বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

উপহারের ঘরে সেলুন, সচ্ছলতায় মুখে হাসি

  •    
  • ১৮ মার্চ, ২০২২ ১৬:৩৫

নজরুলের স্ত্রী রিনা আক্তার বলেন, ‘আমার জামাই চুল কাইট্টা আয় করে। আমি আস (হাঁস) মুরকা ও ছাগল পালি। ঘরের লগে কুদ্দুর খালি জায়গা আছে। লাউ-কুমড়া লাগাইছি। আল্লায় দিলে পোলামাইয়াডি লেহাপড়া করতাছে। আমডা জামাই, বউ পোলা-মাইয়া লইয়া কয়টা ভাত খাইতাছি। আল্লা প্রধানমন্ত্রীরে হাজার বছর বাছাইয়া রাহুক।’

কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার নাল্লা গ্রামের গৃহহীন নজরুল ইসলাম। স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে অন্যের বাড়িতে ছিল আশ্রিত হিসেবে।

সংসার চালাতে কখনও দিনমজুর, কখনওবা সেলুনে কাজ করতেন। সে অবস্থাতেই মানবেতর জীবন-যাপন করতেন নজরুল। সেই নজরুলের পরিবারে এসেছে সচ্ছলতা।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের একটি ঘর বরাদ্দ পান নজরুল ও রিনা দম্পতি। মাথার ওপর চাল পেয়ে অনেকটা নির্ভার হন তিনি। শুরু হয় তার ভাগ্য পরিবর্তনের স্বপ্ন।

স্থানীয়রা জানান, নজরুল ইসলাম খুব অসহায় মানুষ। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে অন্যের বাড়িতে বাস করতেন। যখন কাজ পেতেন তা করে কোনো রকম দিন পার করতেন। স্থানীয়রা খুব কাছ থেকেই তার কষ্ট দেখেছেন।

নজরুল ইসলাম বলেন, তার তিন সন্তান ১১ বছরের জান্নাতুল ফেরদৌস, সাত বছরের ছমিল ইসলাম ও তিন বছরের মেয়ে সুরাইয়া আক্তার।

জানান, ঘর পেয়ে নজরুল প্রথমে স্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেন। সিদ্ধান্ত নেন নতুন ঘরের বারান্দায় সেলুন দেবেন। যেই চিন্তা, সেই কাজ। আয়না, কাঁচি, চিরুনি, ফোম, শেভিং ক্রিম, চেয়ার কেনেন। শুরু করেন চুল কাটা ও শেভ করার কাজ। এভাবে প্রতিদিন চুল কাটা ও শেভ করে ৭০০-৮০০ টাকা আয় করেন। এতে পরিবারের সচ্ছলতা ফিরে আসে। এখন সংসারের খরচ মিটিয়ে কিছুটা টাকা জমা করতে পারছেন।

নজরুলের স্ত্রী রিনা আক্তার বলেন, ‘আমার জামাই চুল কাইট্টা আয় করে। আমি আস (হাঁস) মুরকা ও ছাগল পালি। ঘরের লগে কুদ্দুর খালি জায়গা আছে। লাউ-কুমড়া লাগাইছি। আল্লায় দিলে পোলামাইয়াডি লেহাপড়া করতাছে। আমডা জামাই, বউ পোলা-মাইয়া লইয়া কয়টা ভাত খাইতাছি। আল্লা প্রধানমন্ত্রীরে হাজার বছর বাছাইয়া রাহুক।’

বছর দেড়েক আগে নজরুল ও রিনা দম্পতির হাতে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরের চাবি তুলে দেন ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফৌজিয়া সিদ্দিকা। বর্তমানে তিনি মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

ফৌজিয়া সিদ্দিকা বলেন, ‘প্রথম পর্যায়ে মুজিববর্ষের উপহার গৃহহীনদের ঘর তুলে দেয়ার বিষয়টি আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং ছিল। আমরা যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত গৃহহীনদের হাতে নতুন ঘরের চাবি তুলে দিয়েছিলাম। এখন যখন দেখি ওই গৃহহীনরা ঘর পেয়ে আয়ের পথ বের করে সুখে আছেন, তখন সত্যি খুব ভালো লাগা কাজ করে। নজরুল-রিনা দম্পতির জন্য শুভকামনা থাকবে।’

এ বিভাগের আরো খবর