বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

চেনা রূপে ফিরল স্কুল-কলেজ

  •    
  • ১৫ মার্চ, ২০২২ ০৮:৩৮

মঙ্গলবার দেশের স্কুল-কলেজে পুরোদমে ক্লাস চালু হলো। সকাল থেকেই শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবক সবার মধ্যেই দেখা যায় খুশির ঝিলিক।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে এত দিন স্কুল-কলেজে সীমিত পরিসরে ক্লাস চলছিল। এবার দুই বছর পর আবার মাধ্যমিক পর্যায়ে শুরু হলো পুরোদমে শ্রেণি কার্যক্রম। একই সঙ্গে প্রাক-প্রাথমিকেও সশরীরে পাঠদান পুরোপুরি শুরু হলো।

মঙ্গলবার দেশের স্কুল-কলেজে পুরোদমে ক্লাস চালু হয়। সকাল থেকেই শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবক সবার মধ্যেই দেখা যায় খুশির ঝিলিক।

রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা যায়, ক্লাস করতে এসেছে শিক্ষার্থীরা। সঙ্গে এসেছেন অভিভাবকরাও। দীর্ঘ সময় পর সহপাঠীকে পেয়ে শিক্ষার্থীদের চোখে-মুখে উচ্ছ্বাস।

২০২০ সালের ১৭ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর দুই দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়। প্রথম দফায় প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকার পর গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করে শিক্ষাঙ্গনের দুয়ার।

সশরীরে ক্লাস শুরু হয় মাধ্যমিক স্কুলে। এরপর কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে। সবার পর সশরীরে ক্লাস শুরু হয় প্রাথমিকে।

করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে দ্বিতীয় দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সশরীরে ক্লাস বন্ধ করে দেয়া হয় গত ২১ জানুয়ারি। এ দফায় শিক্ষাঙ্গনে সশরীরে ক্লাস বন্ধ থাকে এক মাস।

২২ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষাঙ্গনগুলো আবার প্রাণচঞ্চল হয়ে ওঠে। আর ২ মার্চ থেকে শুরু হয় প্রাথমিকে সশরীরে ক্লাস। টানা দুই বছর বন্ধের পর ১৫ মার্চ থেকে প্রাক-প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের সশরীরে ক্লাস শুরুর ঘোষণা দেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর সপ্তাহে প্রতিদিন ক্লাস করছিলেন এসএসসি পরীক্ষার্থী ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। তবে তাদের সব বিষয়ের ক্লাস হচ্ছিল না। এসএসসি পরীক্ষার্থীদের চারটি ও দশম শ্রেণিতে তিনটি বিষয়ে ক্লাস হচ্ছিল। এ ছাড়া অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে সপ্তাহে দুই দিন তিন বিষয়ে এবং ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে এক দিন তিন বিষয়ের ক্লাস চালু ছিল।

একই সঙ্গে প্রাথমিকেও শুধু পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে ছয় দিন ক্লাসে আসছিল। আর তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে দুই দিন ক্লাসে অংশ নেয়। অন্যান্য শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে এক দিন ক্লাসে অংশ নেয়।

রাজধানীর প্রভাতী বিদ্যানিকেতনের সামনে দেখা গেছে, শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের ভিড়। সময়ের আগে অনেকেই এসেছেন স্কুলের ফটকের সামনে। সেখানে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা নিজেদের মধ্যে কুশল বিনিয়ম করছেন।

শিক্ষার্থীদের স্কুলে প্রবেশপথেই তাপমাত্রা পরিমাপক যন্ত্র দিয়ে তাপমাত্রা মাপা হয়। এরপর শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ শ্রেণিকক্ষের নির্ধারিত আসনে গিয়ে বসে। এ সময় সবার মুখে ছিল মাস্ক।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পা রেখেই আনন্দ-উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে শিক্ষার্থীরা। স্কুল প্রাঙ্গণ আবারও মুখরিত চিরচেনা সেই পরিবেশে, যেখানে শিক্ষার্থীরা আবার সশরীরে ক্লাসে অংশ নিচ্ছেন আর শিক্ষকরাও পাঠদান করছেন।

শাহনূরী হাই স্কুলের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী তৌফিক অনিক বলেন, ‘আগে সপ্তাহে এক দিন স্কুলে আসতাম। আজ থেকে প্রতিদিন আসব বিষয়টি খুবই ভালো লাগছে।’

একই কথা জানান ইস্কাটন গার্ডেন স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুম্মিতা হালদার। বলেন, ‘আগে সপ্তাহে দুইদিন আসতাম। এখন প্রতিদিন আসব। ভালো লাগার এই অনুভূতি প্রকাশ করতে পারব না। বাসায় থাকতে থাকতে বিরক্ত হয়ে যাচ্ছিলাম।’

অনলাইন ক্লাস আর করতে হবে না জেনে আনন্দিত প্রভাতী বিদ্যানিকেতনের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র আব্দুলাহ রায়হান। তিনি বলেন, ‘আজ থেকে আর অনলাইন ক্লাস করতে হবে না, এটা জেনেই ভাল লাগছে।’

খুশি শিক্ষকরাও

আবারও পুরোদমে স্কুল-কলেজে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু হওয়ায় উচ্ছ্বসিত শিক্ষকরাও। তারা বলছেন, প্রতিদিন সব শ্রেণির শিক্ষার্থী আসায় পুরনো চেহারায় ফিরবে শিক্ষাঙ্গন। দীর্ঘদিন পর এটি হওয়ায় তারা খুবই আনন্দিত।

ইস্পাহানি গ্লার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ সাদেকা বেগম বলেন, ‘আবারও আগের চেহারায় ফিরল স্কুল। বিষয়টি একজন শিক্ষক হিসেবে আমার জন্য আনন্দের।’

ইস্কাটন গার্ডেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক দুলাল চন্দ্র চৌধুরী বলেন, ‘বিষয়টি ভাবলেই অবাক লাগে, গত দুই বছর আমরা স্বাভাবিক শ্রেণি কার্যক্রমে অংশ নিতে পারিনি। আজ আবার সেই আগের অবস্থায় ফিরলো স্কুল। বিষয়টি নিয়ে আমি খুবই আনন্দিত।’

প্রভাতী বিদ্যানিকেতনের সিনিয়র শিক্ষক পুলিং মালাকার বলেন, ‘ আজ মনে হচ্ছে দুই বছর আগের দিনে ফিরে গেলাম। এই পরিস্থিতি যেন বজায় থাকে এই জন্য আমি সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ করব।’

এ বিভাগের আরো খবর