ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মোহম্মদপুর ইউনিয়নের কাজীপাড়া গ্রামে দুই প্রতিবেশীর মধ্যে সম্প্রতি দুই দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। অভিযোগ ওঠে, দ্বিতীয় দফার সংঘর্ষে গোপনাঙ্গ চেপে ধরার ফলে গুরুতর আহত হন বাদাম বিক্রেতা জাবেদ ইসলাম।
এ ঘটনার এক সপ্তাহ পর সোমবার বেলা ১টার দিকে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে জাবেদের। কিন্তু হাসপাতাল সূত্র বলছে, শারীরিক আঘাত নয়, জাবেদের মৃত্যু হয়েছে বিষক্রিয়ার ফলে!
২৮ বছর বয়সী নিহত জাবেদ কাজীপাড়ার নূর ইসলালের ছেলে। তার মৃত্যুর ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নূর আলম নামে এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। নূর আলম সদর উপজেলার মোহম্মদপুর ইউনিয়নে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। কাজীপাড়া থেকে আটক করা হয় তাকে।
জাবেদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে মোহম্মদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. সোহাগ জানান, গত সপ্তাহে কাজীপাড়ার দুই পরিবারের দুই শিশু মাঠে খেলতে গিয়ে ঝগড়া করে। পরে এ নিয়ে পরিবার দুটির মাঝে মারামারি হয়। এতে উভয় পক্ষেই আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি মীমাংসার জন্য দুই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চেয়ারম্যান মো. সোহাগের কার্যালয়ে যান স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নূর আলম। এ সময় আহতদের চিকিৎসার পরামর্শ দেন চেয়ারম্যান সোহাগ।
স্থানীয়দের বরাতে চেয়ারম্যান আরও জানান, কয়েক দিন পর তারা চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরলে আবারও তর্কে জড়িয়ে মারামারি করে। এ সময় জাবেদের গোপনাঙ্গ চেপে ধরার অভিযোগ ওঠে প্রতিপক্ষের এক নারীর বিরুদ্ধে। এ ছাড়া জাবেদের প্রতিপক্ষের এক নারীও গুরুতর জখম হলে তাকে চিকিৎসার জন্য রংপুর নিয়ে যান পরিবারের লোকজন।
প্রত্যক্ষদর্শী মোমেনা বেগম জানান, গত ৭ মার্চ দ্বিতীয়বারের মতো মারামারি হয় দুই পক্ষের মধ্যে। জাবেদকে ধরে মারপিট করেন রনি ও তার স্ত্রী মামুনি আক্তার। এ সময় মামুনি জাবেদের গোপনাঙ্গ চেপে ধরলে জাবেদ বাঁচাও বলে চিৎকার করে অজ্ঞান হয়ে যান। পরে তাকে আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা। গতকাল তিনি আবারও অসুস্থ হয়ে পড়েন।
স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নূর আলমকে আটকের কথা জানিয়ে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি তানভীরুল ইসলাম জানান, মারামারির ঘটনায় জাবেদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল মামলা হয়েছে। এতে রনি ও তার স্ত্রী মামুনিসহ আরও ছয়জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
ওসি বলেন, ‘আমরা ঘটনাটি তদন্ত করছি। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।’
এদিকে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার রাকিবুল হাসান চয়ন বলেন, ‘জাবেদ গত ৭ মার্চ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে। চিকিৎসা নিয়ে সে বাসায় যায়। গতকাল সে বিষপান করে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। জাবেদের মৃত্যুতে রহস্য রয়েছে, আমরা তদন্ত করছি বিষয়টি।’
তবে নিহত জাবেদের স্ত্রী লিপি আক্তারের দাবি, তার স্বামী বিষপান করেননি। গোপানাঙ্গ চেপে ধরার কারণে তীব্র ব্যথায় বেশ কয়েক দিন ধরে কাতরাচ্ছিলেন তিনি। তাই গতকাল তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।’