বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আদালত চত্বর থেকে তুলে নিয়ে নারীকে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণ’

  •    
  • ১৫ মার্চ, ২০২২ ২০:৩১

ওই নারী জানান, তাকে হত্যাচেষ্টার মামলার বিষয়ে আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলতে এসে এ ঘটনার শিকার হয়েছেন। আসামি ফিরোজ আহমদ ও মো. শরীফ বিভিন্ন সময় তাকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। তিনি তাদের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ধর্ষণ ও হত্যার হুমকি দেয়া হতো নিয়মিত।

কক্সবাজার আদালত এলাকা থেকে তুলে নিয়ে এক নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করেছে কক্সবাজার সদর মডেল থানা পুলিশ।

মঙ্গলবার বিকেলে তার অভিযোগ মামলা হিসেবে নেয়া হয়।

মামলার আসামিরা হলেন কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ফিরোজ আহমদ, রাসেল উদ্দিন, নুরুল ইসলাম ও মো. শরীফ।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনীর উল গীয়াস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ওই তরুণীর লিখিত অভিযোগ মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। শারীরিক পরীক্ষার জন্য তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে।’

কক্সবাজারের আদালত পাড়া থেকে সোমবার দুপুর ২টার দিকে তাকে তুলে নিয়ে বাহারছড়ায় এক বাড়িতে আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয় বলে জানিয়েছেন ওই নারী।

তিনি জানান, তাকে হত্যাচেষ্টার মামলার বিষয়ে আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলতে এসে এ ঘটনার শিকার হয়েছেন। পরে তিনি কক্সবাজার সদর মডেল থানায় ৪ জনের নাম উল্লেখসহ ৯ জনের নামে অভিযোগ দেন।

তবে ওই নারী কোনো অভিযোগ দেননি বলে মঙ্গলবার বেলা ১১ টার দিকে নিউজবাংলাকে জানিয়েছিলেন কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) সেলিম উদ্দিন।

তিনি জানান, সোমবার বিকেলে শহরের শহীদ স্মরণী সড়কে ওই নারী এক ব্যক্তির সঙ্গে সঙ্গে ঝগড়া ও মারামারি করছিলেন। এ সময় এক পথচারী ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে বিষয়টি জানান। পুলিশ গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং ওই নারীকে থানায় অভিযোগ দেয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু তিনি কোনো অভিযোগ এখনও দেননি।

ঘটনাস্থলে যাওয়া কর্মকর্তার বরাতে ওসি তদন্ত বলেন, ‘তাদের মধ্যে আগের বিরোধের জেরে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। তার পরও অভিযোগ যেভাবে জমা পড়বে সেভাবে আমরা তদন্ত করে দেখব।’

তবে মঙ্গলবার বিকেলে ওসি তদন্ত সেলিম উদ্দিন নিউজবাংলাকে জানান, ওই নারীকে দুপুরে থানায় ডেকে এনে অভিযোগ দিতে বলা হয়। অভিযোগ হাতে পাওয়ার পর বিকেলে সেটি মামলা হিসেবে নেয়া হয়।

এজাহারে বলা হয়েছে, আসামি ফিরোজ আহমদ ও মো. শরীফ বিভিন্ন সময় তাকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। তিনি তাদের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ধর্ষণ ও হত্যার হুমকি দেয়া হতো নিয়মিত।

সর্বশেষ গত সোমবার বেলা ২ টার দিকে কক্সবাজার আদলত পাড়ায় আইনজীবী একরামুল হুদার চেম্বার থেকে বের হলে আসামিরা তাকে ঘিরে ফেলে। এক পর্যায়ে ফিরোজ ও শরীফ তাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। বাধা দিলে অজ্ঞাতপরিচয়ে আরও কয়েকজন এসে তার হাত-পা ও মুখ চেপে ধরে একটি গাড়িতে তুলে নেয়।

এরপর ফিরোজ গলা থেকে ১২ আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন এবং সঙ্গে থাকা টাকা নিয়ে ফেলে। এ সময় পথচারীরা তাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা গাড়ি নিয়ে কক্সবাজার ল্যাবরেটরি স্কুল সংলগ্ন (বাহারছড়া) ফিরোজের আত্মীয় ফজল কাদেরের সেমিপাকা টিনশেড বাসায় নিয়ে একটি রুমে আটকে রাখে।

তারপর ফিরোজ ও শরীফ তাকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে হত্যার হমকি এবং ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করে। পরে একইভাবে নুরুল ইসলামও তাকে ধর্ষণ করে।

কিছুক্ষণ পর ২ নম্বর অভিযুক্ত রাসেল উদ্দিন রুমে এসে নিজেকে পুলিশ অফিসার পরিচয় দিয়ে বিষয়টি কাউকে জানালে এবং বেশি বাড়াবাড়ি করলে মানবপাচার মামলায় চালান করে দেয়ার হুমকি দেয়।

একপর্যায়ে রাসেলও তাকে ধর্ষণ করে। এরপর রাসেল ও শরীফ তাকে টানা হিচড়ে গেটের বাইরে এনে ধাক্কা দিয়ে গেট বন্ধ করে দেয়। রাস্তায় থাকা এক ব্যক্তি তাৎক্ষণিক জরুরি সেবা ‘৯৯৯’ এ কল দিলে আসামিরা পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে।

মঙ্গলবার ওই নারী নিউজবাংলার কাছে দাবি করেন, ২০২১ সালে ২৩ মে বাড়িতে ঢুকে তার নাক, ঠোঠ কেটে নিয়ে শরীরের নানা স্থানে তাকে ছুরিকাঘাত করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় দীর্ঘ কয়েক মাস চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও ঢাকা পিজি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর সম্প্রতি বাড়ি ফিরেন তিনি। এ ঘটনায় মামলা হলে ‘চিহ্নিত ডাকাত’ মোরশেদ আত্মসমর্পণ করে।

১৫ মার্চ সেই মামলার শুনানির তারিখ হয়েছে। তার জামিনের বিরোধিতা ও ন্যায় বিচার পেতে করণীয় নির্ধারণে আইনজীবীর সঙ্গে আগাম পরামর্শ করতে আদালত পাড়ায় আসেন তিনি। সোমবারের ঘটনা সংগঠনকারীরা মোরশেদসহ অভিযুক্তদের নিয়ন্ত্রক। তার জামিনের যেন বিরোধিতা না করতে পারে সেজন্যই এ ঘটনা বলেও ধারণা তার।

এ বিভাগের আরো খবর