সারা দেশে করোনা প্রতিরোধক টিকার বিশেষ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে বুস্টার ডোজ দেয়া শুরু হয়েছে। আগে ষাটোর্ধ্ব নাগরিক এবং করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সম্মুখসারির যোদ্ধাদের এই ডোজ দেয়া হলেও এখন ১৮ বছর বয়সী এবং টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার পর চার মাস পার হয়েছে এমন যে কেউ এই টিকা নিতে পারছেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুরু হওয়া এই ক্যাম্পেইন চলবে ৩১ মার্চ পর্যন্ত। এই সপ্তাহের মধ্যে ৩ কোটি ২৫ লাখ ডোজ করোনার টিকা দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
এর মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ পাবে ২ লাখ মানুষ। অন্যদের টিকার বুস্টার ও প্রথম ডোজ দেয়া হবে।
টিকা ব্যবস্থাপনা টাস্কফোর্সের সদস্য সচিব ডা. শামসুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিবস উপলক্ষে সকাল থেকে একযোগে টিকার বিশেষ ক্যাম্পেইন শুরু হয়ে গেছে। এই মাসের শেষ দিন পর্যন্ত চলবে। এই কার্যক্রমে সব স্থায়ী টিকাদানকেন্দ্র থেকে প্রথম, দ্বিতীয় ও বুস্টার ডোজ দেয়া চলমান থাকবে। ১২ বছরের বেশি যেসব ব্যক্তির প্রথম ডোজ টিকা নেয়ার পর ২৮ দিন পার হয়েছে, তাদের সবাইকে দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেয়া হবে।
যেসব ব্যক্ৰি প্রথম ডোজে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিয়েছেন, তাদের ২ মাস ব্যবধানে দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেয়া হবে।
এ ছাড়া গত ২৬ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি ১ দিনে ১ কোটি প্রথম ডোজের ক্যাম্পেইনে যারা টিকা নিয়েছেন। তাদের আগামী ২৮ থেকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত টিকার দ্বিতীয় ডোজ টিকা নির্ধারিত ক্যাম্পেইন কেন্দ্র থেকে নিতে হবে।
তিনি বলেন, প্রয়োজনে ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য কেন্দ্রবুথের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হবে। দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণের ৪ মাস পর বুস্টার ডোজ দেয়া হবে। টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার পর ৪ মাস চলে গেছে তারা এসএমএস না পেলেও কেন্দ্রে এলে টিকা নিতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে সম্মুখসারির যোদ্ধা, বয়োজ্যেষ্ঠ এবং নারীদের প্রাধান্য দিতে হবে।
ইতিপূর্বে বুস্টার ডোজ দেয়ার ক্ষেত্রে বয়সসীমা ৪০ বছরের পরিবর্তে ১৮ বছর করা হয়েছে। অ্যাস্ট্রাজেনেকা, মডার্না ও ফাইজার কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রাপ্যতা অনুযায়ী বুস্টার ডোজ হিসেবে দিতে হবে।
১২ বছরের বেশি বয়সী কিন্তু এখনও প্রথম ডোজের টিকা গ্রহণ করেনি, তাদের এই ক্যাম্পেইনে টিকা গ্রহণের জন্য আহ্বান জানান তিনি।
একই সঙ্গে স্থানীয়ভাবে প্রচার-প্রচারণার উদ্যোগ নিয়ে কর্মসূচিকে সফল করতে হবে। স্থানীয় প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতারা ও বিভিন্ন অংশীজনের সহযোগিতায় আসন্ন কোভিড-১৯ টিকা ক্যাম্পেইনকে সাফল্যে কাজ করতে হবে।
দেশে গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা দেয়া শুরু হয়। দুই মাস পর ৮ এপ্রিল শুরু হয় দ্বিতীয় ডোজের কার্যক্রম। গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর তৃতীয় ডোজ বা বুস্টার ডোজের কার্যক্রম শুরু করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে এক দিনে ৭৬ লাখের বেশি টিকা দেয়া হয়েছিল। পরে বিশেষ গণটিকাদান চলে। শুধু ২৬ ফেব্রুয়ারিই দেশে ১ কোটি ২০ লাখ মানুষকে টিকা দেয়া হয়।