বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৮ টাকা কমিয়ে ১৬০

  •    
  • ২০ মার্চ, ২০২২ ১৭:৫৬

বাণিজ্যসচিব বলেন, ‘গত ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে যে পরিমাণ সয়াবিন আমদানি হয়েছে তার এক মাসের গড় মূল্য ধরে এর সঙ্গে ভ্যাট কমানোর হার সমন্বয় করে সয়াবিন তেলের লিটারে দাম ৮ টাকা কমাতে প্রস্তাব করেছি। যদিও ভ্যাট কমার হার অনুযায়ী লিটারে কমে সাত টাকা। তবে মিল মালিকরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব অনুযায়ী তারা ৮ টাকাই কমাতে রাজি হয়।’

ক্রমেই বাড়তে থাকা বোতলজাত সয়াবিন তেলের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য এবার লিটারে ৮ টাকা কমিয়ে ১৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

ভোজ্যতেল উৎপাদন ও বিক্রির ওপর থেকে ভ্যাট পুরোপুরি আর আমদানিতে ৫ শতাংশ রেখে বাকি সব ভ্যাট প্রত্যাহারের পর এই নতুন দাম ঠিক হয়েছে।

নতুন এই দাম সোমবার থেকেই মিলগেট পর্যায়ে কার্যকর হবে। তবে খুচরা পর্যায়ে এই দাম কার্যকর হতে পাঁচ থেকে ছয়দিন লাগতে পারে জানানো হয়েছে।

রোববার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে ভোজ্যতেলের আমদানিকারক অপুর পরিশোধন কোম্পানির মালিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

পাম অয়েলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে মঙ্গলবার আবার বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

নতুন এই দাম পুরো রমজান জুড়ে বহাল থাকবে। আন্তর্জাতিক বাজার প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করে দাম নির্ধারণে আবার ২২ মে বসার সিদ্ধান্ত হয়।

সভাশেষে বাণিজ্যসচিব বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যটির অব্যাহত দর বৃদ্ধির পেক্ষাপটে সরকারের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্তে কাঁচামাল আমদানিতে ৫ শতাংশ রেখে ধার্যকৃত বাকি সব ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়েছে। এই ভ্যাট প্রত্যাহারের ফলে ভোজ্যতেলের দামও পুনঃনির্ধারণ জরুরি হয়ে পড়েছিল।’

পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে ভোজ্যতেলের দাম নিয়ে তোলপাড় সবচেয়ে বেশি। এক বছর আগেও বোতলজাত তেলের লিটার ছিল ১৩৪ টাকা করে। গত ৬ ফেব্রুয়ারি তা নির্ধারণ করা হয় ১৬৮ টাকা। ব্যবসায়ীরা মার্চ থেকে লিটারে আরও ১২ টাকা বাড়িয়ে ১৮০ টাকা করতে চেয়েছিল। কিন্তু সরকার রাজি না হলে সেদিন থেকে বাজারে সরবরাহে দেখা দেয় ঘাটতি।

ব্যবসায়ীদের বক্তব্য ছিল, তেলের দাম যখন ১৬৮ টাকা করা হয় তখন, আন্তর্জাতিক বাজার থেকে টনপ্রতি আমদানি মূল্য পড়েছে তেরো শ ডলারের কিছু বেশি। তবে সেটি এখন পড়েছে উনিশ শ ডলারের মতো।

এই পরিস্থিতিতে বাজারে সরবরাহ ঘাটতি দেখা দিলেও মিল মালিকরা তা স্বীকার করতে চাননি। আর ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বাজারে অভিযান চালিয়ে খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীদেরকে জরিমানা করতে থাকে।

পরে সরকার তেলের উৎপাদন খরচ কমিয়ে আনতে প্রথমে উৎপাদন ও বিক্রয় পর্যায়ে ভ্যাট প্রত্যাহার করে। এই সিদ্ধান্তে বাজারে প্রভাব পড়া সম্ভব নয় বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে চিঠি দেয়ার পর আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ রেখে বাকি সব ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে এই বৈঠকে ভ্যাট প্রত্যাহারের এই সিদ্ধান্তের পর তেলের আমদানি খরচ কত পড়েছে, এরপর পরিশোধন ও বাজারজাতকরণ খরচ এবং মিল মালিক, পাইকির ও ব্যবসায়ীদের মুনাফা হিসাব করে নতুন দাম ঠিক করা হয়।

বাণিজ্যসচিব বলেন, ‘গত ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে যে পরিমাণ সয়াবিন আমদানি হয়েছে তার এক মাসের গড় মূল্য ধরে এর সঙ্গে ভ্যাট কমানোর হার সমন্বয় করে সয়াবিন তেলের লিটারে দাম ৮ টাকা কমাতে প্রস্তাব করেছি।

‘যদিও ভ্যাট কমার হার অনুযায়ী লিটারে কমে ৭ টাকা, তবে মিল মালিকরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব অনুযায়ী তারা ৮ টাকাই কমাতে রাজি হয়। এর মধ্য দিয়ে আমরা ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ এর দামে ফিরে গেলাম।’

নতুন দাম অনুযায়ী সয়াবিন তেলের ৫ লিটারের বোতল ৭৯৫ টাকা থেকে কমে ৭৬০ টাকা এবং খোলা সয়াবিনের দাম ১৪৩ টাকা থেকে কমিয়ে ১৩৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

তিনি বলেন, ‘নতুন নির্ধারিত দাম কোম্পানি পর্যায় কাল থেকেই কার্যকর হবে। অর্থাৎ তারা আগামীকাল যে মাল বাজারে সরবরাহ করবে তার গায়ে নতুন দাম উল্লেখ থাকবে।’

বৈঠকে অংশ নেয়া ব্যবসায়ীদের সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে সরকারের কাছে ভ্যাট কমানোর প্রস্তাব করেছিলাম। সরকার আমাদের প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে ভ্যাট তুলে নিয়ে ব্যবসায়ীদের অনুরোধে সাড়া দিয়েছেন। এখন ব্যবসায়ীদের প্রতিশ্রুতি রক্ষার পালা। আমরা আশা করছি, খাত সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা পণ্যের সঠিক দাম ও সরবরাহ বজায় রেখে সরকারের দেয়া এই সম্মান অটুট রাখবেন।’

ভোজ্যতেলের সংগঠনের সভাপতি ও টিকে গ্রুপের পরিচালক মোস্তফা হায়দার জামিল বলেন, ‘আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, এখন থেকে বাজারে ভোজ্যতেলের সরবরাহে কোনো সমস্যা হবে না। কোম্পানিগুলো তার স্টক থাকা পর্যন্ত সব মাল সময় মতো সরবরাহ দেবেন এবং নির্ধারিত দাম মেনে চলবে।’

মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য ও আমদানি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি, সিটি গ্রুপ, মেঘনা, টিকে গ্রুপ, বসুন্ধরা ও এস আলম গ্রুপের মালিকরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের আরো খবর