দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপদ্ধতি ঠিক করতে সুশীল সমাজের ৪০ জন নাগরিকের সঙ্গে বসতে চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচন নিয়ে মূলত তাদের পরামর্শ নিতেই দ্বিতীয় দফার এই সংলাপের আয়োজন করছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। আগামী ২২ মার্চ সংলাপের তারিখ নির্ধারণ করে সুশীল সমাজের এসব প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
কমিশনের আমন্ত্রণ পাওয়া সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের মধ্যে রয়েছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা, সাবেক আমলা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, এনজিওকর্মী, আইনজীবী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নেতা, লেখক ও গবেষক।
নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ মঙ্গলবার নিউজবাংলাকে এসব বিষয় নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয় দফার এই বৈঠক মঙ্গলবার বেলা ১১টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে শুরু হবে। বৈঠকে বিশিষ্টজনদের পরামর্শ নেয়া হবে। সামনে এ রকম আরও সংলাপ হবে।’
রমজান মাসে এই সংলাপ প্রক্রিয়া চালু থাকবে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘বোধহয় থাকবে; এ রকম চিন্তাভাবনা আছে।’
কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বের বর্তমান নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নেয়ার পর এখন পর্যন্ত কমিশনের আনুষ্ঠানিক কোনো সভা হয়নি। কমিশন সভা না করেই নবগঠিত ইসির এমন সংলাপের সিদ্ধান্ত নিয়ে ইতোমধ্যে নানা প্রশ্ন উঠছে। তবে নির্বাচন কমিশনাররা কমিশন সভা না করলেও নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে আমন্ত্রিতদের কয়েকজনের সঙ্গে নিউজবাংলার কথা হয়েছে।
সংলাপে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রুবায়েত ফেরদৌস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখনও চিন্তাভাবনা করিনি।’
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘আমি তো এমন কিছু জানি না। দাওয়াত পাইনি এখনও। চিঠি আমার হাতে না আসা পর্যন্ত কোনো কমেন্ট করতে চাই না।’
‘সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘ওই সময় আমি ঢাকায় থাকব না।’ ঢাকায় থাকলে অংশ নিতেন কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এটা আরও ছোট পরিসরে কথা বলা উচিত ছিল। একসঙ্গে ৪০ জনকে দাওয়াত দেয়া তো গণব্যবস্থা। এখানে কোনো সংলাপ হয় না।’ স্বল্প পরিসরে আরও গভীরে গিয়ে সংলাপের পক্ষে মত দেন তিনি।
যাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, বেগম রাশেদা কে চৌধুরী, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ, সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের
অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, বাংলাদেশ হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ওয়ালি উর রহমান।
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনালসের বঙ্গবন্ধু চেয়ার ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম এম আকাশ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, এম হাফিজ উদ্দিন খান, খুশী কবির, আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী, ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম ও বেগম রোকেয়া এ রহমান; সেন্টার ফর আরবান স্টাডিজের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, বাংলাদেশ ইনডিজিনিয়াস পিপলস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং।
সাবেক রাষ্ট্রদূত এ এফ এম গোলাম হোসেন, ঢাকা স্কুল অফ ইকোনমিকসের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, সাবেক সচিব আব্দুল লতিফ মণ্ডল, সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাস উদ্দিন, গভর্ন্যান্স অ্যান্ড রাইট সেন্টারের ড. জহুরুল আলম, স্ট্র্যাটেজি অ্যানালিস্ট অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল হাফিজ, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মহিউদ্দীন আহমদ, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. আমেনা মহসিন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কাবেরী গায়েন, রুবায়েত ফেরদৌস, ড. এস এম শামীম রেজা ও ড. শেখ হাফিজুর রহমান; সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক রওনক জাহান ও ড. মোস্তাফিজুর রহমান, সাবেক সচিব আবু আলম মো. শহীদ, লিডারশিপ স্টাডিজ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. সিনহা এম এ সাঈদ এবং লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমেদ।