ম্যাপড ইন বাংলাদেশের (এমআইবি) ডিজিটাল ম্যাপে আরও ৯৩টি রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানার তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে ম্যাপড ইন বাংলাদেশে রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানার সংখ্যা হলো ৩ হাজার ৭২৩টি। সারা দেশের কারখানা শুমারির মাধ্যমে চলতি মাস নাগাদ এসব কারখানার তথ্য সংগ্রহ ও অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
পাঁচ বছর মেয়াদি প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ করছে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর এন্টারপ্রেনারশিপ ডেভেলপমেন্ট (সিইডি)।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত প্রকল্পটিতে লডেস ফাউন্ডেশন এবং নেদারল্যান্ডস সরকার আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে। প্রকল্পটি ২০২২ সালের মার্চে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
এতে কৌশলগত অংশীদার হিসেবে কাজ করছে পোশাক রপ্তানি খাতে শীর্ষ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) এবং বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ)। আর কৌশলগত সহায়তা দিচ্ছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর (ডিআইএফই)।
ম্যাপড ইন বাংলাদেশের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএর সদস্য কারখানা রয়েছে ২ হাজার ৭৫৪টি। তবে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ-এর সদস্যপদ ছাড়া বাংলাদেশে কতটি রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানা রয়েছে, এসব কারখানা কোন দেশে পোশাক রপ্তানি করছে, কারখানায় কী পণ্য তৈরি হচ্ছে এবং কারখানাগুলো কোন কোন ব্র্যান্ডের জন্য কাজ করছে তার কোনো সরকারি পরিসংখ্যান নেই।
এসব কারখানার মধ্যে যাদের উৎপাদনের ৮০ শতাংশ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়, তাদের সদস্যপদবিহীন কারখানা হিসেবে ম্যাপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জবাবদিহি বাড়াতে এ পর্যন্ত ৯৬৯টি সদস্যপদবিহীন কারখানার তথ্য তুলে ধরা হয়েছে এই ডিজিটাল মানচিত্রে।
বিশ্বের প্রথম এই আরএমজি ডিজিটাল ম্যাপে দেখা যায়, বাংলাদেশের রপ্তানিমুখী কারখানাগুলোতে মোট শ্রমিকের সংখ্যা ২৭ লাখ ৭৮ হাজার ৬৭৭ জন, যা উদ্যোক্তাদের দাবির চেয়ে কম।
পোশাক রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীদের দাবি তাদের প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিকের সংখ্যা ৪০ লাখ। এমআইবি তাদের কারখানার সংজ্ঞা অনুযায়ী রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানা নির্বাচনের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কিছু মানদণ্ড অনুসরণ করে থাকে। এ জন্যই শ্রমিকের সংখ্যায় এই তারতম্য হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
এমআইবির উদ্দেশ হলো, এ খাতের সব অংশীদারকে পোশাক কারখানাগুলোর সঠিক, বিশ্বাসযোগ্য এবং হালনাগাদ করা তথ্য প্রদান করা, যাতে আরও বেশি দক্ষতা, উৎপাদনশীলতা, জবাবদিহি এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা যায়।
এমআইবি বাংলাদেশের ৬৪টি জেলায় একটি রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানার শুমারি পরিচালনা করে। দেখা যায়, পোশাক কারখানাগুলোর বেশির ভাগই মাত্র চারটি জেলা ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামকে ঘিরে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুসারে, অন্য কারখানাগুলো সারা দেশে ১৭টি জেলায় ছড়িয়ে আছে।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর এন্টারপ্রেনারশিপ ডেভেলপমেন্টের (সিইডি) যুগ্ম পরিচালক ও ম্যাপড ইন বাংলাদেশ (এমআইবি) প্রকল্পের লিড অপারেশন্স অফিসার আফসানা চৌধুরী জানান, ‘এমআইবি তৈরি পোশাক খাত সম্পর্কিত সব প্রাথমিক প্রয়োজনীয় তথ্য যেমন- কারখানার নাম, ঠিকানা, শ্রমিকের সংখ্যা, কোন ব্র্যান্ডের পোশাক উৎপাদন করে ইত্যাদি এর ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে তুলে ধরেছে। এ ছাড়া এই ম্যাপের মাধ্যমে পণ্যকেন্দ্রিক পোশাক কারখানা যেমন- সেলাই, বোনা কিংবা সোয়েটার কারখানা খুঁজে নেয়া যাবে।’
এ তথ্যগুলো সরকারের নীতি প্রণয়ন এবং তৈরি পোশাক খাতের প্রস্তুতকারক ও কর্মীদের জড়িত বিভিন্ন উন্নয়ন প্রচেষ্টা সংগঠিত করতেও ব্যবহার করা যেতে পারে বলে মনে করেন তিনি।