বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

স্বাধীনতা পদক পাওয়া সিরাজ উদ্দীন কে

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ১৬ মার্চ, ২০২২ ০৯:২৪

স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত হওয়ায় অনুভূতি প্রকাশে সিরাজ উদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে যে কত বড় সম্মান দেখালেন, তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। আমি অভিভূত। প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই।’ 

বহু ঐতিহাসিক গ্রন্থের লেখক অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব সিরাজ উদ্দীন আহমেদকে স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২২ পদক দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার।

মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক বিজ্ঞপ্তিতে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের তালিকা প্রকাশ করা হয়। এ বছর ১০ জন ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানকে এ পুরস্কার দেয়া হয়। এর মধ্যে ‘স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ’ ক্ষেত্রে সিরাজ উদ্দীন আহমেদ পেয়েছেন এ পদক।

তবে সিরাজ উদ্দীন আহমেদ লোকমুখে প্রচারিত নাম না। তাকে বিস্তরভাবে জানা মানুষের সংখ্যাও খুব বেশি নয়। তাই অনেকের মনেই প্রশ্ন কে এই সিরাজ উদ্দিন আহমেদ?

সিরাজ উদ্দীন আহমেদ বরিশালের ইতিহাস তৃতীয় খণ্ড, শেরে বাংলা একে ফজলুল হক, বাংলাদেশ গড়লেন যারা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জননেত্রী শেখ হাসিনা, মাদারীপুর জেলার ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধে বরগুনা জেলা, ভারত বিভাগ ঐতিহাসিক ভুলসহ অসংখ্য বইয়ের রচয়িতা।

ইতিহাসবিদ সিরাজ উদ্দিন আহমেদ ১৯৪১ সালে ১৪ অক্টোবর বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদ পাশা ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করেন। বাবার নাম জাহান উদ্দীন ফকির, মায়ের নাম লাইলি বেগম। পাঁচ বোন ও চার ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়।

নিজ গ্রামে প্রাথমিক শিক্ষা ও শায়েস্তাবাদ হাই স্কুল থেকে ১৯৫৬ সালে মেট্রিক পাস করেন। ১৯৫৮ সালে বরিশাল বিএম কলেজ থেকে আইএ ও ১৯৬০ সালে বিএ পাস করেন। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬২ সালে অর্থনীতিতে এমএ এবং ১৯৬৮ সালে এলএলবি পাস করেন।

একাধারে তিনি ‘জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতিমালা’র খসড়ার প্রণেতা, বাবুগঞ্জ ডিগ্রী কলেজের প্রতিষ্ঠতা। এছাড়া তিনি দৈনিক বাংলাদেশ সময় পত্রিকার উপদেষ্টা, জাতীয় শিক্ষা নীতির প্রণয়ন কমিটির সদস্য, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নর, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সদস্য ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট সদস্য, বাংলাদেশ বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান এবং পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সদস্য ছিলেন।

অবদান রেখেছেন বরিশাল বিভাগের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে। দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করেছেন বরিশাল বিভাগ উন্নয়ন সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে। এছাড়া বরগুনা জেলার উন্নয়নে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে, জেলার জনগণ বরগুনার টাউন হলের নাম করণ করেছেন সিরাজ উদ্দীন মিলনায়তন।

সিরাজ উদ্দীন আহমেদ বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসনের দীর্ঘদিন কর্মরত ছিলেন। তিনি বরগুনা মহকুমার এসডিও, বৃহত্তর খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও ভারপ্রাপ্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

খুলনাতে তিনি ১৯৭৭-১৯৮০ সালের শেষ ভাগ পর্যন্ত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে ছিলেন। এই সময় তিনি খুলনায় অনেকগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। ‘জেলা পরিষদ হতে খুলনা জেলা’ নামক গ্রন্থ প্রকাশেও তার ভূমিকা রয়েছে।

এছাড়া জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের সময় তিনি বরগুনা মহাকুমার প্রশাসক ছিলেন। সেই সময়ে সরকারের অধীনে চাকরি না করার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন।

এছাড়াও তিনি অর্থনীতি ও প্রশাসনে অস্ট্রেলিয়া, কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়া থেকে প্রশিক্ষন নিয়েছেন। জাতিসংঘ ও সার্ক সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বও করেছেন। ২০০৩ সালে ১৪ অক্টোবর তিনি চাকরিজীবন থেকে অবসর নেন।

সিরাজ উদ্দীন আহমেদের স্ত্রী মরহুম অধ্যাপিকা বেগম ফিরোজ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ছিলেন। ইতিহাসবিদ সিরাজ উদ্দীন আহমেদ বর্তমানে ছেলেদের সঙ্গে ঢাকায় বসবাস করেন।

স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত হওয়ায় অনুভূতি প্রকাশে তিনি বলেন, ‘এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে যে কত বড় সম্মান দেখালেন, তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। আমি অভিভূত। প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই।’

এ বিভাগের আরো খবর