বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন নিয়ে আজই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে মতামত দেবে আইন মন্ত্রণালয়।
সচিবালয়ে বুধবার সাংবাদিকদের প্রশ্নে এ কথা জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
মন্ত্রী বলেন, ‘উনারা (খালেদা জিয়া) একটা দরখাস্ত করেছেন সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানোর। সেটা আমার কাছে এসেছে, আমার মতামত পাঠিয়ে দেব, সেই মতামত আপনারা জানবেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে। আজকেই চলে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় এটা আর প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাবে না। কারণ আগেরবার যেটা দিয়েছিলাম সেটা প্রধানমন্ত্রীর কাছে যায়নি। এটাও প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাবে না। চিঠি এখনো পড়িনি। এখন পড়ব। আজকেই পাঠিয়ে দেব।’
মন্ত্রী বলেন, ‘জামিন দেয় আদালত। দুই-আড়াই বছর আগে উনার পারিবারিকভাবে একটা দরখাস্ত করা হয়, সেটায় কোনো আইনের উল্লেখ ছিল না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহানুভবতার কারণে এটা আইনের মাধ্যমে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী তার সাজা স্থগিত রেখে মুক্তি দেয়া হয়।’
আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের কিছু সময় আগেই ওই আবেদন আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর কথা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
সচিবালয়ে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত এক সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন , ‘উনাদের (খালেদা জিয়ার পরিবারের) একটা পত্র আমরা পেয়েছি। এটা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে আমরা পাঠিয়েছি।
‘তাদের (আইন মন্ত্রণালয়) পরীক্ষা-নিরীক্ষান্তে যে পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রয়োজন হবে, সেখানে পাঠাব আমরা।’
এর আগে এদিনই বিএনপি চেয়ারপারসনের পক্ষ থেকে পঞ্চমবারের মতো তার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করার তথ্য জানা যায়। এবারও তার বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি চাওয়া হয়েছে।
খালেদা জিয়ার বোন সেলিমা ইসলাম নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘আবেদন করা হয়েছে। আমরা আমাদের চেষ্টা করছি।’
এরই মধ্যে ৬ মাস করে চারবার খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। আগামী ২৪ মার্চ চলতি মেয়াদ শেষ হবে।
প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী আদেশে দুর্নীতির দুই মামলার দণ্ড স্থগিত হওয়ার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ বিএনপি চেয়ারপারসন ৬ মাসের জন্য মুক্তি পান।
সে সময় দুটি শর্তের কথা বলা হয় সরকারের পক্ষ থেকে। এগুলো হলো খালেদাকে বাসায় চিকিৎসা নিতে হবে এবং তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না।
গত বছরের এপ্রিলে খালেদা জিয়া করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর প্রথম শর্তটি আর কার্যকর থাকেনি। তিনি চারবার এভারকেয়ারে যান এবং তিনবার সেখানে ভর্তি হন, তবে স্বজনদের আবেদন ও তার দলের নানা কর্মসূচির পরও সরকার খালেদাকে বিদেশে নেয়ার অনুমতি দেয়নি।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৫ বছরের কারাদণ্ড নিয়ে কারাগারে যাওয়া খালেদা জিয়ার দণ্ড পরে আপিলে দ্বিগুণ হয়। এরপর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় তার ৭ বছরের কারাদণ্ড হয়।
উচ্চ আদালতে জামিন করাতে ব্যর্থ হওয়ার পর খালেদা জিয়ার স্বজনরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন নিয়ে যান।