বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কুড়িগ্রামে স্কুলের জায়গা দখল করে দোকান

  •    
  • ১৯ মার্চ, ২০২২ ১৯:২৬

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার সিংগার ডাবরিহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং সিগার ডাবরিহাট বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে গিয়ে দেখা যায়, জায়গা দখল করে দোকান তৈরি করা হয়েছে। বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে কি না।

কুড়িগ্রামে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি দখল করে দোকান গড়ে উঠেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

দেশের সব স্কুল-কলেজের গেটের সামনে কোনো স্থায়ী-অস্থায়ী দোকান না রাখতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পুলিশকে সুপারিশ করা হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ১৮তম বৈঠকে। এর পরও এখন পর্যন্ত স্থানীয় প্রশাসন সমস্যা সমাধানে কোনো উদ্যোগ নেয়নি।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার সিংগার ডাবরিহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং সিগার ডাবরিহাট বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে গিয়ে দেখা যায়, জায়গা দখল করে দোকান তৈরি করা হয়েছে। বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে কি না।

সাম্প্রতিক সিংগার ডাবরিহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাউন্ডারি দেয়াল ও গেট নির্মাণের জন্য প্রায় ৯ লাখ টাকা বরাদ্দ আসে। কাজের টেন্ডার হলেও প্রভাবশালী দখলদারদের কারণে নির্মাণকাজ শুরু করতে পারছে না স্কুল কর্তৃপক্ষ।

স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েও মিলছে না সমাধান। এমন পরিস্থিতিতে সরকারি বরাদ্দ ফেরত যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

কয়েক বছরে জায়গা উচ্ছেদের একাধিকবার উদ্যোগ নেয়া হলেও অজ্ঞাত কারণে সেটি ভাটা পড়ে যায়। এতে পাঠদানে নানা ভোগান্তিতে পড়ছেন শিক্ষকরা। আর শিক্ষার্থীরা শিক্ষার পরিবেশ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

সিংগার ডাবরিহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাফিসা আক্তার বলে, ‘আমাদের স্কুলের কোনো বাউন্ডারি ওয়াল নেই। স্কুলের পাশ দিয়ে দোকানঘর থাকায় শ্রেণিকক্ষে আলো আসে না। সে জন্য ক্লাস করতে সমস্যা হয়।’

ইয়াসা খাতুন নামে আরেক শিক্ষার্থী বলে, ‘স্কুলের পাশে দোকানঘর থাকায় সব সময় হট্টগোল লেগে থাকে। এতে ভালোভাবে ক্লাস করা যায় না। বাউন্ডারি ওয়াল ভীষণ দরকার আমাদের জন্য।’

অভিভাবক আব্দুল মমিন বলেন, ‘স্কুলের সামনে দোকান থাকায় এখানে বোঝাই যায় না স্কুল আছে। ছোট একটা গেট দিয়ে বাচ্চাদের স্কুলে প্রবেশ করতে হয়।’

আবু বকর সিদ্দিক নামে সেই এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘স্কুলের সামনে অবৈধ দোকান থাকায় স্কুলের যে সৌন্দর্য তা নষ্ট হয়ে আছে। আমরা এলাকাবাসী চাই অবৈধ দোকান তুলে এখানে বাউন্ডারি ওয়াল করা হোক। তাহলে স্কুলের সৌন্দর্য ফিরে আসবে। পড়ালেখার মানও বাড়বে।’

শ্রেণিকক্ষ ঘেঁষে দোকান নির্মাণ করায় আলো প্রবেশ করতে পারে না। ছবি: নিউজবাংলা

কী বলছেন অভিযুক্তরা

দখলদারদের একজন বণিক সমিতির সভাপতি ওয়াহেদ মাস্টার। দখলের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘স্কুলের সামনে যতগুলো দোকান নির্মাণ করা হয়েছে, সবগুলোই অবৈধ। সরকারের যখন দরকার হবে তখন ভেঙে দেবে।’

দখলে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আব্দুল বাতেন বলেন, ‘আমরা এখানে ২৫-৩০ বছর ধরে দোকান করে জীবন চালাচ্ছি। আমাদের পুনর্বাসন করে তারপর ভেঙে দিক।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ‘অবৈধভাবে এসব দোকান নির্মাণ করে লাখ লাখ টাকা সিকিউরিটি নিয়ে ভাড়া নেয়া হয়েছে। প্রতি মাসে এসব দোকান থেকে ২-৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ভাড়া তোলেন দোকানের মালিকরা। এখান থেকে সরকার কোনো রাজস্ব পায় না।’

সিংগার ডাবরিহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ কে এম আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘৯২ শতক জমির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে সামনের অংশে প্রায় ১৫ শতক জমি বেদখল। অবৈধ এসব দোকান থাকায় আমাদের নানা রকমের সমস্যায় পড়তে হয়। সব সময় শব্দ দূষণ হয়। এতে শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে রয়েছি।

‘বাউন্ডারি ওয়ালের জন্য বরাদ্দ এলেও কাজ হচ্ছে না। বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। কিন্তু দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই।’

সিগার ডাবরিহাট বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘এসব অবৈধ দোকান উচ্ছেদের জন্য উদ্যোগ নেয়া হলেও সফল হয়নি। উল্টো আমাদের হুমকি-ধমকির মুখে পড়তে হয়েছে। শিক্ষার মান উন্নয়নে এসব দোকান উচ্ছেদ প্রয়োজন।’

রাজারহাট উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম অবৈধ দখলের কথা স্বীকার করে জানান, উপজেলার সিংগার ডাবরিহাট, ঘড়িয়ালডাঙ্গা, পাঙ্গা, নাজিমখা, বোতলা, বৈদ্যের বাজার, চাকিরপশার তালুক, ডাংরারহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি দখলে রয়েছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জমি দখলদারদের কাছ থেকে উদ্ধারে প্রশাসনসহ সবার সহযোগিতা চান তিনি।

প্রশাসনের ভাষ্য

রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূরে তাসনিম বলেন, ‘দ্রুত অবৈধ উচ্ছেদের বেদখলকৃত জমি উদ্ধারে অভিযান শুরু হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর