বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ক্ষমতাসীন জোটে ভাঙনের সুর

  •    
  • ১৫ মার্চ, ২০২২ ০৯:০৮

ক্ষমতাসীন জোট জনগণের পাশে দাঁড়াচ্ছে না অভিযোগ তুলে বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া বলেন, ‘তারা তো সিন্ডিকেটের পাশে দাঁড়ায়। যারা ব্যাংক লুটেরা, সরকার তাদের পলিসি সাপোর্ট দিচ্ছে। এগুলো করার জন্য ১৪ দল হয় নাই। ১৪ দল তো মরে গেছে, ইট ইজ ডেড।’

ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের ঐক্যে ভাটা পড়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শরিক দলের নেতাদের গণভবনে আমন্ত্রণ জানালেও তাতে যাচ্ছেন না জোটের শরিক জাসদের একাংশের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া। তিনি মনে করেন, এই জোট এখন মৃত।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় গণভবনে এই বৈঠক হওয়ার কথা আছে।

এই বৈঠকে যাওয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছেন কি না- এমন প্রশ্নে আম্বিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হ্যাঁ, আমাদের বলছিল, আমরা যাচ্ছি না। ১৪ দলকে কনটিনিউ করার প্রয়োজন মনে করছি না।’

কোনো ধরনের মান-অভিমান থেকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি- এটিও জানিয়ে দিয়েছেন জাসদের একাংশের সভাপতি। তিনি বলেন, ‘এটি মান-অভিমানের বিষয় না। ১৪ দল তো অকার্যকর।’

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের দিকে গঠন করা এই জোট থেকে এই প্রথম কোনো দল বের হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

আম্বিয়া মনে করেন, এই জোট এখন মৃত। তারা যেসব লক্ষ্যে এক হয়েছিলেন, সেগুলো বাস্তবায়ন হয়নি, আর হবেও না। এসব বৈঠক করে কোনো লাভ হবে না।

এর আগে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি থেকে আলাদা হয়ে সাইফুল হকের নেতৃত্বে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি নামে দল গঠন করে সেটি আর ১৪ দলে আসেইনি। তারা সরকারবিরোধী নানা কর্মসূচি পালন করেছে। তবে আম্বিয়া বলেছেন, তারা বিএনপির বাইরে আলাদা একটি জোট করতে চাইছেন। এই জোটে বিএনপির শরিক জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কয়েকটি শরিক দল থাকছে।

২০১৬ সাল থেকে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর সঙ্গে আম্বিয়ার সম্পর্কের অবনতি হয়। ওই বছরের শেষ দিকে তিনি জাসদ থেকে বের হয়ে আলাদা দল গঠন করেন, নাম রাখা হয় বাংলাদেশ জাসদ।

আম্বিয়া মনে করেন, এই জোট এখন মৃত। তারা যেসব লক্ষ্যে এক হয়েছিলেন, সেগুলো বাস্তবায়ন হয়নি, আর হবেও না। এসব বৈঠক করে কোনো লাভ হবে না।

সরকার চালানোর জন্য ১৪ দলের কোনো পরামর্শ নেয়া হয় নাই। এখন মন্ত্রীরা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট নিয়ে দৌড়ায়।

আম্বিয়া ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে নড়াইল-১ আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। তাকে জোটের মনোনয়ন দিলেও পরে তা পাল্টে দেয়া হয়। এ নিয়ে তখন থেকেই আম্বিয়া নাখোশ ছিলেন।

‘১৪ দল তো মরে গেছে, ইট ইজ ডেড’

২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সমালোচনা করে বাংলাদেশ জাসদ নেতা বলেন, ‘২০১৮ সালের নির্বাচনে কি ১৪ দল এভাবে ইলেকশন করতে বলেছিল?

‘সরকার চালানোর জন্য ১৪ দলের কোনো পরামর্শ নেয়া হয় নাই। এখন মন্ত্রীরা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট নিয়ে দৌড়ায়।’

ক্ষমতাসীন জোট জনগণের পাশে দাঁড়াচ্ছে না অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘তারা তো সিন্ডিকেটের পাশে দাঁড়ায়। যারা ব্যাংক লুটেরা, সরকার তাদের পলিসি সাপোর্ট দিচ্ছে। এগুলো করার জন্য ১৪ দল হয় নাই। ১৪ দল তো মরে গেছে, ইট ইজ ডেড।’

প্রধানমন্ত্রীর ডাকে যারা বৈঠকে যাচ্ছেন, তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থ আছে বলেও মন্তব্য করেন আম্বিয়া।

১৪ দলের অন্য কোনো শরিক এই বৈঠক বর্জন করবে কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘না, এটা আমি বলতে পারি না। এ বিষয়ে অন্য কাউকে প্রভাবিত করতে চাই না।’

একটি বিকল্প গণতান্ত্রিক জোট করা যায় কি না, সে বিষয়ে আমরা কাজ করছি, বাট নট উইথ বিএনপি।

সম্প্রতি আওয়ামী লীগবিরোধী জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কয়েকটি শরিক দলের নেতাদের সঙ্গে আম্বিয়ার বৈঠক হয়েছে।

গণফোরামের একাংশ, নাগরিক ঐক্য, জেএসডি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বিকল্প ধারার একাংশ ও পিপলস পার্টি আলাদা একটি জোট গড়তে চাইছে। এই জোটের উদ্যোক্তা তিনটি দল বিএনপির জোটের শরিক, একটি দল বিএনপি জোটের সাবেক শরিক।

আম্বিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘একটি বিকল্প গণতান্ত্রিক জোট করা যায় কি না, সে বিষয়ে আমরা কাজ করছি, বাট নট উইথ বিএনপি।’

কী বলছেন অন্য শরিকরা

আম্বিয়ার এসব বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে জাসদের মূল অংশের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘ওনাকে জিজ্ঞেস করেন। এ ব্যাপারে আমি কোনো কথা বলতে চাচ্ছি না।’

বৈঠকে যাচ্ছেন কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা ১৪ দলের অংশীদার, আমরা বৈঠকে যাচ্ছি।’

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘বৈঠকে যাব না কেন, নিশ্চয় যাব।’

আম্বিয়ার বৈঠক বর্জন ও ১৪ দলকে অকার্যকর বলে মূল্যায়নের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জাসদের ভাঙা অংশ যদি না যায়, তাহলে কী করার আছে?’

যারা এই বৈঠকে যাচ্ছে, তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থ আছে বলে আম্বিয়ার মন্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে মেনন বলেন, ‘এটা ওনার বক্তব্য হতে পার। ওনি এত দিন ছিলেন কেন (জোটে)?’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘না, বাংলাদেশ জাসদের এই অবস্থানের বিষয়ে আমি জানি না। গত তিন দিন ধরে ঢাকার বাহিরে আছি। এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না।’

১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমুর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তিন দিন আগেই আম্বিয়ার ১৪ দল থেকে বের হয়ে নতুন জোট গঠনের প্রস্তুতি নিয়ে কথা হয়েছিল তার সঙ্গে। সেদিন তিনি বলেন, দলটির এই সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি কিছু জানেন না।

এ বিভাগের আরো খবর