সাবেক রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের দ্বিতীয় জানাজা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ মাঠে রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তার জানাজা হয়।
এতে ইমামতি করেন সুপ্রিম কোর্ট জামে মসজিদের ইমাম আবু সালেহ মো. সলিমউল্লাহ।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, সাবেক প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এবং সিনিয়র আইনজীবীরা এতে অংশ নেন।
জানাজায় অংশ নিয়ে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের কর্মময় জীবন দেশের বিচার অঙ্গনে স্বর্ণাক্ষরে লিখিত থাকবে। এ পর্যন্ত যতজন প্রধান বিচারপতি দায়িত্ব পালন করেছেন, তাদের মধ্যে আইন ও মামলা পরিচালনায় বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন নিজেকে।
এর আগে বিচারপতি সাহাবুদ্দীনের মরদেহবাহী কফিনে রাষ্ট্রপতির পক্ষে তার সামরিক সচিব শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিরা।
এ ছাড়া আওয়ামী লীগ ও বিএনপি, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়, নব্বইয়ের সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে। সাবেক রাষ্ট্রপতির মরদেহ বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে।
এসব তথ্য জানিয়েছেন সাহাবুদ্দীনের জামাতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আহাদুজ্জামান মোহাম্মদ আলী।
রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) শনিবার সকাল ১০টার দিকে মৃত্যু হয় সাহাবুদ্দীন আহমদের। তার বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। তিনি বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন।
১৯৯০ সালের ১৪ জানুয়ারি থেকে ১৯৯৫ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সাহাবুদ্দীন আহমদ। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তাকে রাষ্ট্রপতি করা হয়।
১৯৩০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি নেত্রকোনার কেন্দুয়া থানার পেমল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন সাহাবুদ্দীন আহমদ। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫১ সালে অর্থনীতিতে স্নাতক করেন। এরপর ১৯৫২ সালে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে এম এ ডিগ্রি লাভ করেন।
তিনি ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে প্রথম কর্মজীবন শুরু করেন। এরপর প্রশাসক হিসেবে গোপালগঞ্জ ও নাটোর মহকুমায় চাকরি করেন। পরে ১৯৬০ সালে বিচার বিভাগে বদলি হন। তিনি ঢাকা ও বরিশালের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এবং পরে কুমিল্লা এবং চট্টগ্রামে জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৬৭ সালে সাহাবুদ্দীন আহমদ হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার হিসেবে নিয়োগ পান। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে তিনি হাইকোর্টের বিচারপতি হন। পরে ১৯৮১ সালের ১৬ এপ্রিল নিয়োগ পান আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে।