মানিকগঞ্জের শিবালয়ে স্কুলে ট্রাকচাপায় শিক্ষক ও ছাত্রী নিহতের ঘটনায় ঠিকাদারি কোম্পানি এনডিই’র এক সুপারভাইজারকে আটক করা হয়েছে।
উপজেলার টেপড়া এলাকায় অবস্থিত কোম্পানির অস্থায়ী কার্যালয়ের বাইরে থেকে সোমবার দুপুরে সুপারভাইজার জসিম উদ্দিনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিনুর রহমান নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দুর্ঘটনার পর তিনি জানান, ঠিকাদারি কোম্পানি এনডিই’র একটি ট্রাক ওই স্কুলে ঢুকে পড়ে। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষার্থী আহত হন। তাদের শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
সোমবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে আব্দুল আলিম মেমোরিয়াল স্কুলের ভেতরে একটি ট্রাকের চাপায় শিক্ষক ফাতেমা আক্তারসহ এক শিক্ষার্থী নিহত হন। এতে আহত হন আরও ছয়জন।
নিহত ফাতেমার বাড়ি শিবালয়ের উলাইল ইউনিয়নের ভাকলা এলাকায়। তার স্বামীর নাম আওলাদ হোসেন। অন্য নিহত শিক্ষার্থী সাত বছর বয়সী জারিন তাসনিমের বাড়ি ঢাকার ধামরাইয়ে।
নিউজবাংলাকে ওসি বলেন, ‘দুর্ঘটনার পর মানুষের চিৎকার শুনে অফিস থেকে বের হলে আশপাশের লোকজন জসিমকে পিটুনি দেয়। খবর পেয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।’
আরও বলেন, ‘ট্রাকটি জব্দ করা হলেও এর চালক ও হেলপার পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগের প্রক্রিয়া চলছে।’
এদিকে এনডিই কোম্পানির প্রতিনিধি মো. আইনুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে চলা উন্নয়নকাজে কোম্পানিটির ট্রাক ব্যবহার করা হয়। আশেপাশে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় ওই স্কুলের জায়গা ভাড়া নিয়ে সেখানে ট্রাক রাখা হয়।
এ বিষয়ে জানতে স্কুলের প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান শিক্ষক শহিদুর রহমান এবং প্রিন্সিপাল আক্কাস আলীকে মোবাইলে ফোন দেয়া হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
এদিকে নিহতের ঘটনায় জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সোমবার রাতে জেলা প্রশাসক আব্দুল লতিফ নিউজবাংলাকে জানান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) শুক্লা সরকারকে প্রধান করে সন্ধ্যায় চার সদস্যদের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পুলিশ সুপারের একজন সদস্য রয়েছেন।
কমিটিকে আগামী সাতদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।