ভারতের জনগণকে তাদের ‘ঔপনিবেশিক মানসিকতা’ ত্যাগ করতে এবং তাদের নিজস্ব পরিচয়ে গর্ব করার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির উপরাষ্ট্রপতি এম ভেঙ্কাইয়া নাইডু। বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার গেরুয়াকরণের জন্য অভিযুক্ত করা হয়, কিন্তু গেরুয়ার দোষ কী? সর্বে ভবনতু সুখিনাহ (সবাই সুখী) এবং বাসুধৈব কুটুম্বকম (বিশ্ব একটি পরিবার), যা আমাদের প্রাচীন গ্রন্থে থাকা দর্শন, যা আজও ভারতের পররাষ্ট্রনীতির পথপ্রদর্শক।’
হরিদ্বারের দেব সংস্কৃতি বিশ্ববিদ্যালয়ে দক্ষিণ এশীয় শান্তি ও পুনর্মিলন ইনস্টিটিউটের উদ্বোধনের পর এসব কথা বলেন তিনি।
উপরাষ্ট্রপতি নাইডু ভারতের স্বাধীনতার ৭৫তম বছরে শিক্ষার ম্যাকোলে পদ্ধতিকে সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘এটি দেশে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে একটি বিদেশি ভাষা চাপিয়েছে এবং শিক্ষাকে অভিজাতদের মধ্যে সীমাবদ্ধ করেছে।’
উপরাষ্ট্রপতি বলেছেন, ‘শতাব্দীর ঔপনিবেশিক শাসন আমাদের নিজেদের একটি নিকৃষ্ট জাতি হিসেবে দেখতে শিখিয়েছে। আমাদের নিজেদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্যগত জ্ঞানকে তুচ্ছ করতে শেখানো হয়েছে। এটি জাতি হিসেবে আমাদের বিকাশকে মন্থর করে দিয়েছে।
‘আমাদের শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে একটি বিদেশি ভাষা আরোপ করে শিক্ষাকে সীমাবদ্ধ করে দিয়েছে। সমাজের একটি ছোট অংশ, একটি বিশাল জনগোষ্ঠীকে শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের ঐতিহ্য, আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের পূর্বপুরুষদের নিয়ে গর্ব করা উচিত। আমাদের অবশ্যই শিকড়ে ফিরে যেতে হবে। অবশ্যই আমাদের ঔপনিবেশিক মানসিকতা ত্যাগ করতে হবে। আমাদের যত সম্ভব ভারতীয় ভাষা শিখতে হবে। অবশ্যই আমাদের মাতৃভাষাকে ভালোবাসতে হবে। আমাদের ধর্মগ্রন্থগুলোকে জানার জন্য আমাদের অবশ্যই সংস্কৃত শিখতে হবে, যা জ্ঞানের ভান্ডার।’
তরুণদের মাতৃভাষা প্রচারে উৎসাহিত করে নাইডু বলেন, ‘আমি সেই দিনের অপেক্ষায় রয়েছি, যেদিন একটি নিজ নিজ রাজ্যের মাতৃভাষায় সব গেজেট নোটিফিকেশন জারি করা হবে। আপনার মাতৃভাষা আপনার দৃষ্টিশক্তির মতো, যেখানে একটি বিদেশি ভাষা সম্পর্কে আপনার জ্ঞান চশমার মতো।’