মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগেই ১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ গাজীপুরে পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে উঠেছিল। সেটাকে মাইলফলক জানিয়ে ‘প্রথম প্রতিরোধের’ দাবি জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
একাত্তর সালের ১৯ মার্চ গাজীপুরের তৎকালীন জয়দেবপুর এবং চান্দনা-চৌরাস্তা এলাকায় প্রতিরোধ সংগ্রাম করতে গিয়ে শহীদ হয়েছেন ফুটবলার হুরমত আলী, কানু ও মনু খলিফা। আহত হন আরও অনেকে।
শনিবার গাজীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বরে নাট মন্দিরে অনুষ্ঠিত ‘১৯ মার্চ: প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ দিবস ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এ দিনটির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির জন্য গাজীপুরবাসীর দাবির সঙ্গে আমিও একাত্মতা প্রকাশ করছি। এ জন্য জেলা প্রশাসককে সরকারিভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে আমিও তা দেখব।’
জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন গাজীপুরের পুলিশ সুপার এস এম সফিউল্লাহ, গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার মো. জাকির হাসান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফ নয়ন, অধ্যাপক এম এ বারী। এ সময় গাজীপুর জেলা ও মহানগরের বীর মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী আরো বলেন, ‘গাজীপুরবাসীর দুঃখ শহরের লেভেলক্রসিং। এ দুঃখ দূর করতে রেল পথটির ওপরে একটি রেল ওভারব্রিজ নির্মাণ ও বিকল্প রাস্তা নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে রেলব্রিজ নির্মাণের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে কাজও চলছে।’
আগামী রমজানের প্রথম দিকে গাজীপুরে পরিবেশ দূষণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, যানজটসহ বিভিন্ন বিষয় চিহ্নিতকরণ ও তা সমাধানের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী।
আলোচনা সভায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার মিয়া বলেন, ‘১৯৭১ সালের ১৯ মার্চে ঢাকা ব্রিগেড হেডকোয়ার্টার থেকে আকস্মিকভাবে পাকিস্তানি ব্রিগেডিয়ার জাহান জেবের নেতৃত্বে পাকিস্তানি রেজিমেন্ট জয়দেবপুরের (গাজীপুর) দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টকে নিরস্ত্র করার জন্য পৌঁছে যায়।
‘এ খবর জানাজানি হতেই বিক্ষুব্ধ জনতা জয়দেবপুরে এক প্রতিরোধ সৃষ্টি করে। সশস্ত্র পাকিস্তানি সেনাবাহিনী জনতার ওপর গুলিবর্ষণ করেন। এতে শহীদ ও হতাহত হয় অনেকে। এটি ছিল মুক্তিযুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ।’