চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্সি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে অর্থ লেনদেনসংক্রান্ত অডিও ক্লিপ ফাঁসের ঘটনায় অভিযুক্ত উপাচার্যের ব্যক্তিগত সহকারী খালেদ মিসবাহুল মোকর রবিন ও কর্মচারী আহমদ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বুধবার সন্ধ্যায় নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান।
মনিরুল হাসান বলেন, ‘তদন্ত চলমান আছে। নিয়ম অনুযায়ী রবিন ও আহমেদ হোসেনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। বাকি কাজগুলো তদন্তাধীন হবে। এগুলো ফাইনাল কিছু না, স্টেপ বাই স্টেপ কাজ করা।’
এতদিন পর কেন সাময়িক বরখাস্ত এই জবাবে রেজিস্ট্রার বলেন, ‘একটা প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হয়েছে, সঙ্গে সঙ্গে সবকিছু হয় না। একটা অর্ডার করতে হলে আমাদের প্রসিডিউর মেইন্টেইন করতে হয়।’
শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠলে গত ৫ মার্চ নগরীর চারুকলা ইনস্টিটিউটে চবির ৫৩৭তম সিন্ডিকেট সভায় ফার্সি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়।
একই সঙ্গে নিয়োগে অনিয়মে জড়িতদের শনাক্তে চার সদস্যের উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি করে সিন্ডিকেট।
যা ছিল ফোনালাপে
ফোনালাপের তিনটি ক্লিপ নিউজবাংলার হাতে এসেছে। এতে একজন আবেদনকারীর কাছ থেকে ১৬ লাখ টাকা দাবি করা হয়। বলা হয়, তৃতীয় শ্রেণির একটা চাকরির জন্য এখন ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা লাগে। মালি, প্রহরীর মতো চতুর্থ শ্রেণির চাকরির জন্য লাগে ৮ লাখ টাকা।
ফাঁস হওয়া ফোনালাপে উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের ‘ম্যানেজ’ করতেই অর্থের প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করা হয়।
চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে যারা কথা বলেছেন, তাদের মধ্যে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য শিরীণ আখতারের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) মোকাররম হোসেন রবীন, অন্যজন বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টস শাখার কর্মচারী আহমদ হোসেন এবং ফার্সি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী জসীম উদ্দিন বলে তথ্য মিলেছে।
তিনজনের ফোনালাপেই এই লেনদেনে উপাচার্য সম্পৃক্ত থাকবেন বলে দাবি করা হয়েছে। বলা হয়েছে, উপাচার্য রাজি না থাকলে মন্ত্রী বা আরও বড় কেউ চাকরি দিতে পারবেন না।
তবে রবীন ও আহমদ হোসেন দাবি করেছেন, তারা কারও সঙ্গে এসব কথা বলেননি। এগুলো তাদের বিপদে ফেলার জন্য বানানো হয়েছে।