করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে প্রথমবারের মতো ফেব্রুয়ারির পাশাপাশি মার্চের অর্ধেক পর্যন্ত চলছে বইমেলা। বাকি আর মাত্র তিনদিন। বইমেলায় এখন বিদায়ের সুর। তবে মেলার শেষ দিনগুলোতে প্রতিবছর ভালো বিক্রি হলেও এবার সেরকম বিক্রি হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।
কারণ হিসেবে তারা বলছেন, ফেব্রুয়ারি মাসের মেলা ফেব্রুয়ারিতেই জমে। কেউ আবার অতিরিক্ত তাপমাত্রাকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। আবার কেউ বিক্রিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
পাঞ্জেরি প্রকাশনীর কোষাধ্যক্ষ মো. নুরুজ্জামান বলেন, ‘ফেব্রুয়ারি মাসের মেলাটা ফেব্রুয়ারিতেই ভালো হয়। ১৫ তারিখ থেকে ২৮ তারিখ পর্যন্ত মেলার ভালো বিক্রি ছিল। যখন মার্চ মাসে চলে আসলাম তখন মেলাটা সেভাবে জমছে না। পাঠক আসছে না, সেভাবে বিক্রিও হচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘মার্চ মাস মানেই হলো প্রচণ্ড রোদ। রাতের তাপমাত্রাও থাকে বেশি। এই তাপমাত্রায় বেলা ৩টা থেকে মেলায় না আসতে না চাওয়া একটা কারণ হতে পারে। মার্চে আশানুরূপ বিক্রি হয়নি।’
শিখা প্রকাশনীর স্বত্ত্বাধিকারী নাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চে মেলা বেশি জমেনি। ফেব্রুয়ারি মাসের মেলা ফেব্রুয়ারিতেই জমে। মার্চে তেমন একটা সাড়া পাচ্ছি না। শুধু শুক্রবার আর শনিবার মেলায় একটু বিক্রি হয়।’
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলা একাডেমির স্টলের উপপ্রধান শামসুল হক বলেন, ‘করোনার পর মানুষের বই কেনার আগ্রহ বেশি বেড়েছে। অন্যবার থেকে এইবার বেশি বিক্রি হয়েছে। ভিড় হিসেবে ঠিক আছে। ১৫ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারিতে বেশি বিক্রি হয়েছে। আর শুক্র-শনিবার একটু বেশিই বিক্রি হয়। শেষ মুহূর্ত হিসেবে এখন বিক্রি বাড়েনি, তবে খারাপ না।’
নালন্দা প্রকাশনীর কম্পিউটার অপারেটর মো. ইমরান বলেন, টমেলার প্রথমদিকে আমাদের বিক্রিটা ভালো হচ্ছিল। কারণ যখন বলা হয়েছে মেলা ১৫ দিন হবে তখন ক্রেতারা এসে ভালোই বই কিনেছে। তবে যখন মেলা বাড়ানো হলো, তখন কাস্টমার কমে গেছে। শুক্র-শনিবার যেরকম বিক্রি হয় শেষের দিকে এসে শুক্র-শনিবারেও সে পরিমাণ বিক্রি হচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘মেলার প্রথমদিকে আমাদের নিয়মিত এক-দেড় লাখ টাকা বিক্রি হয়। এখন ৪০-৪৫ হাজার বিক্রি করতেই বেগ পেতে হচ্ছে। কারণ যাদের বই কেনার তারা প্রথম দিকেই কিনে ফেলেছে। শেষ মুহূর্তে এসে আমাদের যেরকম আশানুরুপ বিক্রি হওয়ার কথা সেরকম হচ্ছে না।’
বইমেলা শেষের দিকে হলেও এখনও মেলায় আসছে নতুন বই। সোমবার মেলার ২৮তম দিনে নতুন বই এসেছে ৭৬টি।