পেমেন্ট গেটওয়েগুলোতে আটকে থাকা গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে যেসব প্রতিষ্ঠান গড়িমসি করছে, তাদের বিষয়ে আগামী মাসেই আইনি ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে সরকার। এমন তথ্য জানিয়েছেন ডিজিটাল ই-কমার্সের প্রধান ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সোমবার শ্রেষ্ঠ ডটকম এবং আলিফ ওয়ার্ল্ডের পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকে থাকা টাকা গ্রাহকদের ফেরত দেয়া উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ তথ্য দেন।
অনুষ্ঠানে শ্রেষ্ঠ ডটকমের ১১ জন গ্রাহকের ১৭ লাখ টাকা এবং আলিফ ওয়ার্ল্ডের ২১ জন গ্রাহকের ২৬ লাখ টাকা ফেরত দেয়া হয়।
ব্রিফিংয়ে সফিকুজ্জামান বলেন, ‘ইতোমধ্যে ১০টি প্রতিষ্ঠান আবার ব্যবসা চালু করার জন্য গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেয়ার বিষয়ে কাজ করছে। তারা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে গ্রাহকদের তালিকা তৈরি করেছে এবং তা পরিশোধের উদ্যোগ নিয়েছে।
‘বাকিদের মধ্যে কোন কোন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেয়নি তার তালিকা করা হয়েছে। এদের ৩১ মার্চের মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডিজিটাল কমার্স সেলের সঙ্গে যোগাযোগ করে ইতিবাচক মনোভাব দেখাতে আহ্বান জানানো হচ্ছে। এই সময়ের মধ্যে যারা ইতিবাচক মনোভাব দেখাবে না তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। ছবি: নিউজবাংলা
ডিজিটাল ই-কমার্সের প্রধান বলেন, ‘প্রায় ৩৯টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এ রকম অভিযোগ আছে। সেই অভিযোগগুলো যাতে আমরা নিষ্পত্তি করতে পারি, সে জন্য আমরা চেষ্টা করেছিলাম। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর অনেকে মামলার মধ্যে আছেন। অনেকে লুকিয়ে আছেন, যারা সার্ভিসে আসতে চান না বিভিন্ন ভয়ভীতির কারণে। তাদের আমরা আহ্বান করেছিলাম ৩১ মার্চের মধ্যে আপনারা আসেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ডিজিটাল কমার্স সেল এবং ই-ক্যাবের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আমরা আপনাদের সাহায্য করতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দেখেছি ৩৪-৩৫টির মতো প্রতিষ্ঠান আছে যারা হয়তো গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে পারবে। তাদের হয়তো ২০ কোটি টাকার মতো পেন্ডিং আছে, তারা দুই কোটির মতো টাকা ফেরত দিতে পারবে। বাকি টাকা কীভাবে ফেরত দেবে, পরে হয়তো আরেকটা জটিলতায় পড়বে, এই একটা ভয় হয়তো তাদের কাজ করছে। কিন্তু আমরা বলতে চাই, গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতেই হবে। সেখানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সহায়ক ভূমিকা রাখতে চেয়েছে, যাতে সে কাম ব্যাক করতে পারে।
‘এগিয়ে আসা ১০টি প্রতিষ্ঠানের মতো অন্যান্যরা যদি এগিয়ে আসত তাহলে তাদের পুনরায় বিজনেসে ফিরে আসার জন্য যে সাপোর্টগুলো দরকার আমরা দিতাম।’
অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘কিন্তু দেখছি অনেক প্রতিষ্ঠানই আসছে না। তাই তাদের ৩১ মার্চ পর্যন্ত সুযোগ দিতে চাই। এর মধ্যে যারা বিজনেসে ফিরে আসার জন্য টাকা ফেরত দেয়ার বিষয়ে আগ্রহ দেখাবেন না, আমরা তাদের তালিকা পুলিশের হেডকোয়ার্টারসহ বিভিন্ন সংস্থার কাছে দেব। তারা মানুষকে এখনও কোনো আশার বাণী শোনায়নি। তারা দেশে হয়তো লুকিয়ে আছে বা গা ঢাকা দিয়ে আছে।
‘একই সঙ্গে পেমেন্ট গেটওয়েগুলোকে আমরা নির্দেশনা দেব তাদের গেটওয়েতে যাদের টাকা আটকে আছে, সাত দিনের মধ্যে যেন গ্রাহকদের অনুকূলে পাওনা চলে যায়।’