বাসমালিকের বউ উদ্ধার করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আড়াই লাখ টাকা না পাওয়ায় এফ. আর হিমাচল পরিবহনের একটি এসি বাস আটকে রাখেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগকর্মী মেহেদী। এর আগে গত ৬ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এ বাসটি পুরান ঢাকার তাঁতীবাজার এলাকা থেকে এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আটকে রাখা হয়।
বাস আটকে রাখার ৯ দিন পর মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের মধ্যস্থতায় বাসটি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে মেহেদী বলেন, ‘বাসমালিক নোমানের বউ আমার এলাকার এক ছেলের সঙ্গে চলে গিয়েছিল। পরে তিনি আমাকে বলেছিলেন, তার বউকে সেই ছেলের কাছ থেকে এনে দিতে পারলে আমাকে বাইক, কক্সবাজারের এয়ার টিকিট, স্বর্ণের চেইন ও চার দিন থাকা-খাওয়ার খরচসহ আরও টাকা দেবে। পরে আমি নোমানের বউকে কৌশলে তার কাছে এনে দিছিলাম।
‘তারপর ২০ দিন নতুন করে ঘর-সংসার করে নোমানের বউ আবার নোমানকে ছেড়ে পালিয়ে গেছে। এখন আমার কাজের পাওনা আমাকে দিতে হবে। নোমান টাকা না দিয়ে পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আর খুঁজে পাইনি। তারপর তাকে না পাওয়ায় তার গাড়ি আটকে রেখেছি। নোমান টাকা দিয়ে গাড়ি নিয়ে যাক।’
এফ. আর পরিবহনের এমডি নোমান বলেন, ‘তাঁতীবাজার মোড় থেকে কোনো কারণ ছাড়াই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী আমার গাড়ি বিশ্ববিদ্যালয় গেটে নিয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে মেহেদী নামের একজন আমার কাছে আড়াই লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা না দেয়া পর্যন্ত গাড়ি ছাড়া হবে না বলে জানান।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি তাকে বলি আপনি আমার কাছে টাকা পান এমন কোনো প্রমাণ যদি দেখাতে পারেন, তাহলে আমি আপনাকে ডাবল টাকা দেব। তখন সে আমাকে বলে আমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সেক্রেটারি আকতার হোসেনের সবচেয়ে কাছের লোক। আমাকে কেউ কিছু করার ক্ষমতা নেই। টাকা না দিয়ে যদি এই নিয়ে বাড়াবাড়ি বা থানায় অভিযোগ করি, তাহলে আমাকে দেখে নেবে বলে হুমকি দেন।’
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমাদের ফাঁড়ির ইনচার্জ আমাকে অবগত করলে আমি বলে দিয়েছি, এর সঙ্গে আমি এবং আমার সভাপতির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আমরাও কিছুদিন যাবৎ বাসটি গেটের সামনে দেখতে পাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে আমি কোতোয়ালি থানার ওসি ও ক্যাম্পাস ফাঁড়ির ইনচার্জ নাহিদুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলেছি, যেন বাসটিকে এখান থেকে দ্রুত সরিয়ে নেয়া হয়।’