২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া আসামি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীর ‘মৃত্যুর’ সত্যতা জানতে তদন্ত শুরু করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ বা ডিবি। এ জন্য ‘মাহমুদুর রহমান’ নামে দাফন করা ব্যক্তির মরদেহ কবর থেকে তুলে ডিএনএ পরীক্ষা করতে চায় সংস্থাটি।
বুধবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান ও ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।
ডিবির প্রধান বলেন, ’পত্রিকায় এ বিষয়ে খবর প্রকাশের পর ডিবি বিষয়টি তদন্ত শুরু করেছে। মরদেহ ডিজেন্টার (লাশ উত্তোলন করে নমুনা সংগ্রহ করা) ও ডিএনএ টেস্ট করে তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ক্রসম্যাচ করলেই সত্য বেরিয়ে আসবে। প্রয়োজন পড়লে আমরা তাই করব।
‘পত্রিকায় এটাও দেখলাম যে তার মেয়েও চান ডিএনএ টেস্ট হোক। আমরা কাজ করছি, আশা করি কয়েক দিনের মধ্যেই এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পারব।’
দৈনিক মানবজমিনের অনুসন্ধানে দাবি করা হয়েছে, হারিছ চৌধুরী ছদ্মনাম-পরিচয়ে ১৪ বছর গোয়েন্দাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে আত্মগোপনে ছিলেন। বেশির ভাগ সময়ই তিনি কাটিয়েছেন ঢাকার পান্থপথের একটি বাসায়। করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে তিনি মারা যান।
পত্রিকাটির দাবি, হারিছ চৌধুরী আত্মগোপনের সময় ‘মাহমুদুর রহমান’ নাম ব্যবহার করেন। এ নামে তিনি জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্টও নিয়েছিলেন। এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে দেয়া তার মৃত্যুসনদেও ছিল ‘মাহমুদুর রহমান’ নাম।
‘মাহমুদুর রহমান’ মারা যাওয়ার পর গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর সাভারের জালালাবাদ এলাকার জামিয়া খাতামুন্নাবিয়্যীন মাদ্রাসার কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
এই মৃত্যুসনদ যাচাই করতে গিয়ে বিস্ময়কর নতুন তথ্য পায় নিউজবাংলা। দেখা গেছে, এই সনদে ব্যবহার করা ঠিকানায় সত্যিই একজন মাহমুদুর রহমান আছেন। তবে সেই মাহমুদুর রহমানের দাবি, তার ‘নাম ব্যবহার করা’ হারিছ চৌধুরীকে কোনোভাবেই তিনি চেনেন না।
মৃত্যুসনদে দেখা যায়, মাহমুদুর রহমানের ঠিকানা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে উত্তরার ৪ নম্বর সেক্টরের ১৩ নম্বর রোডের ২৪ নম্বর বাসা।