খুলনার ডুমুরিয়ায় এক নারীকে হত্যার দায়ে তার সাবেক স্বামীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।
খুলনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মশিউর রহমান চৌধুরী মঙ্গলবার দুপুরে এ রায় ঘোষণা করেন। এ সময় আসামি লিটন মোল্লা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রায়ের বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন আদালতের এপিপি এম ইলিয়াস খান ও শাম্মি আক্তার।
আদালত সূত্রে জানা যায়, নিহত গৃহবধূ পারভীন বেগম লিটন মোল্লার দ্বিতীয় স্ত্রী। ২০১৬ সালে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় পারভীন আগের ঘরের আট বছরের মেয়েকে নিয়ে লিটনের ঘরে ওঠেন।
বিয়ের পর কিছুদিন ভালোভাবে চললেও পরে তাদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। এ নিয়ে প্রায়ই উভয়ের মধ্যে হাতাহাতির ঘটে। স্থানীয়ভাবে মিমাংসার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন লিটন মোল্লা।
হত্যার ঘটনার এক সপ্তাহ আগে স্বামীর সঙ্গে বিয়ে বিচ্ছেদ করেন পারভীন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে লিটন তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। ২০২১ সালের ১৫ জুন রাতে পারভীনকে হত্যা করতে বাড়ি থেকে শাবল ও ধারালো ছুরি নিয়ে বের হন লিটন।
রাত একটার দিকে ডুমুরিয়া মহিলা কলেজের পাশে পারভীনের ভাড়া বাড়িতে এসে লিটন তাকে ডাকতে থাকেন। তার ডাকে সাড়া দিয়ে পারভীন আবার ঘুমিয়ে পড়েন। একপর্যায়ে শাবল দিয়ে ঘরের দরজা ভেঙ্গে ফেলে লিটন। তাকে অস্বাভাবিক মনে হলে পালানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন পারভীন।
ধারালো ছুরি দিয়ে পারভীনের শরীরের বিভিন্নস্থানে কোপাতে থাকেন লিটন। মৃত্যু নিশ্চিত করতে পাশের রান্না ঘর থেকে কাঠ এনে মাথায় আঘাত করেন।
এ সময় শব্দে পারভীনের মেয়ের ঘুম ভাঙ্গলে তার চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে তাকে জখম অবস্থায় উদ্ধার করেন। পরে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় পরদিন নিহতের বড় মেয়ে লিটনকে আসামি করে ডুমুরিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন। একই বছরের ৩০ আগস্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তা লিটনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
১৮ জন ব্যক্তির স্বাক্ষ্যের ভিত্তিতে সাত কার্য দিবসে মামলার রায় দিয়েছে আদালত।