগতরা আনন্দ পাবেন।’
প্রথম দিনে মেলায় আসা কলেজ ছাত্রী বুলবুলি বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা টুঙ্গিপাড়াতে বসে জাতীয় পর্যায়ের একটি লোকজ মেলা উপভোগ করছি।’
গোপালগঞ্জ জেলা শহর থেকে আসা গিতা বিশ্বাস বলেন, ‘মেলায় ঘুরলাম, দেখলাম, ভাল লাগলো। বেশ কিছু পণ্য পছন্দ হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলার ঐতিহ্যবাহী ও প্রসিদ্ধ জিনিসপত্র এই মেলায় এসেছে।’
কিশোরী মুসনাত জামি বলেন, ‘আমি আগে কখনও বাইস্কোপ, পুতুল নাচ, নাগরদোলা দেখিনি। এখানে এগুলো দেখে খুবই খুশি হয়েছি।’
সোমবার ছিল মেলার প্রথম দিন
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জোনাকী কাজী বলেন, ‘বিভিন্ন জেলা থেকে এই মেলায় পণ্য নিয়ে এসেছেন লোকজন। তাদের সঙ্গে আমাদের একটা সংস্কৃতি বিনিময়ও হচ্ছে এই মেলার মাধ্যমে।’
জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা জানান, এই মেলায় প্রতিদিন বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ এবং মুক্তিযুদ্ধের উপর বিভিন্ন চলচ্চিত্র প্রদর্শন, স্যুভেনির প্রকাশ, পোস্টার প্রদর্শনসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন রয়েছে। মেলায় আসলে সবার ভাল লাগবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।