কৃত্রিমভাবে দাম বাড়ানোর কারণে চারদিকে এখন দুর্ভিক্ষের লক্ষণ দেখা দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
শুক্রবার বিকেলে পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে বিএনপির উদ্যোগে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় আলোচনা সভা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আগে এক বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।
রিজভী বলেন, ‘মানুষ ভাত ও তরকারির বিকল্প খুঁজছে। এখন আগের ৫ টাকার বনরুটি ১০ টাকা। কলা ১০ টাকা। এগুলো হচ্ছে দুর্ভিক্ষের লক্ষণ। মানুষ বিকল্পও খুঁজে পাচ্ছে না। ভরা মৌসুমেও পণ্যের দাম বেড়েছে। এটা যে কৃত্রিমভাবে করা হয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।’
তিনি বলেন, ‘দেশে গরিব মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এ জন্য দায়ী অবৈধ সরকার ও তার মন্ত্রীরা। হাট-ঘাট, বাজার-বন্দর সবই সরকারের লোকজনের সিন্ডিকেটের কবলে।
‘শেখ হাসিনা লুটেপুটে খাওয়ার জন্য তাদের লোকজনকে লাইসেন্স দিয়ে রেখেছেন। বাজার নিয়ন্ত্রণ করার কোনো উদ্যোগ নেই। তারা এসি রুমে বসে নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত। বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আকাশছোঁয়া। মানুষের নাগালের বাইরে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমাদের নতুন প্রেক্ষাপটে শবে বরাত পালন করতে হচ্ছে। আগে সারা রাত নামাজ পড়ে ইবাদত করতাম আনন্দের সঙ্গে। কিন্তু সেই আনন্দ তিরোহিত। দেশে দুঃসহ রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে। এখানে কোনোকিছু স্বাভাবিক না। স্বাভাবিকভাবে জীবনযাপন করা যায় না।’
তিনি বলেন, ‘সরকার দেশে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করেছে। এখন জাতি-গোষ্ঠী ভেদে উৎসব পালন করতে গেলেও ভয় হয়। এখন মানুষের জীবনধারণ কঠিন হয়ে গেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আকাশছোঁয়া। মানুষের নাগালের বাইরে।’
রিজভী বলেন, ‘সরকার ভয়ের পরিবেশ তৈরি করেছে। মানুষের ভাত-তরকারি কেড়ে নিয়েছে। শিশুদের দুধ কেড়ে নিয়েছে। তারা নিজেদের লোকদের দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সাজিয়েছে। কিন্তু জনগণের ক্ষোভের কাছে কামানও টিকতে পারে না। আপনাকে যেতে হবে এটা অবশ্যম্ভাবী।’
তিনি বলেন, ‘তারা (আওয়ামী লীগ) দেশের গণতন্ত্র, নির্বাচন ও জনগণের ভোটাধিকার ধ্বংসের পর মানুষের কায়িক উপার্জন ধ্বংস করছে। ফলে আজকে শবে বরাত, মানুষ হালুয়া-রুটির ব্যবস্থা করবে কী করে? তাদের মনে তো আনন্দ নেই।
অনুষ্ঠানে পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে আলোচনা সভা শেষে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। পরে একই স্থানে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাসাসের উদ্যোগে গরিব মানুষের মাঝে খাদ্যপণ্য বিতরণ করেন রুহুল কবির রিজভী।
এতে অংশ নেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মো. আবদুস সালাম, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরফত আলী সপু, জয়নাল আবেদীন মেসবাহ, নাজিম উদ্দিন আলম, কাজী রফিক, তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, সদস্য সচিব মজিবুর রহমান, ওলামা দলের আহ্বায়ক শাহ মো. নেছারুল হক, সদস্য সচিব অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, জাসাসের জাকির হোসেন রোকন, শ্রমিক দলের কাজী মো. আমীর খসরু, মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু, বাদল হাওলাদার, কৃষক দলের সাবেক নেতা শাহজাহান মিয়া সম্রাট, স্বেচ্ছাসেবক দলের ডা. জাহেদুল কবির, ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা মেহবুব মাসুম শানিত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম রাকিবসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের শতাধিক নেতাকর্মী।