তিস্তার পানি, সীমান্ত হত্যা এবং অন্য এলাকা থেকে আসামে গিয়ে বসবাস করা বাঙালিদের নিয়ে ঢাকা সফররত ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) আন্তর্জাতিকবিষয়ক বিভাগের প্রধান বিজয় মুরলিধর চৌথাইওয়ালের সঙ্গে আলোচনা করেছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট।
সোমবার বিকেলে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁয়ে জোটের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমুর নেতৃত্বে নেতারা তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে এসব বিষয় নিয়ে কথা বলেন তারা।
সাক্ষাৎ শেষে এর বিষয়বস্তু সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন আমির হোসেন আমু। তিনি বলেন, ‘বিজেপির দলীয় যে উদ্দেশ্য, সেটা হলো বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করা এবং দেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করা। সেই জন্য তারা সফর করছেন। তারই অংশ হিসেবে তিনি বাংলাদেশে আসছেন।’
আমির হোসেন আমু বলেন, ‘১৪ দলের পক্ষ থেকে তিস্তার পানির কথা বলেছি, সীমান্ত হত্যা নিয়ে উদ্বেগ তুলে ধরেছি। অনেক সময় শুনি যে আসামে যারা মাইগ্রেট করেছে, তাদের ফেরত দেয়ার কথা হচ্ছে। সেটা যাতে না হয় সে বিষয়ে আমাদের মতামত তুলে ধরা হয়েছে।
‘তা ছাড়া এটা নিয়ে আমাদের স্পর্শকাতর ব্যাপার রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিজয় মুরলিধর চৌথাইওয়াল বলেছেন, আমাদের বক্তব্য যথাযথ জায়গায় পৌঁছে দেবেন এবং এ ব্যাপারে তার ভূমিকা রাখবেন।’
১৪ দলের মুখপাত্র বলেন, ‘মূলত সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য যা যা জানা ও বোঝার দরকার, সেসব বিষয় নিয়েই আলোচনা হয়েছে। তাদের বিষয়ে আমাদের মতামত, চাওয়া বা কোথাও কোনো শূন্যতা আছে কি না এমন বিষয় জানতে চাওয়া হয়। আমরাও মন খুলে বক্তব্য তুলে ধরেছি।’
সফররত বিজেপি নেতা আশাব্যঞ্জক কিছু বলেছেন কি না- এমন প্রশ্নে আমু বলেন, ‘এর বেশি আশাব্যঞ্জক কী বলবে? এটা দলীয় আলোচনা, সরকারি পর্যায়ের না। তিনিও সরকারে নাই, আমরাও সরকারে নাই। তিনি সরকারি দলের লোক, আমরাও সরকারি দলের লোক।
‘এখন আলোচনা হতে হতে একটা সমাধান আসবে। অনেকবারই অনেক আলোচনা হবে। যেটা আপনারা উত্থাপন করেছেন সেটা সঠিক। যেটা আলোচনা হয়, আশ্বাস হয়, কিন্তু হয় না। কিন্তু এইভাবে হতে হতে একটা সময় সমাধান হতে হবে।’
সাক্ষাতে আগামী নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলে এক প্রশ্নে জানান আমির হোসেন আমু।
বিজেপি নেতার সফরকালে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক হবে কি না- এ বিষয়ে ১৪ দলের সমন্বয়ক বলেন, ‘এটা তারা বলতে পারবেন। এটা তাদের ব্যাপার। তারা বিভিন্ন দলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে করুক আমাদের কোনো আপত্তি নাই।’
১৪ দলের প্রতিনিধি দলে আরও উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাম্যবাদী দলের সভাপতি দীলিপ বড়ুয়া, ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, জাতীয় পার্টির মহাসচিব শেখ শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
এ সময় ভারতীয় পক্ষে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী উপস্থিত ছিলেন।