চলমান ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে দেশের তৈরি পোশাক রপ্তানির ওপর প্রভাব পড়বে এবং পোশাক রপ্তানি কমে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন পোশাক খাতের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান।
রাজধানীর হোটেল আমারিতে মঙ্গলবার গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ফারুক হাসান বলেন, ‘যেকোনো যুদ্ধেরই একটা প্রভাব রপ্তানি বাজারের ওপর পড়ে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবও পোশাক রপ্তানির ওপর পড়বে। এই যুদ্ধের কারণে তেলের দাম বেড়ে গেছে, শিপিং কস্ট বেড়ে গেছে। কনটেইনারের স্বল্পতা দেখা দিয়েছে।
‘এই বছর রাশিয়ায় আমাদের ১ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করার লক্ষ্যমাত্রা ছিল। সেটা আর পূরণ হবে না। তবে আমরা অন্যান্য বাজারে সেটা পুষিয়ে নেয়ার লক্ষ্য নিয়েছি। এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। অনেক রপ্তানিকারকের পেমেন্ট পাওয়া নিয়ে সমস্যা আছে, সেগুলো আমরা সমাধানে কাজ করছি।’
ফারুক হাসান বলেন, ‘বিজিএমইএ অ্যাপারেল ডিপ্লোমেসি নিয়ে কাজ করছে। এটার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও ইউরোপের বেশ কটি দেশ সফর করেছি। সর্বশেষ এ মাসের ৮-১১ তারিখ বিজিএমইএ যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছে। এসবের পরে আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশন (এএফএফএ) আয়োজিত এক্সিকিউটিভ সামিটে অংশগ্রহণ করেছি। সামিটে আমরা আমাদের পোশাক খাতে চলমান অগ্রগতিগুলো তুলে ধরেছি। এএফএফএ’র সঙ্গে আমরা সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছি।’
কারখানায় কাজ করছেন পোশাক শ্রমিকরা। ছবি: ফাইল ছবি
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘করোনা মহামারি মোকাবিলা করে পোশাক খাত ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, কিন্তু এই সময়টি আমাদের জন্য অনেক চ্যালেঞ্জিং। ক্রমবর্ধমান উৎপাদন ও সাপ্লাই চেইনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন উদ্যোক্তারা। এই অবস্থায় ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে সরকারের কাছে কিছু প্রত্যাশা রয়েছে বিজিএমইএর। সরকারের প্রয়োজনীয় আর্থিক ও অন্যান্য নীতিসহায়তার ধারাবাহিকতা পোশাক খাতকে এগিয়ে নিতে পারে।
‘তাই কর ও রাজস্বসংক্রান্ত নীতিগুলো অন্তত আরও পাঁচ বছরের জন্য অপরিবর্তিত রাখতে সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি। এ ছাড়া এইচএস কোড সংক্রান্ত জটিলতায় রপ্তানিতে সমস্যা হচ্ছে। তাই বন্ড লাইসেন্সে এইচএস কোডের সঙ্গে নতুন কাঁচামাল ও অন্য উপকরণগুলোর অন্তর্ভুক্তি সহজ করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।’
ফারুক হাসান আরও বলেন, “বিজিএমইএ চায় বাংলাদেশ ও বাংলা ভাষা বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ুক। এ জন্য বর্তমানে পোশাক পণ্যের লেভেলে ইংরেজিতে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’-এর পাশাপাশি বাংলা বর্ণমালায় ‘বাংলাদেশের তৈরি’ শব্দ যোগ করার উদ্যোগ নিয়েছে। এ বিষয়ে প্রস্তুতিমূলক কাজ ইতোমধ্যেই শেষ করেছে বিজিএমইএ।”