নাপা সিরাপ খেয়ে নয়, পরিকল্পিতভাবে মায়ের হাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে দুই শিশু খুন হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় শিশু দুটির বাবার করা মামলায় মা লিমা আক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আশুগঞ্জের দুর্গাপুর এলাকায় স্বামীর বাড়ি থেকে বৃহস্পতিবার ভোররাতে লিমাকে আটক করে পুলিশ। পরে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় তাকে।
দুই শিশুকে হত্যার অভিযোগে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় মামলা করেন তাদের বাবা। সেই মামলায় গ্রেপ্তার লিমাকে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
নিউজবাংলাকে ঘটনা নিশ্চিত করেছেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) মোল্লা মোহাম্মদ শাহিন।
দুই শিশুকে কীভাবে হত্যা করা হয়েছে এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মিষ্টির সঙ্গে বিষ মিশিয়ে ইয়াছিন ও মোরসালিনকে খাওয়ান তাদের মা। এতেই তাদের মৃত্যু হয়। পরে প্রচার করা হয় নাপা সিরাপ খেয়ে তাদের মৃত্যু হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘পূর্বপরিকল্পনা অনুসারে সন্তানদের হত্যা করেন লিমা। তাকে এ কাজে সহযোগিতা করেছেন মো. সফিউল্লাহ। সফিউল্লার সঙ্গে লিমার বিয়েবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। লিমা গেল দুই বছর ধরে একটি চালকলে কাজ করছেন। সেখানে তার সঙ্গে সফিউল্লার পরিচয় হয়।’
সফিউল্লাহকে ধরতে অভিযান চলছে বলেও জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।
১০ মার্চ আশুগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের ইসমাঈল হোসেনের দুই ছেলে সাত বছর বয়সী ইয়াসিন খান ও চার বছর বয়সী মুরসালিন খান নাপা সিরাপ খেয়ে মারা যায় বলে অভিযোগ তোলেন স্বজনরা।
এই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয় ও জেলা সিভিল সার্জন অফিস থেকে আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পুরো জেলায় নাপা সিরাপ বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি।
যে ফার্মেসি (মা ফার্মেসি) থেকে নাপা সিরাপ কেনার কথা জানিয়েছিল শিশুদের পরিবার, সেটি সিলগালা করে দেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা। ওই ফার্মেসি থেকে নমুনা সংগ্রহ করে তা পাঠানো হয় ঢাকায়।
উপজেলা ঔষধ প্রশাসন থেকে জানানো হয়, অনুমোদন ছাড়াই চলছিল মা ফার্মেসি। ঘটনার পর থেকে পলাতক ফার্মেসি মালিক মাঈনুদ্দিন।
পরে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের নাপা সিরাপের একটি ব্যাচ পরীক্ষা-নিরীক্ষার উদ্যোগ নেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে নাপা সিরাপের মানে কোনো সমস্যা না পাওয়ার কথা জানান অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফ।