বরিশাল নগরীর রুপাতলী মিনিবাস টার্মিনাল দখল নিয়ে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুখ শামীম ও সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর অনুসারী শ্রমিকরা মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন। সংঘর্ষের শঙ্কায় ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, টার্মিনাল এলাকায় মঙ্গলবার সকাল থেকে মেয়র সাদিকের অনুসারী শ্রমিকনেতা পরিমল চন্দ্র দাস ও শাহরিয়ার বাবু এবং সদরের এমপি ও প্রতিমন্ত্রী জাহিদের অনুসারী সুলতান মাহামুদ দলবল নিয়ে মুখোমুখি অবস্থান নেয়ায় উত্তেজনা দেখা দেয়।
দুপুর পর্যন্ত টার্মিনালে উভয় গ্রুপের দফায় দফায় মহড়ায় নগরীজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ গিয়ে সংঘাতময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বাসশ্রমিক মোফাজ্জেল হাওলাদার জানান, নগরীর রুপাতলী বাস, মিনিবাস, কোচ, মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের কমিটি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে উত্তেজনা চলছিল। গত বছরের ১৭ মে প্রতিমন্ত্রী জাহিদের সমর্থক সুলতান মাহামুদকে সভাপতি ও শহিদুল ইসলাম টিটুকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা হয়।
২৩ জুন মেয়র সাদিকের অনুসারী পরিমল চন্দ্র দাসকে সভাপতি ও শাহরিয়ার বাবুকে সাধারণ সম্পাদক করে শ্রমিক ইউনিয়নের পাল্টা কমিটি দেয়া হয়।
এর পর থেকেই রুপাতলী মিনিবাস টার্মিনাল দখল নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের দুই নেতার কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা চলছে বলে জানান মোফাজ্জেলসহ শ্রমিকরা।
মঙ্গলবার সকালে টার্মিনাল এলাকায় সভা করেছেন মেয়র অনুসারী শ্রমিক নেতারা। এই পক্ষের সভাপতি পরিমল বলেন, ‘আমরা শ্রমিকদের নিয়ে সভা করেছি। একটি পক্ষ দীর্ঘদিন ধরে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় চাঁদাবাজি ও শ্রমিকদের নির্যাতন করত। এ থেকে শ্রমিকদের রেহাই দিতে সিটি মেয়র নতুন কমিটি করে দেন।
‘কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় আমাকে সভাপতি করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। সেই কমিটি বাসস্ট্যান্ডে সভা করেছে। এখানে কারও কোনো গ্রুপ নাই।’
প্রতিমন্ত্রীর অনুসারী কমিটির সভাপতি সুলতান মাহামুদ মেয়রের করা কমিটি অবৈধ বলে দাবি করেন।
তিনি বলেন, ‘ওরা বাইরে থেকে নৌশ্রমিক ও সন্ত্রাসী এনে বাসস্ট্যান্ডে জড়ো করেছে, ওখানে কোনো শ্রমিক নেই। এমনকি যারা নেতা সেজেছেন তারা কখনই শ্রমিক ছিলেন না। আমার কমিটি বৈধ। একজন হুট তরে এসে তো শ্রমিকনেতা হতে পারবেন না। তাকে তো প্রথমে শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য হতে হবে।
‘মেয়র যে কমিটি করে দিয়েছেন তার কোনো বৈধতা নেই। দুই কমিটি নিয়ে জামাল নামের একজন শ্রমিক আদালতে মামলা করেছেন। ৩০ মার্চ ওই মামলার রায় ঘোষণা করা হবে।’
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক এম লোকমান হোসেন বলেন, ‘টার্মিনালে শ্রমিকদের সভা হয়েছে। দুই গ্রুপের সংঘর্ষের আশঙ্কায় সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এটি ব্যস্ততম সড়ক, যাত্রীদের নিরাপত্তায় পুলিশ নিয়োজিত আছে।’
দুপুরের পর পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানান তিনি।
ফোন রিসিভ না করায় এ বিষয়ে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুখ শামীম ও সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।