মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়া আগুনে নিয়ে বেরুতে পারেননি নিজের প্রয়োজনীয় জিনিসটিও। পুড়ে গেছে মাথা গোঁজার ঠাঁই। দেড় ঘণ্টার আগুনে সর্বস্ব হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসেছে শতাধিক পরিবার।
অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন পাশে থাকা মাঠে। সেখানেই কেউ কান্নাকাটি করছে, কেউ আপনজন খোঁজায় ব্যস্ত। কোথায় পাবেন খাবার, কী করবেন সেটি ভেবেই কান্নায় ভেঙে পড়ছেন।
রোববার রাত আটটার দিকে রাজধানীর কল্যাণপুরের নতুন বাজার ৯ নম্বর বস্তিতে লাগা আগুনে দুই শতাধিক ঘর পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসাইন।
অবশ্য তিনি আগুনের সূত্রপাত কীভাবে সেটি জানাতে পারেননি।
আগুন ছড়িয়ে পড়তে শুরু করলে যে যতটা পেরেছেন, ঘর থেকে মালামাল বের করে এনেছেন।
তবে অনেকেই নিজেদের ঘরের মালামাল লুটপাটের অভিযোগ করেছেন।
আগুনে ঘর হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসে আছেন কল্যাণপুর বস্তির কয়েক শ বাসিন্দা। ছবি: নিউজবাংলা
সাহারা খাতুন একা থাকেন বস্তিতে। গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া। বাসাবাড়িতে কাজ করে চলতো তার সংসার।
সাহারা খাতুন বলেন, ‘আমি বুইড়া মানুষ, কষ্ট করে ভাত খাই, কিছুই নাই। একটা ট্রাংক নিয়ে বের হইছি। ভেতরে আর কিছুই নাই। সব পুড়ে গেছে।’
পাশে বসে কান্নায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েছেন রাবেয়া বেগম। একটু উঠে খুঁজতে শুরু করেছেন তার ছেলেকে-মেয়েকে।
কেঁদে কেঁদে বলছেন, ‘আল্লাহ তুমি এ কি করলা। আমাদের নিঃস্ব করে দিলা। সব পুইড়া গেছে। সব শ্যাষ হয়ে গেছে।’
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমার তিনটা ছোড ছোড পোলা মাইয়া। একটারে পাইছি। আর দুইডারে পাইতাছি না।’
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসাইন বলেছেন, বস্তিতে আগুন লাগলেও কোনো প্রাণহানি কিংবা দগ্ধের খবর তাদের কাছে নেই। তারা এমন কোনো কমপ্লেইন পাননি বলে দাবি করেন।
আগুন নেভার পর বস্তির অনেকেই অভিযোগ করছেন তারা বের হওয়ার সময় অনেকে বাসার মূল্যবান সামগ্রী লুট করেছে।
তাদের একজন নাসিমা আক্তার বলেন, ‘আমার বাসায় দুই লাখ টাকার কাপড় ছিল। আমি কাপড়ের ব্যবসা করি। আমার ঘরের মূল্যবান জিনিস লুট করে নিয়ে গেছে। অনেকের বাসার জিনিস লুট হইছে।’
কারা এমন কাজ করেছেন সেটি কেউই সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি।