বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কারও কাছে হাত পেতে চলব না: প্রধানমন্ত্রী

  •    
  • ১৪ মার্চ, ২০২২ ২১:৫৮

শেখ হাসিনা বলেন, “জাতীয় স্লোগানের স্বীকৃতি পাওয়ার মধ্য দিয়ে ‘জয় বাংলা’ সবার হয়েছে। এই জয় বাংলার মধ্য দিয়ে এ বার্তাই আমরা বিশ্বের কাছে পৌঁছাতে চাই যে আমরা বিজয়ী জাতি, আমরা বিজয় অর্জন করেছি। মাথা নত করে আমরা চলি না। মাথা নত করে চলব না। বিশ্বদরবারে প্রতিটি বাঙালি যে যেখানে থাকে, মাথা উঁচু করে চলবে।”

নিজেদের খাবার নিজেরা উৎপাদন করে, নিজেদের ব্যবস্থা নিজেরা করে দেশ পরিচালনার অঙ্গীকার করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘কারও কাছে হাত পেতে নয়, বিশ্বদরবারে মাথা উঁচু করে চলব।’

রাজধানীর বনানীতে হোটেল শেরাটন ঢাকায় সোমবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ ব্যাংকস (বিএবি) আয়োজিত ‘জয় বাংলা’ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মহান মুক্তিযুদ্ধের মূল উদ্দীপক স্লোগান ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান হিসেবে ঘোষণা দেয়ায় এ আয়োজন করে বিএবি।

এই আয়োজনে গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত ছিলেন সরকারপ্রধান।

দেশের একটি মানুষও ক্ষুধার্ত ও গৃহহীন থাকবে না বলে নিজের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন টানা তিন মেয়াদের প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, “জাতীয় স্লোগানের স্বীকৃতি পাওয়ার মধ্য দিয়ে ‘জয় বাংলা’ সবার হয়েছে। এই জয় বাংলার মধ্য দিয়ে এ বার্তাই আমরা বিশ্বের কাছে পৌঁছাতে চাই যে আমরা বিজয়ী জাতি, আমরা বিজয় অর্জন করেছি। মাথা নত করে আমরা চলি না। মাথা নত করে চলব না। বিশ্বদরবারে প্রতিটি বাঙালি যে যেখানে থাকে, মাথা উঁচু করে চলবে।”

এমন আয়োজনের জন্য বিএবিকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান প্রধানমন্ত্রী।

ভারাক্রান্ত গলায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ নিহতদের সবাইকে স্মরণ করেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘আজকে আমি খুশি হতাম, রেহানা যদি আমার পাশে থাকত। কারণ আমরা দুটি বোনই বেঁচে ছিলাম। ও আমার থেকে ১০ বছরের ছোট। ও না থাকলে বোধহয় আমরা এতদূর এগিয়ে আসতে পারতাম না। কারণ সে আমার একটা বড় শক্তি।’

‘কাজেই আমরা দুজন আজকে সব থেকে আনন্দিত। এই জয় বাংলা স্লোগান, যে স্লোগান এ দেশের মানুষকে নিজের জীবনটাকে বিলিয়ে দিয়ে বিজয় অর্জনের পথে এগিয়ে নিতে সহযোগিতা করেছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জয় বাংলা সেই স্লোগান, যে স্লোগান আমাদের মুক্তি সংগ্রামের স্লোগান। জয় বাংলা স্লোগান, মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান। জয় বাংলা স্লোগান, আত্মত্যাগের স্লোগান। জয় বাংলা স্লোগান, আমাদের অর্জনের স্লোগান, যে স্লোগানের মধ্য দিয়ে আমরা বিজয় অর্জন করেছি।’

হোটেল শেরাটন ঢাকায় সোমবার সন্ধ্যায় বিএবি আয়োজিত ‘জয় বাংলা’ অনুষ্ঠানে অতিথিরা। ছবি: নিউজবাংলা

ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গঠনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা তুলে ধরেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। বলেন, বঙ্গবন্ধু তার জীবনটা দেশের মানুষের জন্য উৎসর্গ করে গেছেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর ‘জয় বাংলা’ স্লোগান নিষিদ্ধ হয় বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্য আমাদের, যে আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করার পর একটি বিজয়ী জাতি, সেই বিজয়ী জাতি, যে স্লোগান আমাদের অনুপ্রেরণা দিল, সেটাই নিষিদ্ধ হয়ে গেল? সেটাই আর কারও কাছে থাকল না, এটা কথা হলো? কিন্তু সেটাই আমরা দেখেছি ’৭৫-এর পর।’

’৭৫-এর ১৫ আগস্টে নির্মম হত্যার বিষয়টি সামনে রেখে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘আমরা আপনজন হারিয়েছি, নিজেরা আপনজন হারিয়েছি, এটা ঠিক। কিন্তু বাংলাদেশ কী হারিয়েছিল, সেটা নিশ্চয় আপনারা মর্মে মর্মে বুঝতে পারেন।’

বাধা-কটূক্তি শুনেও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের পথে যারা ছিলেন, তারা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান ধরে রেখেছেন বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আমরা সত্যটাকে ধরে রাখতে পেরেছিলাম বলেই আজকে এটা জাতীয়ভাবে স্বীকৃতি পেয়েছে।’

বেসরকারি খাতকে অগ্রাধিকার

১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত দীর্ঘ ২১ বছর দেশ সবকিছুতে পিছিয়ে ছিল বলে জানান শেখ হাসিনা।

১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে বেসরকারি খাতকে অগ্রাধিকার দেয়ার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যখন আমি ব্যাপকভাবে ব্যাংক করতে শুরু করলাম, ব্যাংক-বিমা বেসরকারি খাতে, অনেক বাধা এসেছে। অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থাও বলেছে, না, বাংলাদেশে এত বেসরকারি ব্যাংক দিয়ে কী হবে? ব্যাংক তো লাভজনক হয় না। বরং সরকারি ব্যাংকের শাখা বন্ধ করে দেয়া হবে। এ ধরনেরও পরামর্শ কিন্তু বাংলাদেশকে দেয়া হয়েছে।’

এমনকি খাদ্য উৎপাদন, বীজ উৎপাদন, সরকারি বাস চলাচলেও বাধা দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তখন যারা সরকারের ছিল তারা এতটাই দুর্বল ছিল যে, আন্তর্জাতিক সংস্থা যা পরামর্শ দিত, তাই তারা মেনে চলত। কিন্তু নিজেদের যে একটা উদ্যোগ থাকবে, চিন্তাচেতনা থাকবে, একটা পরিকল্পনা থাকবে, সেটা কিন্তু ছিল না।’

আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর এসব পরামর্শ তিনি শোনেননি জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমি সোজা একটা কথা বলেছি, দেশ আমাদের, আমরা এ দেশ স্বাধীন করেছি। এ দেশের মানুষের মঙ্গল কিসে হবে, আমরা সেটা সব থেকে ভালো করে জানি।’

আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা এ দেশের মানুষের মঙ্গল কিসে হবে, তা জানে না বলেও মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘কোনো একটা সংস্থার দু-একটা অফিসার এসে কী বলবে, তারা আমাদের দেশের কতটুকু চেনে, কতটুকু বোঝে, কতটুকু জানে, এ দেশের মানুষের কল্যাণ কিসে হবে? কাজেই যেটা দেশের মঙ্গল আমরা সেটাই করব।’

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ ব্যাংকসকে (বিএবি) ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যখনই কোনো দুর্যোগ এসেছে, যখনই কোনো সমস্যা এসেছে, আমার বলতে হয়নি, আপনারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে এসেছেন। সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। আপনারা যে সহযোগিতা দিয়েছেন, তা দিয়েই কিন্তু আমরা সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে পেরেছি, সহযোগিতা করেছি।’

‘দেশে বাজার সৃষ্টি করতে হবে’

ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে হবে। কতটুকু আমরা বিদেশে রপ্তানি করতে পারব? আমার নিজের দেশে বাজার সৃষ্টি করতে হবে। আর বাজার সৃষ্টি করতে হলে, আমার দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়াতে হবে। আর সেই ক্রয়ক্ষমতাটা আমি তখনই বাড়াতে পারব, যখন এ দেশের মানুষের আর্থিক সচ্ছলতা আসবে।’

বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই উন্নয়নশীলের মর্যাদা পাওয়াতে আজকে যেটা সুবিধা হচ্ছে, আপনাদের ব্যবসা-বাণিজ্য আরও সম্প্রসারণ করবার একটা সুযোগ হচ্ছে। এই করোনাভাইরাসের সময় কিন্তু মানুষের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক দেশ যেটা করতে পারেনি আমরা কিন্তু সেটা করতে পেরেছি।’

সরকারের দায়িত্ব সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করে তিনি বলেন, ‘আমাদের কাজটা হচ্ছে জনগণের সেবা করা। দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প সবকিছুই যেন সহজভাবে চলতে পারে, সেই সুযোগটা করে দেয়া। সেটাই আমি করে দিচ্ছি এবং ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিচ্ছি।

‘এখানে শুধু বিদেশি বিনিয়োগ আসবে তা না, এখানে আমাদের দেশের বিনিয়োগ অথবা প্রবাসী যারা, তারা এসে বিনিয়োগ করবে। এবং দেশের অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে, মজবুত হবে। দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা আরও বাড়বে, উন্নত হবে।’

বিএবি’র এ আয়োজনে মিডিয়া পার্টনার ছিল নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকম ও দৈনিক বাংলা।

এ বিভাগের আরো খবর