বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ডানা মেলার অপেক্ষায় পায়রা

  •    
  • ২০ মার্চ, ২০২২ ২২:৫৯

পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র ঘুরে দেখার পাশাপাশি এর নামফলক উন্মোচন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণা দেবেন তিনি।

১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দেশের সবচেয়ে বড় ও সর্বাধুনিক প্রযুক্তির পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়। সোমবার সশরীরে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণা দেবেন তিনি।

করোনাভাইরাস মহামারির পর ঢাকার বাইরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া ছাড়া এটি সরকারপ্রধানের প্রথম কোনো সফর হতে যাচ্ছে। আগামীকাল হেলিকপ্টারযোগে রওনা হবেন তিনি।

পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র ঘুরে দেখার পাশাপাশি এর নামফলক উন্মোচন করবেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির উদ্বোধন উপলক্ষে ১ হাজার ৩২০টি পায়রা উড়ানোর কথা রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে বর্ণিল সাজে সেজেছে গোটা এলাকা। নানা আয়োজনের মধ্যে সবার নজর কেড়েছে প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করে নিতে ১৫০টি নৌকা।

সোমবার জেটিতে রঙিন পাল তোলা এসব নৌকা থেকে পতাকা নাড়িয়ে এবং সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিবাদন জানানো হবে।

কলাপাড়ার ধানখালীর পায়রাতে নির্মিত সর্বাধুনিক আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির কয়লা ভিত্তিক এ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণে খরচ হয়েছে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশের নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কম্পানি (এনডাব্লিউপিজিসিএল) ও চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি এক্সপোর্ট অ্যান্ড ইমপোর্ট করপোরেশনের (সিএমসি) সমান অংশীদারে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়েছে।

এই দুটি প্রতিষ্ঠান মিলে কেন্দ্র পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল) নামে পৃথক একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের ১৩তম, এশিয়ায় সপ্তম এবং দক্ষিণ এশিয়াতে বাংলাদেশ ছাড়া শুধু ভারতে এ ধরনের একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে।

এশিয়ার চীন, তাইওয়ান, জাপান ও মালয়েশিয়াতে আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির বিদ্যুৎ কেন্দ্র থাকলেও ঢাকনাযুক্ত কোল ইয়ার্ড ব্যবহার করে চীন ও বাংলাদেশ। যার ফলে বাতাসের মাধ্যমে কয়লা থেকে গুঁড়ো ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ কমে যায়।

৬৬০ মেগাওয়াটের দুই ইউনিট মিলে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র। প্রথম ইউনিট উৎপাদনে আসে ২০২০ সালের ১৫ মে। সমান ক্ষমতার দ্বিতীয় ইউনিট উৎপাদনে আসে ওই বছরের ৮ ডিসেম্বর। বর্তমানে এ কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন ৭০০ থেকে ১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে।

সঞ্চালন অবকাঠামোর নির্মাণ শেষ না হওয়ায় কেন্দ্রটি থেকে ক্ষমতার চেয়ে কম বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।

বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির জন্য প্রতিদিন ১৩ হাজার টন কয়লা প্রয়োজন। যার যোগান আসছে ইন্দোনেশিয়া ও অস্ট্রেলিয়া থেকে।

বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে, ২০০৯ সালে বিদ্যুৎ সুবিধাপ্রাপ্ত জনগোষ্ঠী ছিল ৪৭ শতাংশ। গত ১৩ বছরে ৫৩ শতাংশ বেড়ে এখন শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে।

২০০৯ সালে গ্রাহক সংখ্যা ছিল ১ কোটি ৮ লাখ। বর্তমানে বিদ্যুতের গ্রাহক সংখ্যা ৪ কোটি ২১ লাখ। ২০০৯ সালে দেশে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ছিল ৪ হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট। বর্তমানে ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্য মিলিয়ে বর্তমানে তা ২৫ হাজার ৫১৪ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে।

সঞ্চালন লাইন স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে সরকার। তবে দুর্গম এলাকায় সোলার প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিচ্ছে সরকার।

রোববার বিকেলে পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র ঘুরে দেখেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু।

সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘সময়ের আগে কাজ শেষ হয়ে গেছে। তবে করোনা বাস্তবতার কারণে প্রধানমন্ত্রী এখন উদ্বোধন করবেন।’

বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণসহ এ অঞ্চলের উন্নয়নে নেয়া সরকারের অন্য প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে এখানকার অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে এবং কর্মচাঞ্চল্য ফিরে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী।

বিসিপিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ এম খোরশেদুল আলম বলেন, ‘পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধন উপলক্ষে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। উদ্বোধনের পরই প্রধানমন্ত্রী দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণা দেবেন।’

সঞ্চালন লাইনের বিষয়ে তিনি সাংবাদিকদের জানান, ‘পায়রা-গোপালগঞ্জ-আমিনবাজার লাইনটির পদ্মা রিভার ক্রসিং কাজ এখনও শেষ হয়নি। চলতি বছরের ডিসেম্বর নাগাদ এই কাজ শেষ হবে। এর পরই রাজধানীতে সরাসরি বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাবে।’

এরই মধ্যে গোপালগঞ্জ-রামপাল গ্রিড লাইন নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রামপালে নির্মিত সাবস্টেশনের মাধ্যমে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ খুলনা অঞ্চলে সরবরাহ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের দু-তিন দিন পর থেকে ওই লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হবে।’

পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখানে কয়লা লোড-আনলোড থেকে শুরু করে সব কিছুতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। উৎপাদনের ক্ষেত্রে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির ব্যবহারসহ সব ক্ষেত্রে পরিবেশের বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।’

এ বিভাগের আরো খবর