বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দেশি আলু যাচ্ছে বিদেশে, শঙ্কা বাড়ছে ক্রেতাদের

  •    
  • ১৫ মার্চ, ২০২২ ১২:৩৫

আলুর ক্রেতা মহিউদ্দীন আলম বলেন, ‘আলুর বাজারটা বুঝে আসে না। প্রতি বছর জেলাতে অনেক বেশি উৎপাদন হয়। এখন বাজারে অনেক আলু আছে, তবুও দাম বেশি। তাই প্রকারভেদে ১২ থেকে ২০ টাকা দরে আলু কিনতে হচ্ছে। এই দর অনেক বেশি হয়ে যায়। প্রতি কেজি আলু ৮ থেকে ১০ টাকার মধ্যে হলে অনেক খুশি হতাম।’

ঠাকুরগাঁও থেকে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, চীন ও কাতারে যাচ্ছে আলু। উৎপাদন বেশি হওয়ায় বাজারে আলুর সংকট নেই। এতে চাষিরা লাভবান হলেও কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে ক্রেতাদের।

এর আগে অসময়ে মাঘের বৃষ্টিতে লোকসান গুনেছেন চাষিরা। তাই উৎপাদন বেশি হলেও আগাম আলুর দাম পাননি তারা। তবে আলুর দাম আগে না পেলেও এখন মুখে হাসি ফুটেছে তাদের।

সদর উপজেলার ভূল্লীর আলুচাষি খয়বর ইসলাম বলেন, ‘আগাম আলু উৎপাদনে দুই লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। কিন্তু এখন আলুর দাম পাচ্ছি৷ প্রতি কেজি ১৪ টাকা দরে ক্ষেত থেকেই আলু বিক্রি হচ্ছে। এত পরিমাণে আলু উৎপাদন হয়েছে যে অন্য বছরের শেষ সময়ে আলু অনেক চড়া দামে কিনলেও এবারে কোল্ডস্টোরেজ জাত আলু প্রতি কেজি ২০ থেকে ২২ টাকায় কিনতে পারবে ক্রেতারা।’

সদরের মথুরাপুরের আলু ব্যবসায়ী মেসার্স নার্গিস ট্রেডার্সের পরিচালক নাছির উদ্দীন জানান, এ যাবৎ তিন কনটেইনারে ১৩ টন আলু বিদেশে রপ্তানি করেছেন তিনি। তার ১০০ টন আলু দেয়ার চুক্তি হয়েছে রংপুরের এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে।

তিনি বলেন, ‘ঠাকুরগাঁও থেকে অনেক ব্যবসায়ী রংপুর, যশোরসহ অনেক বড় ব্যবসায়ীকে আলু দিচ্ছে বিদেশে পাঠানোর জন্য। আমি তার মধ্যে একজন। ১৪ থেকে ১৫ টাকা দরে কেজিপ্রতি আলু কিনে ১৭ টাকা কেজি দরে আলু বিদেশে যাচ্ছে।’

আলু ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এ বছর আলু উৎপাদন হয়েছে অনেক বেশি। কোল্ড স্টোরেজে আলুর ৫৫ কেজির প্রতি বস্তার ভাড়া ২৬০ টাকা নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। আমরা দাবি জানিয়েছিলাম যেন ১৮০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু দাবি পূরণ হয়নি। কাঁচামালের ব্যবসায়ী বলেন, আমাদের দাবিগুলো অসহায়। তাই অনেক ব্যবসায়ী বিদেশি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে আবার লাভবানও হচ্ছে।’

এদিকে খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, জাতভেদে প্রতি কেজি আলু ১৮ থেকে ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

আলু ক্রেতা জিয়াউল হক রকি বলেন, ‘আগাম আলু বেশিদিন সংরক্ষণ করে রাখা যায় না। আগাম আলু বাজারে আসার সময় অনেক কম দামে কিনেছিলাম। কিন্তু এখন একটু বেশি দামে আলু কিনতে হচ্ছে। শোনা যাচ্ছে ঠাকুরগাঁও থেকে আলু বিদেশে যাচ্ছে। অনেক ভালো।

‘কিন্তু এত বেশি উৎপাদন হয়েও প্রতি বছর বাজারে আলু সংকট তৈরি হয়। আর আমাদের প্রতি কেজি আলু ৫০ টাকা পর্যন্ত কিনতে হয়। এ বছর যেন কোল্ড স্টোরেজ জাত আলুর বাজারে সংকট না তৈরি হয় সে জন্য ব্যবস্থা নেবে সরকার, এই আশা করি।’

খুচরা বাজারে আলুর ক্রেতা মহিউদ্দীন আলম বলেন, ‘আলুর বাজারব্যবস্থাটা কিছু বুঝে আসে না। প্রতি বছর জেলাতে অনেক বেশি উৎপাদন হয়। এখন বাজারে অনেক আলু সরবরাহ আছে, তবুও দামে বেশি। তাই প্রকারভেদে ১২ থেকে ২০ টাকা দরে আলু কিনতে হচ্ছে। এ দর অনেক বেশি হয়ে যায়। প্রতি কেজি আলু ৮ থেকে ১০ টাকার মধ্যে হলে অনেক খুশি হতাম।’

ক্রেতা মহনী রানী বলেন, ‘আলু আমাদের গরিব মানুষের প্রতিদিনের তরকারি। আমরা শুধু শুনছি জেলাতে অনেক বেশি আলু উৎপাদন হয়। চাহিদার তুলনায় যা অনেক বেশি। কিন্তু বাস্তবে আলু বেশি দামে কিনে খেতে হয় আমাদের। দু-এক দিন দাম কমলেও পরে আবার বেড়ে যায়।’

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবু হোসেন জানান, এ বছর লক্ষ্যমাত্রার বেশি আলু উৎপাদন হয়েছে ঠাকুরগাঁওয়ে। জেলাতে ২৭ হাজার ৬৭৭ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৭৯ হাজার ৭৯৮ মেট্রিক টন। এখন পর্যন্ত আলু তোলা হয়েছে ৫ লাখ ২৫ হাজার ৪৮২ মেট্রিক টন।

এ বিভাগের আরো খবর