নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যায় জাহাজের ধাক্কায় লঞ্চডুবির ঘটনায় প্রাণে বেঁচে ফিরেছেন লঞ্চের যাত্রী মুন্সিগঞ্জের আব্দুর রব। তবে, সন্ধ্যা পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন তার সঙ্গে থাকা ছেলের বউ ও একমাত্র নাতি।
নারায়ণগঞ্জের সদর উপজেলার আলামিন নগর এলাকায় রোববার দুপুর ২টার দিকে এমভি রূপসী-৯ জাহাজের ধাক্কায় ডুবে যায় এমএল আফসার উদ্দিন নামের লঞ্চটি। এতে যাত্রী ছিলেন ৫০ জন।
বেঁচে ফেরা যাত্রী মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার খাসকান্দি এলাকার ৬৫ বছর বয়সী আব্দুর রবকে ভর্তি করা হয়েছে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডে। শ্বাসকষ্টের কারণে কথা বলতে পারছিলেন না তিনি। সন্ধ্যায় হাসপাতালে কথা হয় তার স্ত্রী রাসিয়া বেগমের সঙ্গে।
তিনি জানান, পুত্রবধূ ও নাতিকে নিয়ে রোববার ডাক্তার দেখাতে ঢাকায় গিয়েছিলেন আব্দুর রব। ডাক্তার দেখিয়ে বাড়ি ফিরতে রোববার দুপুর ২টার দিকে নারায়ণগঞ্জ থেকে মুন্সিগঞ্জগামী এমএল আফসার উদ্দিন লঞ্চে উঠেন তারা।
লঞ্চটি নারায়ণগঞ্জের আলামিন নগর এলাকায় এলে এমভি রূপসী-৯ নামের একটি জাহাজ লঞ্চটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ডুবে যাওয়ার সময় আব্দুর রবের সঙ্গে ছিলেন তার ছেলে দীন ইসলামের স্ত্রী আরিফা এবং ছেলে দেড় বছরের সাফায়েত।
রাসিয়া আরও জানান, লঞ্চটি ডু্বে যাওয়ার পর স্থানীয়রা আব্দুর রবকে উদ্ধার করলেও সন্ধ্যা পূত্রবধু আরিফা ও নাতি সাফায়েত পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন।
ছেলে ও নাতির শোকে ঠিকভাবে কথা বলতে পারেছিলেন না তিনিও। কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘ছেলের বউ ও নাতি জীবিত নেই। তাদের জীবিত থাকার আশা ছেড়ে দিয়েছি। কখন লাশ পাবো সেই অপেক্ষায় আছি।’
লঞ্চডুবির ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৬ যাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে দুজন নারী, দুজন শিশু ও দুজন পুরুষ। তাদের মধ্যে পাঁচজনকে নদী থেকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। একজনকে হাসপাতালে নেয়ার পর মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
এদিকে লঞ্চডুবির ঘটনায় এমভি রূপসী-৯ জাহাজের চালকসহ ৯ জনকে আটক করেছে পুলিশ। মুন্সীগঞ্জের হোসেনবাগ থেকে রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তাদের আটক করা হয়।
এ তথ্য নিশ্চিত করে নিউজবাংলাকে নারায়ণগঞ্জ নৌ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান জানান, আটকের পর তাদের রূপসী-৯ জাহাজে নেয়া হয়েছে। সেখানে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।