যশোরে ‘অনৈতিক কার্যকলাপের’ অভিযোগ এনে দুই তরুণ-তরুণীকে নির্যাতনের ঘটনায় করা মামলায় এক ইউপি সদস্যসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শনিবার সকালে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এর আগে শুক্রবার ভুক্তভোগী তরুণীর বাবা কোতোয়ালি মডেল থানায় ইউপি সদস্য আনিচুর রহমানসহ চারজনের নামে লিখিত অভিযোগ দেন। পরে অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে পুলিশ।
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তার আনিচুর রহমান সদর উপজেলার চূড়ামনকাটি ইউনিয়নে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। গ্রেপ্তার অন্য তিন আসামি হলেন আব্দুল আলীম, আইয়ুব আলী ও আব্দুর রহমান ভুট্টো।
বুধবার সন্ধ্যার দিকে ওই ইউনিয়নের আব্দুলপুর গ্রামে ঘটনাটি ঘটলেও শুক্রবার নির্যাতনের দুটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
নির্যাতনের শিকার তরুণীর বাবা অভিযোগ করে বলেন, ‘১৫ মার্চ সন্ধ্যায় আমার মেয়ে আত্মীয় এক যুবকের মোটরসাইকেলে করে এনায়েতপুর গ্রামে ওয়াজ মাহফিল শুনতে যায়। পরে ফেরার পথে তাদের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগ এনে দুজনকেই অশালীন কথাবার্তা বলতে থাকে ইউপি সদস্য আনিছুর রহমান, তার সহযোগী আলীম, আইয়ুব ও ভুট্টোসহ আরও চার-পাঁচজন।
‘একপর্যায়ে তাদের দুজনকে একটি দোকানের ভেতর নিয়ে মারপিট করতে থাকে তারা। খবর পেয়ে সেখানে গেলে আমাকেও ধাক্কা দিয়ে চলে যায় তারা। বিনা দোষে তাদের অমানবিক নির্যাতন করল। নির্যাতনকারীদের বিচার চাই।’
১ মিনিট ২৯ সেকেন্ড এবং ৪৪ সেকেন্ডের দুটি ভিডিওটিতে দেখা যায়, একটি দোকানের ভেতর তরুণীকে এলোপাতাড়ি জুতা দিয়ে পেটাচ্ছেন ইউপি সদস্য আনিচুর। ওই তরুণী মাটিতে লুটিয়ে পড়লে ইউপি সদস্যের সঙ্গে থাকা কয়েকজন তাকে লাথিও মারে।
চূড়ামনকাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দাউদ হোসেন বলেন, ‘ভিডিওটি ভাইরাল হলে ঘটনাটি জানতে আমি মোবাইলে ইউপি সদস্যের সঙ্গে কথা বলেছি। মেয়ে ও ছেলেটি যদি অন্যায় করেও থাকে, এইভাবে নির্যাতন করা ঠিক হয়নি। ইউপি সদস্য অন্যায় করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি ভুক্তভোগী মেয়ে ও ছেলের পরিবারের সদস্যদের ইউনিয়ন পরিষদে আসতে বলেছিলাম। এর সুষ্ঠু বিচারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম কিন্তু অভিযুক্ত ও ভুক্তভোগী কেউ আসেনি আমার কাছে।’
ওসি বলেন, ‘ভুক্তভোগীর বাবা থানায় চারজনের নামে একটি মামলা করেছেন। মারধরের ভিডিও দেখে চিহ্নিত করে অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’