লালমনিরহাটে শ্রমিকদের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মাইক্রোবাস, বাস ও মিনিবাস শ্রমিকদের দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দীর্ঘ সময় মহাসড়ক বন্ধ থাকার পাশাপাশি তিন শ্রমিক নেতাসহ উভয় পক্ষের অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন।
রোববার বেলা ১টার দিকে লালমনিরহাট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে এই ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ এসে উভয় পক্ষকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এক পক্ষের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে লালমনিরহাটে বাস-মিনিবাস শ্রমিকদের কোনো কমিটি না থাকায় বর্তমান সভাপতি আমিনুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক বুলবুল আহমেদ একক প্রাধান্য বিস্তার করছেন। শুধু তা-ই নয়, শ্রমিকদের নিজস্ব অফিস বানানোর জন্য ক্রয় করা ৮ শতাংশ জমি বিক্রি করে পুরো টাকা আত্মসাৎ করেছেন তারা।
ঘটনাটি জানাজানি হলে শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয় এবং তারা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। শুরু হয় আন্দোলন। সাধারণ শ্রমিকদের একটি বড় অংশ বর্তমান সভাপতি ও সম্পাদককে সরিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য কমিটির দাবি জানায়।
আন্দোলনের মুখে সভাপতি-সম্পাদক আগামী ২১ মার্চ বাস, মিনিবাস ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের একটি সাধারণ সভার ডাক দেন। এই সভাকে সামনে রেখে বাহিরাগত সন্ত্রাসী এনে ঢাকা বাসস্ট্যান্ড ও কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে মহড়া দেয়ার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে।
রোববার কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে বিরোধী গ্রুপের শ্রমিক নেতা লাবু ও দুলুকে মারধর করে আমিনুল ও বুলবুলের ‘বহিরাগত’ বাহিনী। পরে বিরোধী শ্রমিকরা সংঘবদ্ধ হয়ে তাদের ধাওয়া করলে উভয় গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। মুন্না নামে বিরোধী আরেক শ্রমিক নেতা গুরুতর আহত হন।
ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সময় রংপুর-লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কের দুই লেনেই শত শত যানবাহন আটকা পড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
শ্রমিক নেতা মুন্না বলেন, ‘আমরা সাধারণ শ্রমিকদের জন্য আন্দোলন করছি। কিন্তু বর্তমান সভাপতি ও সম্পাদক জোর করে ক্ষমতায় থেকে শ্রমিকদের রক্ত চুষে খাচ্ছেন। তারা শ্রমিকের রক্ত ঝরানো অর্থে কেনা জমি অবৈধভাবে বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। আমরা এর বিচার দাবি করছি।’
এদিকে সম্পাদক বুলবুল আহমেদ বহিরাগতদের নিয়ে মহড়া ও হামলার কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘আমরা সব সময় সাধারণ শ্রমিকদের কথা চিন্তা করে কাজ করছি। এ জন্য আগামীকাল সাধারণ সভা আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছি। শিগগিরই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের চেষ্টা চলছে।’
এ ঘটনায় সভাপতি আমিনুল ইসলাম আহত হয়েছেন বলেও জানান তিনি।
লালমনিরহাট সদর থানার ওসি শহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং যানজট স্বাভাবিক হয়।