বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ঝুলে আছে সুপ্রিম কোর্ট বারের ভোটের ফল

  •    
  • ১৯ মার্চ, ২০২২ ২২:০৬

চূড়ান্ত ফল ঘোষণার আগে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সম্পাদক প্রার্থীর পক্ষ থেকে অসদাচরণ করা হয়েছে এমন অভিযোগ এনে পদত্যাগ করেছেন বার নির্বাচন পরিচালনা উপকমিটির প্রধান জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ ওয়াই মশিউজ্জামান। শনিবার নিউজবাংলাকে তিনি তার পদত্যাগের কারণও জানিয়েছেন।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি (২০২২-২৩) নির্বাচনে ভোট গণনা শেষ হলেও ঝুলে আছে ফল ঘোষণা।

গত ১৫ ও ১৬ মার্চ সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৫২টি বুথে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ১৭ মার্চ মধ্যরাতে ভোট গণনা শেষ হয়। কিন্তু ফল ঘোষণার আগেই সম্পাদক পদ নিয়ে হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। ফলে থেমে যায় নির্বাচনের ফল ঘোষণা।

এদিকে চূড়ান্ত ফল ঘোষণার আগে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সম্পাদক প্রার্থীর পক্ষ থেকে অসদাচরণ করা হয়েছে এমন অভিযোগ এনে পদত্যাগ করেছেন বার নির্বাচন পরিচালনা উপকমিটির প্রধান জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ ওয়াই মশিউজ্জামান। শনিবার নিউজবাংলাকে তিনি তার পদত্যাগের কারণও জানিয়েছেন।

ভোট গণণা শেষে ফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেল থেকে সম্পাদক প্রার্থী মো. আবদুন নুর দুলাল ভোট পুনঃগণনার আবেদন করেন। কিন্তু তার আবেদন নিষ্পত্তি না করেই নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান পদত্যাগ করেন।

এ বিষয়ে নিউজবাংলার পক্ষ থেকে জানতে চাইলে এ ওয়াই মশিউজ্জামান বলেন, ‘ফল ঘোষণার বিষয়ে আমার কাছে কেন জানতে চান? আমি তো পদত্যাগপত্র দিয়ে দিয়েছি। আমি ১৮ মার্চ রাত ১টায় পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি।

পদত্যাগপত্রে আমি স্বাস্থ্যগত কারণ উল্লেখ করলেও আসলে আমি অপমানিত হয়েছি। অনেক বছর ধরেই আমি বারের নির্বাচন পরিচালনা কমিটিতে দায়িত্ব পালন করে আসছি। কিন্তু এমন নোংরামি কখনও দেখিনি। বারের নির্বাচনব্যবস্থাকে আমি একটা ফর্মে আনতে চেয়েছিলাম। কিন্তু দেখলাম সেটা হচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থীর পক্ষে তার কর্মীরা যে আচরণ করেছেন তা অনাকাঙ্ক্ষিত। দলের বড় নেতারা উপস্থিত থাকা অবস্থায় আমার সঙ্গে তারা যে আচরণ করেছে, সেটা মেনে নেয়ার মতো না। এটা দেখে নেতারা কোনো প্রতিবাদও করলেন না। আগে জানতাম নেতারা কর্মী চালান। আর ওই রাতে দেখলাম কর্মীরা নেতাদের চালান।’

ভোট পুনঃগণনার বিষয়ে জানতে চাইলে এ ওয়াই মশিউজ্জামান বলেন, ‘১৮ মার্চ রাতে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। আর রাত ৩টার দিকে বলেছি যে ১৮ মার্চ বিকেলে উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে তার আবেদন নিষ্পত্তি করব। পুনরায় গণনা করা হবে এমন কথা আমি বলিনি।

‘যেহেতু রাত ১টায় পদত্যাগ করেছি, সুতরাং আমার ওই বক্তব্যের কোনো কার্যকারিতাও নেই। তা ছাড়া ওই দিন আমি জান বাঁচানোর জন্য এটি করেছি। কারণ আমাকে ঘেরাও করে রাখা হয়েছিল। এ ঘটনা আমাকে বড় দুঃখ দিয়েছে।’

এদিকে নির্বাচনে ভোট পুনরায় গণনা চেয়ে করা আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তির আবেদন করেছেন সাদা প্যানেল থেকে সম্পাদক প্রার্থী আব্দুন নুর দুলাল।

তার পক্ষে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক আইনজীবী মোমতাজ উদ্দিন মেহেদী শনিবার সংবাদ সম্মেলন করে ভোট গণনার দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন।

অন্যদিকে নির্বাচনে অর্ধশতাধিক ভোটে এগিয়ে থাকা নীল প্যানেল থেকে সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবীদের সংগঠন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে গণতান্ত্রিক চর্চা রয়েছে। দেশের আর কোথাও না থাকলেও এই একটি জায়গায় এখনও গণতন্ত্রের চর্চা হয়। এখানে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

‘অন্যান্য বার যে প্রক্রিয়ায় নির্বাচন হয় এবারও একই প্রক্রিয়ায় হয়েছে। ১৪ পদের বিপরীতে ৩৩ জন প্রার্থী ছিলেন। তাদের মধ্যে ৩২ জন প্রার্থী যারা জয়ী বা পরাজিত হয়েছেন তারা সেটি গ্রহণ করেছেন। শুধু একজন প্রার্থী ভোট পুনরায় গণনার দরখাস্ত দিয়েছেন বলে শুনেছি।’

কাজল বলেন, ‘বার নির্বাচনে রিকাউন্টিং বা ফ্রেশ কাউন্টিংয়ের বিধান আমাদের গঠনতন্ত্রে নেই। দুর্ভাগ্যজনক হলো, গণনার পর ফল ঘোষণার আগেই নির্বাচন কমিশনারকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। বারের সদস্য নয় এমন লোকজনও সেদিন এখানে উপস্থিত থেকে অসদাচরণ করেছে। তার পরও আমি বিশ্বাস করি, ফল ঘোষণার যে আনুষ্ঠানিকতা বাকি আছে, সেটুকু শিগগরিই শেষ হবে।’

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২২-২৩ সেশনের নির্বাচনে ভোট গণনা শেষে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেল থেকে সভাপতি পদে এগিয়ে আছেন সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল সিনিয়র আইনজীবী মমতাজ উদ্দিন ফকির। অন্যদিকে সম্পাদক পদে বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেল থেকে এগিয়ে আছেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।

ফলাফলে দেখা যায়, ১৪টি পদের মধ্যে সভাপতিসহ ছয়টি পদে আওয়ামী লীগের সাদা প্যানেল আর সম্পাদকসহ আটটি পদে বিএনপির নীল প্যানেল এগিয়ে রয়েছে।

সাদা প্যানেল থেকে বেশি ভোট পেয়ে এগিয়ে আছেন সহসভাপতি পদে মো. শহীদুল ইসলাম ও মোহাম্মদ হোসেন এবং সদস্য পদে ফাতেমা বেগম, শাহাদাত হোসাইন রাজিব ও সুব্রত কুমার কুণ্ডু।

আর সম্পাদক পদে কাজল ছাড়াও বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেল থেকে এগিয়ে আছেন সহসম্পাদক পদে মাহফুজ বিন ইউসুফ ও মাহবুবুর রহমান খান, ট্রেজারার পদে মোহাম্মদ কামাল হোসেন এবং সদস্য পদে মাহদীন চৌধুরী, মো. গোলাম আক্তার জাকির, মঞ্জুরুল আলম সুজন ও কামরুল ইসলাম।

গতবারের নির্বাচনে সভাপতিসহ আটটি পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেল জয়লাভ করে। অন্যদিকে সম্পাদকসহ ছয়টি পদে জয়লাভ করে বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেল।

এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ৮ হাজার ৬২৩ জন। দুই দিনব্যাপী ভোটগ্রহণ শেষে বৃহস্পতিবার সকালে ভোট গণনা শুরু হয়।

এ বিভাগের আরো খবর