চট্টগ্রামের আলোচিত মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় তার দুই সন্তানকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি পেয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালত বুধবার দুপুরে এ বিষয়ে নির্দেশ দেন।
কোর্ট পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আবছার উদ্দিন রুবেল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শিশু আইন ২০১৩ এর ৫৩ ও ৫৪ ধারা কঠোরভাবে মেনে দুই শিশুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পিবিআইকে অনুমতি দিয়েছে আদালত।’
আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই আবেদন করলে মিতুর দুই সন্তান আক্তার মাহমুদ মাহী ও আক্তার তাবাসমুকে ১৫ দিনের মধ্যে সংস্থাটির চট্টগ্রাম কার্যালয়ে হাজির করার নির্দেশ দেয় আদালত।
কিন্তু দুই শিশুর হেফাজতকারী এডভোকেট হাবিবুর রহমান লাড্ডু এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে একই আদালতে রিভিশন আবেদন করেন। দুই শিশু বর্তমানে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত এবং তাদের বারবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়বে বলে তিনি দাবি করেন।
শিশু আইন মেনে তাদের মাগুরা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতির কক্ষে এবং সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তার উপস্থিতিতে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন জানান তিনি।
আদালত বুধবার এ রিভিশনটি খারিজ করে দুই শিশুকে শিশু আইন কঠোরভাবে মেনে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয়।
এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি পিবিআই মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেনের করা মামলায় আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। এতে ওই মামলায় গ্রেপ্তার আসামি বাবুলসহ অন্যদের অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়। ওই মামলায় পাওয়া সব তথ্য উপাত্ত বাবুল আকতারের করা মামলায় একীভূত করতেও আবেদন জানানো হয়।
২০১৬ সালের ৫ জুন ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে গিয়ে নগরের জিইসি মোড় এলাকায় খুন হন তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু।
এ ঘটনায় জঙ্গিরা জড়িত দাবি করে বাবুল আক্তার মামলা করেন পাঁচলাইশ থানায়। তদন্ত শেষে পিবিআই গত বছরের ১২ মে এ মামলার চুড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।
হত্যায় ‘বাবুল জড়িত’ বলে সন্দেহ হলে একই দিন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন আরেকটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় বাবুলসহ আটজনকে আসামি করা হয়। পুলিশ এ মামলায় বাবুলকে গ্রেপ্তার দেখায়।
বাবুলের করা মামলায় পিবিআইয়ের চুড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে গত বছরের ১৪ অক্টোবর আদালতে নারাজি দেন আইনজীবী। আদালত ৩ নভেম্বর চুড়ান্ত প্রতিবেদনটি গ্রহণ না করে পিবিআইকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেয়। পরে আদালত বাবুলকে নিজের করা মামলাতেই গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেয়।