মোবাইল ডাটার ব্যবহারের ক্ষেত্র বড় পরিবর্তন আসছে। এতে মোবাইল অপারেটরদের অফারের সংখ্যা কমে যাবে এবং গ্রাহকরা তাদের বর্তমান প্যাকেজের অব্যবহৃত ডাটা পরবর্তী প্যাকেজের সঙ্গে পেয়ে যাবেন।
অর্থাৎ এখন থেকে মোবাইল ডাটা আর হারিয়ে যাবে না, যা কার্যকর হবে ১৬ মার্চ থেকে।
নতুন সিদ্ধান্তের বিষয়ে মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি অথরিটি (বিটিআরসি)। সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিকভাবে বিভিন্ন প্যাকেজ সম্পর্কিত নির্দেশনা দেবেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষায় অব্যবহৃত মোবাইল ডাটা ফেরত দেয়া নিয়ে বিটিআরসি কাজ করছে। এক কথায় বলতে গেলে অব্যবহৃত ডাটা ফেরত পাওয়া যাবে। আগে যেটা নির্দিষ্ট মেয়াদের সময়ের পর তামাদি হয়ে যেত, সেটা আর হবে না।’
বিটিআরসি বলেছে, গ্রাহকরা মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে একই প্যাকেজ কিনলে অব্যবহৃত ডাটা এবং টকটাইম নতুন প্যাকেজে স্থানান্তরের সুবিধা পাবেন। ফলে অব্যবহৃত ডাটা ও টকটাইম নতুন ডাটা ও টকটাইমের সঙ্গে যোগ হয়ে যাবে। আবার নতুন প্যাকেজ কিনলেও অব্যবহৃত ডাটা স্থানান্তর হবে। তবে এ ক্ষেত্রের মাধ্যমে অপারেটররা প্যাকেজের কার্যকারিতা বিশ্লেষণ করতে পারবে। এসব প্যাকেজের মেয়াদ থাকবে ৩, ৭, ১৫ ও ৩০ দিন।
এতদিন নির্দিষ্ট মেয়াদের পর গ্রাহকদের আর অব্যবহৃত ইন্টারনেট ডাটা নেই হয়ে যেত। মোবাইল ফোনের প্রাথমিক যুগে টকটাইমের ক্ষেত্রেও এই মেয়াদের ব্যবস্থাটি ছিল। কেউ টকটাইম কিনে সেটি শেষ না করলে নির্দিষ্ট সময় পর হারিয়ে যেত। ১৬ মার্চ থেকে তেমনটি আর হবে না।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে অব্যবহৃত মোবাইল ডাটা ফেরতের নির্দেশ দিয়েছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। এর পরই বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করে বিটিআরসি।
প্রাথমিকভাবে ১ মার্চ থেকেই মেয়াদহীন ডাটা চালু হওয়ার সময় নির্ধারণ করা হয়। তবে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি তা ১৫ দিন পিছিয়ে দিয়েছে।
২৮ ফেব্রুয়ারি বিটিআরসি থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘পূর্বঘোষিত ১ মার্চ ২০২২-এর স্থলে আগামী ১৫ মার্চ রাত ১২টা থেকে জারীকৃত নির্দেশিকার সকল নির্দেশনা অনুযায়ী ডাটা এবং ডাটাসংশ্লিষ্ট প্যাকেজসমূহ পরিচালনা করা হবে।’
গ্রাহকরা বলছেন, এখন তথ্যপ্রযুক্তির যুগ। তাই সার্বক্ষণিক অনলাইনে থাকতে হয়। এ জন্য অনেকের বাসায় ও অফিসে ব্রডব্যান্ডের সুবিধা রয়েছে। তাই যেটুকু সময় অফিস ও বাসার বাইরে থাকা হয় সেটুকুই মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করতে হয়। অনেক সময়ই অনেক ডাটা মেয়াদ শেষেও থেকে যায়। তাই তারা মেয়াদহীন ইন্টারনেট প্যাকের পক্ষেই জোর দাবি করছেন।
ডাটা ফেরতের বিষয়টি গত বছরের ২২ আগস্ট বিটিআরসির ভার্চুয়াল গণশুনানিতেও উত্থাপন হয়। সেদিন বিটিআরসি থেকে বলা হয়, ডাটা ফেরতের বিষয়ে কথা হচ্ছে; কমিটি গঠন করা হয়েছে। সব পক্ষের সঙ্গে আলাপ করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।